BRAKING NEWS

রিভিশন কমিটির সুপারিশে সন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় বেতনক্রম অসম্ভব, জানালেন অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ জুন৷৷ সরকারী কর্মচারী এবং পেনশনার্সদের বেতন ভাতা পুনর্বিন্যাসে খুবই ভাল প্রস্তাব জমা দিয়েছে পে এন্ড পেনশন রিভিশন কমিটি৷ মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এনিয়ে সন্তোষও প্রকাশ করেছেন৷ কিন্তু, সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর কিংবা কর্মচারীদের দাবি মেনে বেতন ভাতা কাঠামো পুনর্বিন্যাস সম্ভব কিনা সে বিষয়ে ঝেড়ে কাশেননি অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা৷ শুধু জানিয়েছেন, কমিটির রিপোর্ট মন্ত্রিসভার সদস্যরা খতিয়ে দেখবেন এবং খুব শীঘ্রই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ সম্ভবত, আগামী মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে৷
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে পে এন্ড পেনশন রিভিশন কমিটির সুপারিশ উপস্থাপিত হয়৷ মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা জানান, রিপোট তৈরীর পরিপ্রেক্ষিতে পে এন্ড পেনশন রিভিশন কমিটির চেয়ারম্যান, সদস্য সচিবসহ এই কমিটির সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়৷ অর্থমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী আজ বৈঠকে কমিটির রিপোর্ট খুব ভাল হয়েছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷ এখন এই রিপোর্ট মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যরা খতিয়ে দেখবেন৷ তিনি আরো জানান, খুব শীঘ্রই কর্মচারী ও পেনশনার্সদের বেতন ভাতা পুনির্বন্যাসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ এখন প্রশ্ণ হল, সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর নাকি কর্মচারী ও পেনশনার্সদের দাবি মেনে সন্তোষজনক বেতন ভাতা পুনর্বিন্যাস কোন পথে হাঁটবে রাজ্য সরকার৷ অর্থমন্ত্রী জানান, এখনই কোন কিছু বলা সম্ভব নয়৷ বাজেটে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে৷ এর অতিরিক্ত কমিটি কি সুপারিশ করেছে তা খতিয়ে দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ এদিন তিনি স্পষ্ট জানান, কেন্দ্রীয় বেতনক্রম দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়৷ কারণ, তাতে বছরে অতিরিক্ত ২৫০০ কোটি টাকার প্রয়োজন৷ রাজ্যের ভাড়ারে এত টাকা নেই৷ তাই আর্থিক সংগতির বিষয়টি মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার, জানান অর্থমন্ত্রী৷
তিনি জানান, আসামেও কেন্দ্রীয় হারে সপ্তম বেতন কমিশন চালু হয়নি৷ তাদের নিজের মতো করে আসাম পে কমিশন কার্যকর করেছে৷ অর্থমন্ত্রী জোর গলায় বলেন, প্রমাণ হাতে পেয়েই তিনি এই দাবি করছেন যে, মুখে আসাম সরকার কেন্দ্রীয় হারে সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকরের দাবি করলেও, মূলত তারা আসাম পে কমিশন কার্যকর করেছে৷ আসাম সরকারের গঠিত পে এন্ড প্রোডাক্টিভিটি রিভিশন কমিটির সুপারিশেই তা কার্যকর হয়েছে৷
এদিন অর্থমন্ত্রী বাজেটে বরাদ্দ ৬০০ কোটির অতিরিক্ত কোন অর্থ বেতন ভাতা পুনর্বিন্যাসে খরচ করা যাবে না, তা একবারও বলেননি৷ বরং মনে হয়েছে, ৬০০ কোটির অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হবে সে বিষয়ে রাজ্য সরকারও প্রস্তুত৷ ফলে ধারণা করা হচ্ছে, সামনে নির্বাচন এই চিন্তায় কর্মচারী মহলকে কিছুটা সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করবে রাজ্য সরকার৷
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার রাজ্যের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা বৃদ্ধির জন্য গত এপ্রিল মাসে এই পে এন্ড পেনশন রিভিশন কমিটি গঠন করেছিল এবং গত ৩১ মে পে এন্ড পেনশন রিভিশন কমিটি তাদের সুপারিশ সহ রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের হাতে তুলে দেয়৷
এদিন, কর্মচারী ও পেনশনারদের বেতন ভাতা পুনর্বিন্যাসে পে এন্ড পেনশন রিভিশন কমিটির সুপারিশ মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করায় কর্মচারী মহলে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে৷ সন্তুষ্টি কিসের জন্য, এই প্রশ্ণ কর্মচারীকূলকে ভাবাচ্ছে৷ কারণ, কমিটির সুপারিশ রাজ্য সরকারের পক্ষে নাকি কর্মচারীকূলকে সন্তুষ্ট করার জন্য এই ধোঁয়াশা এখনও রয়েই গিয়েছে৷ সমালোচকদের মতে, রিভিশন কমিটি যে সুপারিশ করেছে তাতে রাজ্য সরকারের ঘাড়ে হয়তো বা খুব একটা আর্থিক বোঝা চাপবে না৷ তাই মুখ্যমন্ত্রী এই রিপোর্ট নিয়ে সন্তুষ্ট৷ তবে, কর্মচারী মহলের ধারণা নির্বাচনকে সামনে রেখে রিভিশন কমিটির সুপারিশে কেন্দ্রীয় হারে না পেলেও অনেকটাই সন্তোষজনক হতে পারে বেতন ভাতা কাঠামো৷ তাই হয়তো বা মুখ্যমন্ত্রী রিভিশন কমিটির সুপারিশে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *