BRAKING NEWS

বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির কিছু উন্নতি হলেও সংখ্যালঘু নির্যাতন অব্যাহত, দাবি ঐক্য পরিষদের

বাসুদেব ধর ( ঢাকা), ১৫ ফেব্রুয়ারি(হি.স.) : বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন ও হামলা অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ | আজ সকালে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এই সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রানা দাশগুপ্ত। এ সময় পরিষদের অন্যতম সভাপতি প্রাক্তন সাংসদ ঊষাতন তালুকদার, সভাপতিম-লির সদস্য অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, মঞ্জু ধর, মিলন কুমার দত্ত ও জে এল ভৌমিক উপস্থিত ছিলেন।


লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ছিল ১৪৭১, ২০১৭ সালে ১০০৪। বিদায়ী বছর ২০১৮ সালে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০৬। অর্থাৎ কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ২০১৮ সালে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিবরণ তুলে ধরে বলা হয়, এই বছরে নিহত হয়েছেন ৯০ জন, প্রাথমিকভাবে হত্যাকান্ড বলে চিহ্নিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ১৫ জনের। ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগে শাস্তির ঘটনা ঘটেছে ১০, অপহরণ ৩৯, গণধর্ষণ ১৬, ধর্ষণ ৩২, ধর্ষণের চেষ্টা ১৪, যৌন হয়রানি ২৬, প্রতিমা ভাঙচুর ১৬৯, মন্দিরে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ ৫৮, প্রতিমা চুরি ১৪, মন্দিরে চুরি ও ডাকাতি ৭, শ্মশান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি দখল ২১, দখলের চেষ্টা ১১। বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ২৩৫টি, হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে ৩১ জনকে, চাঁদাবাজি ২০। হামলার শিকার হয়েছেন ৪৪৭ জন। ঐক্য পরিষদ আরও জানিয়েছে, দখল ও উচ্ছেদের ঘটনায় ৫৮৮টি সংখ্যালঘু পরিবার ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

প্রতারণা করে গরুর মাংস খাইয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার ঘটনা ঘটেছে তিনটি।ঐক্য পরিষদের বক্তব্যে বলা হয়েছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শাসক দল আওয়ামি লিগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে এই প্রথম বার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূলের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্সের অঙ্গিকার করেছে। ঐক্য পরিষদ বলেছে, এ অঙ্গিকার আমাদের আশ্বস্ত করেছে। আমরা দৃশ্যমানভাবে এর বাস্তব প্রতিফলন দেখতে চাই। শুধু শারদীয় দুর্গোৎসবের সময় নয়, সারা বছর আমরা চাই, সাম্প্রদায়িক শক্তির তৎপরতার বিরুদ্ধে সরকার ও প্রশাসন দ্রুত দৃশ্যমান ভূমিকা পালন করুক। সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের দায়বদ্ধ করার জন্যে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ঐক্য পরিষদ বলেছে, ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’ এটা শুধুমাত্র রাজনীতির আপ্তবাক্য হিসেবে নয়, বাস্তবেও এর প্রতিফলন ঘটুক এবং সবার জন্যে সুশাসন নিশ্চিত হোক।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেছে ঐক্য পরিষদ। বলেছে, অন্যান্য নির্বাচনের আগে ও পরে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর যেভাবে হামলা হয় এবং রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার হয়, এবার তেমন কিছু হয়নি। তবে ফেনির সোনাগাজি, ঠাকুরগাঁও সদর, রাঙামাটির লংগদু, বাঘাইছড়ি, রাজস্থলি, কাপ্তাই ও কাউখালিতে কিছু সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *