BRAKING NEWS

ধৃত পাঁচ রোহিঙ্গা যুবতী কারাগারে অভিযুক্ত পাচারকারী পুলিশি জিম্মায়

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ এপ্রিল৷৷  বাংলাদেশ থেকে ভারতের ত্রিপুরায় প্রবেশ করে অসমের শিলচরে যাওয়ার পথে উত্তর ত্রিপুরার চোরাইবাড়ি থানার নিয়মিত তল্লাশিতে ধৃত পাঁচ রোহিঙ্গা যুবতী-সহ এক নারী পাচারকারী যুবককে শনিবার ধর্মনগরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ৷ শুনানি শেষে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট পাঁচ যুবতীকে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে ধৃত নারী পাচারকারীকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন৷ পাচারকারী যুবককে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী এবং মানব পাচার সংক্রান্ত তথ্য জানতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েছে বলে জানা গেছে৷

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেল প্রায় পাঁচটা নাগাদ একটি মারুতি অল্টো কারকে ত্রিপুরার চোরাইবাড়ি থানার চেক পয়েন্টে দাঁড় করানো হয়৷ গাড়ির ভিতরে পাঁচ যুবতী যাত্রী দেখে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সন্দেহ হয়৷ পুলিশ এগিয়ে গিয়ে তাদের পরিচয় জানতে চায়৷ তারা কিছু বলতে পারেনি৷ তখন তাদের আটক করে থানায় নিয়ে টানা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়৷ মানব পাচারকারী সন্দেহে আটক যুবক তাকে বিশালগড় থানা এলাকার গোকুলনগর গ্রামের বাসিন্দা জনৈক হুসেন মিয়াঁর বছর ৩৫-এর ছেলে শ্যামল মিয়াঁ বলে পরিচয় দিয়েছে৷ শ্যামল নাকি পুলিশকে বলেছে, সে ওই পাঁচ যুবতীকে শিলচর পৌঁছে দেবে বলে ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে তার গাড়ি দিয়েছিল৷

আটক যুবতীদের আবিজা সুলতানা, জন্নত বেগম, রাকিবা সুলতানা, হালেসা বেগম এবং রাসিদা বেগম বলে পরিচয় পাওয়া গেছে৷ তাদের প্রেেত্যকের বয়স ১৮ থেকে ২০-এর মধ্যে৷ পুলিশের কাছে দুর্দশার বর্ণনা করতে গিয়ে ধৃত যুবতীরা নাকি জানিয়েছে, তারা মূলত বাংলাদেশের বাসিন্দা৷ কাজের তাগিদে ব্রিটিশরা তাদের পূর্বপুরুষদের অবিভক্ত বাংলাদেশ থেকে মায়ান্মারের রাখাইন জেলায় নিয়ে গিয়ে কাজের ব্যবস্থা করে দেয়৷ পরে মায়ান্মার সরকারের সাথে নানা কারমে তাদের একাংশের বিবাদ বাঁধে৷ এক সময় দাঙ্গাও হয়৷ এর জন্য দায়ী কিছু রোহিঙ্গা ও মায়ান্মার সরকার৷ সংগঠিত দাঙ্গায় হিংসার বলি হতে হচ্ছে সহজ সরল রোহিঙ্গাদের৷

যুবতীরা নাকি আরও জানিয়েছে, বছর কয়েক আগে তারা নানাভাবে ভারতের জম্মু যায়৷ সেখানে থেকে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ-পশ্চিমবঙ্গ হয়ে পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে কক্সবাজারের বিভিন্ন অস্থায়ী শিবিরে বসবাস করছিল৷ কিন্তু সেখানে জীবিকার কোনও সুবিধা না পেয়ে তারা বাধ্য হয়ে ফের ভারতে পাড়ি দেয়৷

পুলিশ সূত্রটি জানিয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরের দালাল তথা পাচারকারী রোহিঙ্গা যুবতীদের কর্মসংস্থান দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে শিলচর, শিলিগুড়ি, কলকাতা-সহ দেশের বিভিন্ন নিষিদ্ধপল্লিতে বিক্রি করে৷ সব সময় তারা অবশ্য সফল হয় না৷ কখনও কখনও ধরা পড়ে যায়৷ এক্ষেত্রে তারা অসম, ত্রিপুরা, কলকাতা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকাকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করে৷ বিশেষ করে বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলা থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা ত্রিপুরার সোনামুড়া দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে৷ ত্রিপুরার সোনামুড়া এলাকায় বাংলাদেশ লাগোয়া একটি দিঘির উন্মুক্ত সীমান্ত গত কয়েক দশক ধরে চোরাকারবারী-সহ মানব পাচারকারীদের মৃগয়াক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে৷ ধৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত স্বীকারোক্তিতে এ-সব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *