BRAKING NEWS

কাঁপুনি সহন ক্ষমতা নেই রাজ্যের বহু সুকল-অফিস-আদালত-হাসপাতাল ও পাকা বাড়ির, ভূগর্ভে ভয়ঙ্কর অবস্থা, মারাত্মক ঝুঁকিতে ত্রিপুরা

earth-quake-tripuraনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ জানুয়ারী৷৷ সাম্প্রতিক কালের ভূমিকম্প আগামীদিনের মারাত্মক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত বহন করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ ভূতত্ববিদদের মতে, ভারত ও ইউরেশিয়া প্লেট ক্রমাগত নিকটে চলে আসছে৷ পাশাপাশি মায়ানমার প্লেটও ভারত ও ইউরেশিয়া প্লেটের কাছাকাছি চলে আসছে৷ উত্তর পূর্বাঞ্চল ভারত ও ইউরেশিয়া প্লেট এর উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ গত ৩রা জানুয়ারী ভারত ও ইউরেশিয়া প্লেটের মধ্যে ঘর্ষণের ফলেই ভূমিকম্পের উৎপত্তি বলে মৌসম বিভাগ জানিয়েছে৷ তাতে, আগামীদিনে মারাত্মক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা কোথায় দেখা যাচ্ছে সেই প্রশ্ণ উঠেছে৷ ভূতত্ববিদদের মতে, আগামীদিনে ভারত, ইউরেশিয়া ও মায়ানমার প্লেট কাছাকাছি চলে আসলে ঘর্ষণ অনিবার্য৷ তাতে মিজোরাম-মণিপুর মায়ানমার সীমান্তে মারাত্মক ঝাঁকুনি হতে পারে৷ ভূতত্ববিদদের ধারণা রিখটার স্কেলে তীব্রতা ৮৭ হতে পারে৷ স্বাভাবিক ভাবেই ত্রিপুরাতেও এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে বলেই অনুমান৷ এক্ষেত্রে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা কোথায় সেই তত্বও উঠে এসেছে৷ সরকারী মতে, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর কার্য্যালায়, আদালত ও হাসপাতালগুলি ৭৬ কম্পাঙ্ক সহন করতে পারে এমন ক্ষমতা সম্পন্ন৷ কিন্তু, রিখটার স্কেলের তীব্রতা ৮৭ হলে বিপর্যয় নিশ্চিত৷

সাম্প্রতিককালের ভূমিকম্পের পর বিশেষজ্ঞদের একটি টিম রাজ্যে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন৷ তাতে বিভিন্ন ঘরবাড়ি বেহাল দশা ফুটে উঠেছে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে ধলাই জেলার ডেমছড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি এবং আবাসন নির্মাণ খুবই দুর্বল৷ গত ৩রা জানুয়ারী ভূমিকম্পে ঐ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও আবাসনে ফাটল দেখা দিয়েছে৷ ফাটলের মাত্রা মারাত্মক না হলেও আগামীদিনে তীব্র কম্পাঙ্কের ভূমিকম্প হলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি এবং আবাসন ভেঙ্গে পড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে৷ এমন আরও সরকারী অফিস ও হাসপাতাল এবং বাড়ি ঘর রয়েছে যার নির্মাণ খুবই দুর্বল৷
আগামীদিনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা নিয়ে রাজ্যের সমস্ত পাকা ভবন, অফিস, আদালত, সুকল, কলেজ এবং হাসপাতালগুলির নির্মাণ সংক্রান্ত অডিটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে৷ নির্মাণ কাজ কতটা পোক্ত এবং তীব্র কম্পাঙ্ক সহন ক্ষমতা রয়েছে সেই বিষয়ে ইতিমধ্যেই সমীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক স্তরে আধিকারীকরাও মনে করছেন৷ অডিটের পর যেসমস্ত পাকাবাড়িতে সংস্কারমূলক কাজের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে অতিসত্বর সেই উদ্যোগ গ্রহণ করা আবশ্যিক৷ এক্ষেত্রে সরকারী স্তরে ব্যয় ভার সরকার বহন করতেই পারে৷ কিন্তু, ব্যক্তি মালিকানাধীন পাকা ভবনগুলির সংস্কার কাজও হাতে নেওয়া যথেষ্ট প্রয়োজন৷ তাতে স্বউদ্যোগে ব্যয়ভার বহন করলে সংস্কার কাজ আগাম করে নেওয়া হলে আগামী দিনে মারাত্মক প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই এড়ানো যাবে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের৷

উত্তর পূর্বাঞ্চল ভূমিকম্প প্রবন জোন-৫ এ রয়েছে৷ স্বাভাবিক ভাবেই সংকট ত্রিপুরার উপরও ঝুলছে৷ রাজধানী আগরতলায় অনেক বহুতল ভবন রয়েছে যেখানে নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা মানা হয়নি৷ এই সংক্রান্ত খুটিনাটি তথ্য ইতিমধ্যে নগরোন্নয়ন দপ্তর সংগ্রহ করা শুরু করেছে৷ বেআইনী নির্মাণ বেশ কয়েকটি বহুতল ভবন চিহ্ণিত হয়েছে৷ তাদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে বিধানসভায় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী জানিয়েছেন৷ তবে, আগামীদিনে বেআইনী নির্মিত বহুতল ভবনগুলির বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা না নেয়া হলে মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তাতে বিরাট বিপর্যয় নেমে আসবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *