BRAKING NEWS

রেশম শিল্পের বিকাশে তিন বছর মেয়াদি কর্মসূচি অনুমোদিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আর্থ কমিটিতে

নয়াদিল্লি, ২২ মার্চ ৷৷  রেশম শিল্পের উন্নয়নে ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ পর্যন্ত তিন বছর মেয়াদি এক সুসংহত উন্নয়ন কর্মসূচি আজ অনুমোদিত হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার, বীজ কেন্দ্র, কৃষি সম্পসারণ কেন্দ্র, বীজ, রেশম, তন্তু ও রেশমজাত পদার্থের বিপনন ব্যবস্থার উন্নয়ন তথা সমন্বয়, উৎপাদিত পণ্যের নির্দিষ্ট গুণমানের নিরিখে শংসাপত্রদান ইত্যাদির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে এই বিশেষ কর্মসূচিটিতে৷ এছাড়াও কর্মসূচির মধেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে রেশম পরীক্ষা সম্পর্কিত সুযোগ-সুবিধা প্রসার, রপ্তানিযোগ্য পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি ইত্যাদি৷

কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের কর্মসূচিতে রূপায়িত হবে কেন্দ্রীয় রেশম শিল্প পর্ষদের মাধ্যমে৷ অনুমোদিত এই কর্মসূচিটি ব্যস্তবায়িত হলে দেশের রেশম উৎপাদনের মাত্রা বর্তমানের ৩০,৩৪৮ মেট্রিন টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে আগামী ২০১৯-২০ সাল নাগাদ দাঁড়াবে ৩৮,৫০০ মেট্রিক টন৷ কর্মসূচির আওতায় ৪৫৩ একর জমিতে কিষান নার্সারি স্থাপনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে৷ সেখানে উন্নতমানের রেশম এবং রেশম জাতীয় পণ্যের চারা রাখা হবে৷ এছাড়াও গড়ে তোলা হবে ১৩১ টি নতুন রেশম পালন কেন্দ্র৷ রেশম শিল্পের উৎপাদনের বিশেষ জোর দিতে ২৯টি স্বয়ংক্রিয় মেশিনেরও ব্যবস্থা থাকবে৷ এতদিন পর্যন্ত এই ধরনের যন্ত্র বিদেশ থেকে আমদানি  করতে হত৷ কিন্তু বর্তমানে সেগুলি দেশীয় পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় নির্মিত হচ্ছে৷ কর্মসূচি রূপায়নের ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়ন প্রচেষ্টার ওপরও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে৷ রেশম শিল্পের সার্বিক প্রসারে উন্নত মান ও জাতের চারা এবং রেশণ কীট সম্পর্কে জাতীয় তথা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে সহযোগিতাক্রমে গবেষণা চালানো হবে৷ রেশম বীজ সংগ্রহ ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করে তুলতেও বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে৷ এজন্য জোর দেওয়া হবে বীজ উৎপাদনের ওপর৷ এই লক্ষ্যে বীজ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিকে এমনভাবে শক্তিশালী করে তোলা হবে যাতে উন্নতমানের উৎপাদন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায়৷

এই বিশেষ কর্মসূচির আওতায় নারী ক্ষমতায়নের পাশাপাশি তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি এবং সমাজের অন্যান্য দুর্বলতর শ্রেণীর জীবিকার্জনের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে৷ এই লক্ষ্যে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে ৮৫ লক্ষ থেকে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে রেশম ও রেশমজাত পণ্য যথেষ্ট ব্যয়সাপেক্ষ৷ এই করেণ তার গুনমান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার বিষয়টির ওপর বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে৷ সুসংহত এই কর্মসূচি চালু করতে পরিকাঠামো খাতে ব্যয়ের পুরোটাই বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার৷ তবে, ব্যক্তিগত পর্যায়ের শিল্পোদ্যোগের ক্ষেত্র ২৫ শতাংশ ব্যয়ভার বহন করবে সংশ্লিষ্ট শিল্প সংস্থাগুলি এবং ৫০ শতাংশ দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে৷ বাকি ২৫ শতাংশ ব্যয়ভার করবে রাজ্যগুলি৷ তবে, তপশিলি জাতি এবং তপশিলি উপজাতি পরিচালিত শিল্পোদ্যোগগুলি ক্ষেত্র শিল্পোদ্যোগীদের ব্যয়ের মাত্রা দাঁড়াবে মাত্র ১০ শতাংশের মতো৷ সেক্ষেত্রে ৬৫ শতাংশ দায়ভার গ্রহণ  করবে কেন্দ্রীয় সরকার৷ উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য, জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল, ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তিশগড়ে ৮০ শতাংশ ব্যয়ভার বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার৷ শিল্পোদ্যোগী এবং রাজ্য সরকার উভয়েরই সেক্ষেত্রে অবদান দাঁড়াবে ১০ শতাংশ করে৷ বর্তমানে দেশে রেশম উৎপানদকারী রাজ্যের সংখ্যা হল ২৭৷ এর মধ্যে মাত্র ১৭টি রাজ্যে রয়েছে রেশম শিল্পের প্রসার ও উন্নয়ন সম্পর্কিত দপ্তর৷ অনুমোদিত নতুন কর্মসূচিটি রূপায়ণে রাজ্যগুলির বৃহত্তর অংশগ্রহণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *