BRAKING NEWS

রাগের বশে মরণ ফাঁদেই পা প্রদ্যুৎ কিশোরের

৷৷দেবাশীষ ঠাকুর৷৷
মাথা গরম করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ দলের সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিলেন৷ ত্রিপুরার রাজপরিবার থেকে বরাবরই রাজার মতো রাজনীতি করতে দেখা গেছে৷ কিরীট বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর লোকসভার আসনে দাঁড়িয়ে অনায়াসে জয় পেয়েছিলেন কিন্তু তিনি কখনও প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদে অভিষিক্ত হননি৷ মহারাণী বিভু কুমারী দেবী রাজ্য বিধানসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন৷ জয়ী হেেয় মন্ত্রীত্বও করেছেন৷ কিন্তু দলের কোনও দায়িত্ব নেননি৷ কিন্তু মহারাজ প্রদ্যুৎ কিশোর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নিয়েই সব চাইতে বেশী জোর দিয়েছেন উপজাতি অধ্যুষিত এলাকার৷ কংগ্রেসের মরাগাঙে কিছুটা প্রাণের সঞ্চার করেই একেবারে জল ঢেলে দিলেন৷ পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকতেই পারে৷ যে যুবকরা কংগ্রেস প্রার্থী প্রজ্ঞা দেববর্মণের গাড়িতে হামলা করেছিল তাদের কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে তুলাশিখর থানায় এনেছিল৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদ্যুৎ কিশোর থানায় ঢুকে গ্রেপ্তার হওয়া এক যুবককে পুলিশের সামনেই মারধোর করেন৷ তাঁর এই আচরণে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠে৷ বিজেপি এই ঘটনাকে তীব্র ভাষায় নিন্দা করে এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার অভিযোগে প্রদ্যুৎ কিশোরকে গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়েছে৷ পুলিশ ইতিমধ্যে প্রদ্যুৎ কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে জামিন অযোগ্য ধারায়৷ ত্রিপুরার রাজনীতির ইতিহাসে এই ঘটনা নজীর বিহীন৷

গতকাল এই নিবন্ধেই দাবী করেছিলাম যে রাজ্যে কংগ্রেসের কোনও জননেতা নেই৷ ধৈর্য্য, সহনশীলতা, ত্যাগ একজন নেতার সবচাইতে বেশি জরুরি৷ কিন্তু প্রদ্যুৎ কিশোর প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি জননেতা হতে পারবেন না৷ ধৈর্য্য, সহনশীলতার পরীক্ষায় তিনি একেবারেই ফেল মেরেছেন৷ এ রাজ্যে যে কংগ্রেস উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করেছিল সেই কংগ্রেসকে আবার পিছনে ঠেলে দিলেন৷ আসলে, মাথা ঠান্ডা করে দল চালাবার নূন্যতম অভিজ্ঞতা প্রদ্যুৎ কিশোরের থাকার কথা নয়৷ দল তাঁর উপর অনেক আশা ভরসা করেছিল৷ কিন্তু তিনি রাজপরিবারের গরিমাকে ধুলায় লুটিয়ে দিলেন৷ ত্রিপুরার মানুষের প্রবল রাজভক্তিকে তিনি এই ভাবেই মূল্য দিতে পারলেন?

পশ্চিম আসনে ভোটে রিগিং এর অভিযোগ তুলে কংগ্রেস নির্বাচন কমিশনকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছে৷ জাতীয়স্তরে বিষয়টি নিয়ে গেছে৷ কিন্তু আজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থানায় ঢুকে অভিযুক্ত যুবকের উপর যেভাবে চড় থাপ্পর চালিয়েছেন তা এক কথায় নজীর বিহীন৷ আসলে, রাজা হওয়া আর গণতন্ত্রে নেতা হওয়া এক নয়৷ অনেক ধৈর্য্যের পরীক্ষায় উত্তির্ণ হতে হয়৷ ত্রিপুরার রাজনীতির দীর্ঘ ইতিহাসে এমন নজীর নেই৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির গরিমা তাও ধুলায় গড়াগড়ি খেল৷ বিজেপির হাতে বড় অস্ত্র তুলে দিয়ে কংগ্রেসকে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিলেন প্রদ্যুৎ কিশোর৷ গরম মাথা অনেক ভুল পদক্ষেপকে আমন্ত্রণ জানায়৷ প্রদ্যুৎ কিশোর রাগের বশে সেই মরণ ফাঁদেই পাদ দিয়ে বসলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *