BRAKING NEWS

সিবিআই-র ডিরেক্টর পদ থেকে ফের অপসারিত অলোক বর্মা, প্রতিবাদে সরব কংগ্রেস

নয়াদিল্লি, ১০ জানুয়ারি (হি.স.) : সিবিআই ডিরেক্টর পদে ফিরে আসার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ফের অপসারিত অলোক বর্মা। বৃহস্পতিবার সিলেক্ট কমিটির বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার অনুপস্থিতিতে সিবিআই-এর দেখভালের দায়িত্ব ফের দেওয়া হল এম নাগেশ্বর রাওকে। নতুন ডিরেক্টর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আপাতত তার দায়িত্বে চলবে সিবিআই। অলোক বর্মার অপসারণের প্রতিবাদে সরব হয়েছে কংগ্রেস। দলীয় ট্যুইটারে হ্যান্ডলে কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্ত থেকে ভয় পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই অপসারণ করা হয়েছে।
এদিনের উচ্চপর্যায়ের সিলেক্ট কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধানবিচারপতির রঞ্জন গগৈয়ের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ মল্লিকার্জুন খারগে। দুই ঘন্টা পনেরো মিনিটের রুদ্ধশ্বাস বৈঠকে ২-১ সিদ্ধান্তে অলোক বর্মা অপসারণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মল্লিকার্জুন খারগে ‘নোট অফ ডিসেন্ট’ দেন।

বুধবারও সিলেক্ট কমিটি মিলিত হয়েছিল। কিন্তু সেই বৈঠক অমীমাংসিত ছিল।প্রশাসনিক সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, আইন মেনেই সিলেক্ট কমিটির বৈঠকে ২-১ সিদ্ধান্তে অলোক বর্মার অপসারণের বিষয়টি গৃহীত হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুযায়ী উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন সিলেক্ট কমিটিই পারে কর্মরত সিবিআই কর্তাকে সংশ্লিষ্ট পদ থেকে অপসারণ করতে। সিভিসি রিপোর্ট অলোক বর্মার বিরুদ্ধে গিয়েছে বলে খবর। আর তাঁকে অপসারিত করার সিদ্ধান্তে একমত হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিচারপতি একে সিক্রি। তারপরই ফের অপসারিত করা হল সিবিআই অধিকর্তা অলোক বর্মাকে। যদিও অলোক বর্মার হয়ে সওয়াল করেছিলেন মল্লিকার্জুন খাগড়ে।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে সিভিসি সুপারিশ মেনে অলোক বর্মাকে বাধ্যতামূলকভাবে ছুটিতে পাঠায় কেন্দ্র। মঙ্গলবার কেন্দ্রের সেই নির্দেশিকা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে অলোক বর্মাকে সিবিআই প্রধানের পদে ফেরানো হয়। তবে বলা হয়, বর্মা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত না তাঁকে নিয়ে সিদ্ধান্ত না নেয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটি। এদিকে, সিবিআই-এর ডিরেক্টরের পদে বসেই পাঁচ অফিসারকে বদলি করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি দশ সিবিআই অফিসারে বদলি নির্দেশ রদ করে দেন। অন্তবর্তী সিবিআই প্রধান এম নাগেশ্বর রাওয়ের প্রায় সমস্ত নির্দেশ রদ করে দিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালের আইপিএস ব্যাচের এই আধিকারিককে দমকল, অসামরিক প্রতিরক্ষা এবং হোমগার্ড দফতরে ডিজি পদে পাঠানো হয়।প্রসঙ্গত, সিবিআই অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে ২৩ অক্টোবর অলোক ভার্মাকে ছুটিতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। একই সঙ্গে অলোক বর্মার সঙ্গে স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানাকেও ছুটিতে পাঠানো হয়। সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মা এবং স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা পরস্পরের প্রতি দুর্নীতির অভিযোগ আনার পরে দু’জনেরই ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে ছুটিতে পাঠিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার| কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে শীর্ষ আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন অলোক বর্মা| কেন্দ্র, সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন ও অলোক বর্মার বক্তব্য শোনার পরে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ গত ৬ ডিসেম্বর রায়দান স্থগিত রেখেছিল| মঙ্গলবার সিবিআই মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চে রায়দান করার কথা ছিল| কিন্তু, মঙ্গলবার তিনি ছুটিতে থাকায় সুপ্রিম কোর্টের ১২ নম্বর কোর্টে সিবিআই মামলার ফয়সালা শোনান বিচারপতি সঞ্জয় কিশান কৌল| অলোক বর্মাকে অপসারণ বা ছুটিতে পাঠানোর আদেশ মঙ্গলবার খারিজ করে দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত| আর তাই ফের সিবিআই ডিরেক্টর পদে ফিরেছিলেন অলোক বর্মা | সীমিত ক্ষমতায় নিয়ে ডিরেক্টর পদে ফের বসেছিলেন অলোক বর্মা। তবে সিবিআই প্রধানের পদে ফিরেও টিকে থাকতে পারলেন না অলোক বর্মা । বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কমিটির বৈঠক বসে নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে। সেখানেই ২-১ সিদ্ধান্তে অলোক বর্মাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে ভার্মাকে অপসারণের পরই সমালোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে। বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্তভূষণ সংবাদমাধ্যমে বলেন, অলোক বর্মাকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ না দিয়ে কীভাবে একজনকে সরিয়ে দেওয়া যায়?অলোক বর্মাকে সরানো নিয়ে মোদীকে নিশানা করেছে কংগ্রেসও। দলের পক্ষ থেকে এক টুইটে বলা হয়েছে, অলোক বর্মাকে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে দেওয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী ফের মনে করিয়ে দিলেন তদন্তকে তিনি সিবিআই বা যৌথ সংসদীয় কমিটির দ্বারা তদন্তে ভয় পান। প্রসঙ্গত কংগ্রেসের ইঙ্গিত ছিল রাফাল চুক্তির দিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *