BRAKING NEWS

পিএম কিষাণ যোজনা নিয়ে বিধানসভায় বাম জমানার ব্যর্থতা তুলে আনলেন কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ ফেব্রুয়ারী৷৷ প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি একটি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প যার মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে৷ এই ব্যবস্থাপনা কৃষকদের নানাবিধ কৃষি সংক্রান্ত উপকরনাদি ক্রয় করতে এবং গৃহস্থালির অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা মেটাতে সহায়ক হবে যার পুরোটাই বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার৷ আজ বিধানসভায় বিধায়ক আশিস দাস কর্ত’ক উত্থাপিত একটি বেসরকারি প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় একথা বলেন৷

উল্লেখ্য, বিধায়ক আশিস দাস আজ বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে এই বেসরকারি প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন৷ প্রস্তাবটি ছিল ‘‘দেশের কৃষক ভাইদের কল্যাণার্থে কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সম্পতি কেন্দ্রীয় সরকার ’প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি নামে যে ঐতিহাসিক প্রকল্প চালুর ঘোষণা দিয়েছে তাতে এই প্রকল্প ত্রিপুরা রাজ্যে দ্রত রূপায়ণের লক্ষ্যে এই সভা ত্রিপুরা সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে’’৷

আলোচনায় অংশ নিয়ে কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় একজন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষী পরিবার যার কৃষি যোগ্য জমির পরিমাণ সর্বোচ্চ দুই হেক্টর তারা বছরে তিনটি সমান কিস্তিতে সর্বোচ্চ ৬,০০০/- (ছয় হাজার) টাকা করে আর্থিক অনুদান পাবেন৷ এই প্রকল্পটি ০১১২২০১৮ থেকে শুরু হয়েছে এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম কিস্তির সময়কাল হচ্ছে ০১১২২০১৮ থেকে ৩১০৩২০১৯ পর্যন্ত৷ তিনি বলেন, যে সকল কৃষক পরিবারের চাষযোগ্য জমির সর্বোচ্চ পরিমাণ ২ হেক্টর এবং যাদের নাম রাজ্যের ভূমি ও রাজস্ব দপ্তরের খতিয়ান অনুযায়ী ০১০২২০১৯ ইং পর্যন্ত নথীভুক্ত আছে শুধুমাত্র তারাই এই প্রকল্পের সুুবিধাভোগী হিসাবে বিবেচিত হবেন৷ কৃষিমন্ত্রী বলেন, বছরে প্রতি চারমাস অন্তর তিনবার, প্রতিবার ২,০০০/- টাকা করে সুুবিধাভোগীর ব্যাঙ্ক একাউন্টে সরাসরি এই আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে৷ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য শুধু একটিমাত্র কিস্তিতে ২,০০০/- টাকা ০১১২২০১৮ ইং থেকে ৩১০৩২০১৯ সময়ের জন্য প্রদান করা হবে৷ কৃষিমন্ত্রী বলেন, দুই-হেক্টর অবধি ক’ষি জমির মালিকানাধীন কোন ক’ষক পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের কোন একটি অথবা বিভিন্ন এলাকায় বিস্তৃত অবস্থায় থাকে, তাহলে উক্ত ক্ষেত্রে পরিবারের সমস্ত কৃষিযোগ্য জমি একত্রিতভাবে বিবেচনায় এনে বছরে সর্বোচ্চ ৬,০০০/- টাকা প্রদান করা হবে৷

তিনি বলেন, নির্বাচিত সুুবিধাভোগীর তালিকা রাজ্য সরকার দ্বারা ধাপে ধাপে পোর্টালে আপলোড করা হবে এবং উক্ত তলিকা অনুযায়ী অনুদান প্রদান করা হবে৷ প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধিপ্রকল্প বাস্তবায়নে রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে৷ কৃষিমন্ত্রী এই বেসরকারি প্রস্তাবটি সমর্থন করে বলেন, রাজ্যের সমস্ত কৃষকদের অবগতির জন্য প্রধান দৈনিক পত্রিকাগুলিতে বিগত ১৩ই ফেবয়ারি থেকে ২০শে ফেবয়ারি পর্যন্ত স্বঘোষিত ফর্ম সহ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে এবং বিভিন্ন পত্র পত্রিকার মাধ্যমে প্রচার হয়েছে এবং তা এখনও চলছে৷ রাজ্যের প্রতিটি ব্লক ও কৃষি- মহকুমার সম্মখে ব্যানার / পোস্টারের মাধ্যমে প্রচার চলছে৷ গ্রাম পঞ্চায়েত / ভি সি/ ওয়ার্ড অফিসগুলিতে ফর্ম গ্রহণ করা হচ্ছে এবং পোর্টালে আপলোড এর কাজ চলছে৷ আগামী ২৪০২২০১৯, রবিবার সারা দেশের সাথে ত্রিপুরাতেও এই প্রকল্পে সুুবিধাভোগীদের একাউন্টে ২০০০ টাকা করে দেওয়া শুরু হবে৷ এই উপলক্ষে আগরতলা, রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ১০০০ জন কৃষক প্রতিনিধির সামনে এই প্রকল্পের সূচনা করবেন৷

বেসরকারি প্রস্তাবটি উত্থাপন করে বিধায়ক আশিস দাস বলেন, ত্রিপুরার অর্থনীতি কৃষি নির্ভরশীল৷ রাজ্যে বিগত সরকারের আমলে প্রকৃত কৃষকরা কখনও সঠিক সুুযোগ সুুবিধা পায়নি৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার দেশের কৃষকদের ৩টি সমকিস্তিতে ৬ হাজার টাকা প্রদান করার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ফলে কৃষকদের ভবিষ্যৎ সুুরক্ষিত হবে৷ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিধায়ক সুুশান্ত চৌধুরী বলেন, ভারতের আধুনিক কৃষি পদ্ধতির রূপকার এস স্বামীনাথন বলেছেন কৃষকদের দুরবস্থা দূরীকরণে কৃষি ঋণ মুকুব কোন সমাধান নয়৷ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের স্থায়ী কোন উপার্জনের ব্যবস্থা না করতে পারলে কৃষকদের উন্নয়ন সম্ভব নয়৷ কৃষিক্ষেত্রে রাজ্যের নিজস্ব কোন প্রকল্প বিগত সরকার রূপায়ণ করতে পারেনি৷ কৃষিক্ষেত্রে রাজ্যে যে সমস্ত কর্মসূচি রূপায়িত হত তা সবগুলিই ছিল কেন্দ্রীয় প্রকল্প৷ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিধায়ক তপন চক্রবর্তী বলেন, কৃষক কল্যাণ জাতীয় মর্যাদা ও ঐতিহ্য বজায় রাখার বিষয়৷ দেশে প্রচুর জমি রয়েছে যা বন্টনযোগ্য৷ ভূমি সংস্কার আইনের সঠিক রূপায়ণের মাধ্যমে প্রকৃত কৃষকদের মধ্যে জমি বন্টন করার কথা তিনি উল্লেখ করেন৷ পরে সভায় এই বেসরকারি প্রস্তাবটি গৃহীত হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *