BRAKING NEWS

বারুদের স্তুপে বাংলাদেশও

সন্ত্রাসবাদ রুখিতে না পারিলে উন্নয়নের ধারা থমকিয়া যাইবে৷ মানুষের জীবন হইবে দুর্বিসহ, প্রতিনিয়ত আতংকে কাবু হইবে স্বাভাবিক জনজীবন৷ ছোট্ট দেশ বাংলাদেশে আবার আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কাঁপিয়া উঠিল৷ সারা বিশ্ব যখন প্রভু যিশুর আভির্ভাব দিবসকে সামনে রাখিয়া আনন্দ উল্লাসে মশগুল তখন শনিবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটাইল সন্ত্রাসীরা৷ প্রকাশিত সংবাদে জানা গিয়াছে, তাহারা একটি বহুতল বাড়ীতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র গোলা বারুদ নিয়া অবস্থান করিতেছিল৷ বাংলাদেশের পুলিশ ও সেনা সুর্নির্দিষ্ট সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালাইতে গেলে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় এক মহিলা জঙ্গী৷ এই বিস্ফোরণে দুইজন নিহত হইয়াছে৷ বাংলাদেশে সম্ভবত এই প্রথম আত্মঘাতী বোমায় এক জঙ্গী নিহত হইয়াছে৷ এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়া দেখাইয়া দিল বাংলাদেশে বারুদের স্তুপ যেকোনও সময় ব্যাপক ধবংস আনিয়া দিতে পারে৷ গত বছরই ঢাকায় এক রেঁস্তোরায় জঙ্গী হামলায় অন্তত সাতাশ জনের মৃত্যু হইয়াছিল৷ এই ঘটনার পর পদ্মা মেঘনা দিয়া অনেক জল গড়াইয়া গিয়াছে৷ সেই নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা, রক্ত স্রোতের ও হত্যার ভয়াবহতাকে মাথায় রাখিয়া সে দেশের প্রশাসন কতখানি সজাগ ও সতর্ক সেই প্রশ্ণ উঠিয়াছে৷
মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে হাসিনা সরকারের কঠোর মনোভাব গোটা বিশ্বই দেখিয়াছে৷ বেশ কয়েকজন হত্যা অপরাধীকে ফাঁসীর কাঠেও ঝুলাইবার ঘটনা সন্ত্রাসীদের কোমড় ভাঙ্গিয়া দিয়াছে৷ সন্ত্রাসবাদী হত্যা হামলা হইতে বাংলাদেশ অনেক বেশী মুক্ত এমন ধারণাই দেখা গিয়াছে৷ একথা বলিলে হয়তো ভুল বলা হইবে না যে, ঢাকায় আত্মঘাতী বোমা হামলা ও বহুতল বাড়ীতে বিপুল আগ্ণেয়াস্ত্র মজুতের ঘটনা বাংলাদেশের মানুষের চোখ খুলিয়া দিয়াছে৷ এই ঘটনায় হাসিনা সরকারকে এখন রণকৌশল ঠিক করিতে হইবে৷ বেশ কিছুদিন কৌশলগত কারণে জঙ্গীরা নীরব নিস্তব্ধ থাকিয়াছে৷ সময় ও সুযোগ বুঝিয়া যে মরণ কামড় বসাইবে এই ধান্দাই কাজ করিয়াছে৷ বাংলাদেশের নির্বাচনের দিনও আগাইয়া আসিতেছে৷ গোটা দেশেই অস্থিরতা সৃষ্টি করিয়া নির্বাচনে যাহারা ফায়দা তুলিতে চায় তাহারা যে অনেক বেশী সক্রিয় সে বিষয়ে নতুন করিয়া বলিবার অপেক্ষা রাখে না৷ পাক সন্ত্রাসবাদীরা বাংলাদেশে কতখানি ঘাঁটি গাড়িয়াছে এই তথ্য নিশ্চয়ই ভারত বাংলা উভয় দেশের কাছে নিশ্চয়ই আছে৷ বাংলাদেশে হিন্দু জনগোষ্ঠীর উপর হামলা, পুরোহিত হত্যা, মন্দির ভাঙচুরের পিছনে কাহাদের হাত তাহা সংঘটিত ঘটনাগুলি চোখে আঙুল দিয়া দেখাইয়া দিতেছে৷
মৌলবাদী শক্তি বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করিয়া হাসিনা সরকারের পতন ঘটাইতে চহিতেছে৷ সাধারণ নির্বাচনের আগে হিংসাত্মক ঘটনার বিস্তৃতির সম্ভাবনা থাকিয়া যাইতেছে৷ হাসিনা সরকার বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অংশের মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করিবার ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ জারী রাখিয়াছেন কিনা সেই প্রশ্ণ উঠিয়াছে৷ হাসিনা সরকারের উপর অগাধ বিশ্বাস থাকা সত্বেও সংখ্যালঘু অংশের মানুষ এখন বাংলাদেশে থাকার পক্ষে নিরাপত্তাহীনতার আশংকায় ভুগিতেছেন৷ মৌলবাদী সন্ত্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে হাসিনা প্রশাসনের সর্বশক্তি নিয়োগ করা উচিত৷ যদি এই সন্ত্রাসী কাজ বন্ধ করা না যায় তাহা হইলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত সেই অন্ধকারে ঢাকা পড়িতে বাধ্য৷ উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে বাংলাদেশকে আগাইতে হইলে মৌলবাদী শক্তি ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান জারী রাখিতেই হইবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *