BRAKING NEWS

সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে তিক্ত অভিজ্ঞতা, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনও নির্বাচনে যাবে না

ঢাকা, ২২ জানুয়ারি (হি.স.): সদ্যসমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজয় ও তিক্ত অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি-সহ ঐক্যফ্রন্ট বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনও নির্বাচনে যাবে না। ভোটের পর বিএনপি-র সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি-সহ বিভিন্ন স্তরের নেতাদের একাধিক বৈঠকে পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করে দলের নীতি নির্ধারকরা বলছেন, বিএনপি-সহ নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারী বিরোধী দলগুলির সঙ্গে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আচরণ পরিবর্তনের বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই।নীতিনির্ধারকরা আরও বলেছেন, নির্বাচনে গিয়ে তৃণমূল স্তরের বিএনপি নেতাদের মামলা, হয়রানি, জেল-জুলুম, সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যয় করার কোনও মানে নেই। সরকার ও নির্বাচন কমিশন ভোটারদের সমস্ত আস্থা-বিশ্বাস সম্পূর্ণ নষ্ট করেছে। তাই এই সরকারের অধীনে আগামিতে কোনও নির্বাচনেই যাবে না বিএনপি। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর তারা দলের শরিক জোট ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গেও বৈঠক করেছে।

সেখানেও সিদ্ধান্ত হয়েছে সব নির্বাচন বয়কটের। শুধু তাই নয়,দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে কেউ কোথাও প্রার্থী হলে তাকে বহিষ্কার করা হবে। দলের কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে সেটা তার ব্যক্তিগত এবং তাকে দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে। দলের পদে থেকে নির্বাচন করা যাবে না।
আগামি মার্চে পাঁচ ধাপে উপজেলায় নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামি ফেব্রুয়ারি মাসে হবে নির্বাচনের তফসিল। একই সময়ে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (উত্তর) নির্বাচনও হবে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেছেন, এই সরকার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অধীনে আর কোনও নির্বাচনে যাবে না ঐক্যফ্রন্ট। এ নির্বাচনে জনগণের প্রতিনিধিত্ব হয়নি। ‘রাতের ভোটে’ জনগণের ভোটাধিকার ডাকাতি করা হয়েছে। এ কারণে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ নির্বাচন বয়কট করেছে। আমাদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়া না নেওয়ার কিছু নেই। ফখরুল বলেন, আমরা আগেও বলেছি, আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু, সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এই কারণে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এই আওয়াম লিগের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অধীনে আর কোনও নির্বাচনে যাবে না ঐক্যফ্রন্ট। লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাট এলাকায় নির্বাচনী হিংসায় নিহত বিএনপি নেতার কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, কলঙ্কিত এ নির্বাচনের ফলাফল দেশের জনগণের কাছে মুখ্য বিষয় নয়। মুখ্য বিষয় হচ্ছে, জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছে। জনগণের ভোট ডাকাতি করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর দেশের মানুষ ভোটের সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু, আওয়ামি লিগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভোট ডাকাতি করেছে। আমরা আগেই বলেছি, এ ভোট বাতিল করে পুনরায় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে।
বিএনপি-র স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রাক্তন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা বিগত নির্বাচনের ফলাফল ও পরিবেশ বিশ্লেষণ করেছি। দেশ-বিদেশের মানুষের সামনে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে যে, এই সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিন্দু মাত্র সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই। বিএনপির তৃণমূল নেতাদের মতামত নিয়েছি-তারাও বলেছেন, এই সরকারের অধীনে তারা নির্বাচনের বিপক্ষে। স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধূরী বলেন, আমরা বিগত সময়ে স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গিয়েছি। কিন্তু, দেশের মানুষ দেখেছে প্রতিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। কারচুপি জালিয়াতি করে আওয়ামি লিগ তাদের প্রার্থীদের জিতিয়ে নিয়ে গিয়েছে। সংসদ নির্বাচনে ভোটের আগের দিন রাতে মহাডাকাতি হয়েছে। সুতরাং কেন আমরা এই সরকার এবং এই আওয়ামি লিগ দলীয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে আবারও নির্বাচনে যাবো ? 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *