বাংলাদেশ আট ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা, ২৫ মার্চ (হি.স.) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, \”আজকের বাংলাদেশ আমাদের এক দশকের প্রচেষ্টার ফল। আমরা আমাদের প্রবৃদ্ধি এ অর্থবছরে আট ভাগ অর্জন করতে যাচ্ছি।\” সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ বছরের স্বাধীনতা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, \”আমাদের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৯০৯ মার্কিন ডলারে পৌঁছচ্ছে।\” শেখ হাসিনা বলেন, \”২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। এ দিবস আমরা আগামিকাল উদযাপন করব। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে যেন স্বাধীনতার সুফল পৌঁছায়, প্রতিটি মানুষ যেন উন্নত জীবন পায়। একটি মানুষও ক্ষুধার্ত থাকবে না, গৃহহারা থাকবে না। বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাবে না। তাদের জীবনটা অর্থবহ হবে, সুন্দর হবে, উন্নত হবে- সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করে যাচ্ছি। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে এ স্বাধীনতার সুফল পৌঁছাক, যেটা জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল, স্বপ্ন ছিল। তিনি বেঁচে থাকলে আমরা স্বাধীনতার পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যেই তা অর্জন করতে পারতাম। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমাদের সেই সম্ভাবনা কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু আজকে যখন আমরা সেই সুযোগ পেয়েছি তার আদর্শ বুকে ধারণ করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।\”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, \”২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল, আমরা লাখো লাখো মানুষ হারিয়েছি। কাজেই এ দিনটি গণহত্যা দিবস হিসেবে যেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় সেটার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।\” তিনি বলেন, \”আজকে আমাদের সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে আমাদের শিল্প, কলা, সাহিত্য, গবেষণা বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অবদান রেখেছেন তাদের আমরা স্বাধীনতা পুরস্কার দিতে পেরেছি, এটা আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। গুণীজনকে আমরা সম্মান দিতে পেরেছি।\” এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত ব্যক্তিদের মধ্যে এ কে এম মোজাম্মেল হক, প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন, ড. কাজী মিসবাহুন নাহার, চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম, সমাজসেবায় ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদ, সংস্কৃতিতে মুর্তজা বশীর, সাহিত্যে হাসান আজিজুল হক, গবেষণা ও প্রশিক্ষণে অধ্যাপক ড. হাসিনা খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জ্বল হায়দার চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ এ টি এম জাফর আলম (মরণোত্তর), চটবটগ্রামে দৈনিক আজাদী’র প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল খালেক (মরণোত্তর), দৈনিক আজাদী’র সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ (মরণোত্তর) ও মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী খানের (মরণোত্তর) পক্ষে পরিবারের সদস্যরা পদক গ্রহণ করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব এগ্রিকালচারের (বিআইএনএ) পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক পদক গ্রহণ করেন। স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিচ্ছে সরকার। স্বাধীনতা পদকের ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ১৮ ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম সোনার পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, তিন লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *