পাথারকান্দি (অসম), ২১ এপ্রিল (হি.স.) : করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি থানার অন্তর্গত আসিমগঞ্জের ডেউবাড়ি গ্রামে নিজের ঔরসজাতের হাতে খুন হয়েছেন গর্ভধারিণী মা খুদেজা বেগম। একই হামলায় বাবা নুর উদ্দিনও ঘায়েল হয়েছেন। তাকে সংকটজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে ভরতি করা হয়েছে। এদিকে মাকে খুন এবং বাবার ওপর প্রাণঘাতী হামলার পর নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে ঘাতক-পুত্র মহম্মদ আবদুল্লা (৩০)। তাকে প্রথমে পাখারকান্দি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। এখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা করে করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা শনিবার সকাল প্রায় ৬.৩০ নাগাদ ঘটেছে। ধারালো দা দিয়ে এই হামলা চালিয়েছে ছেলে আবদুল্লা। পুলিশি তদন্ত জারি রয়েছে।
পাথারকান্দি থানার আসিমগঞ্জ এলাকার ডেউবাড়ি গ্রামে শনিবার ভোর প্রায় সাড়ে ছয়টা নাগাদ সংঘটিত ঘটনার তথ্য দিয়ে পাথারকান্দি থানার ওসি ডিম্বেশ্বর ঠাকুরিয়া জানান, ঘাতকের নাম মহম্মদ আবদুল্লা (৩০)। গত কয়দিন ধরে সে তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে নানা অজুহাতে ঝগড়ার সৃষ্টি করত। গত ১১ এপ্রিল আবদুল্লার স্ত্রী ইমরানা বেগম স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পাথারকান্দি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর পর তাদের একমাত্র শিশুপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে পার্শ্ববর্তী খিলেরবন্দ গ্রামে তার বাবা খলিলুর রহমানের বাড়িতে চলে যান।
ইমরানা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে ৪৯৮ ধারায় মহম্মদ আবদুল্লার বিরুদ্ধে এক মামলা রুজু করা হয়েছে। ওসি জানান, থানায় অভিযোগ এবং পত্নীর বাড়িতে থেকে চলে যাওয়ার পর থেকে আবদুলা মারমুখি হয়ে ওঠে। সে মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে হয়। শনিবার ভোর প্রায় ছয়টা নাগাদ যখন তার মা ও বাবা ঘুমে, ঠিক তখনই হাতে ধারালো দা নিয়ে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে প্রথমে হামলা চালায় তার মার ওপর। মা খুদেজা বেগমের (৫০) মাথা, গলা ছাড়াও শরীরের কয়েক জায়গায় ঘা বসায়। নিমিষে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
একই সঙ্গে সে দা দিয়ে হামলা চালায় তার বাবা মেহম্মদ নুর আহমেদের ওপর। ছেলের দায়ের কোপে গুরতর জখম হয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তিনি। দায়ের কোপে বাবা মারা গেছেন ভেবে ঘাতক আবদুল্লা তার নিজের ওপরও আত্মঘাতী হামলা চালায়। সে তার নিজের গলায় হাতের দা দিয়ে কোপ বসিয়ে দেয় আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
ততক্ষণে খবর পেয়ে অকুস্থলে পুলিশ গিয়ে আবদুল্লাকে উদ্ধার করে তাকে করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এদিকে ঘায়ের বাবা এবং মায়ের মৃতদেহও করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। করিমগঞ্জে বাবা নুর আহমেদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভরতি করা হয়েছে। এদিকে মা খুদেজা বেগমের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালের মর্গে রাখা হষ়েছে বলে জানিষ়েছেন ওসি ডিম্বেশ্বর ঠাকুরিয়া।