BRAKING NEWS

পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবারও অনশন চলছে

ঢাকা, ১৪ মার্চ (হি.স.) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগে ফের নির্বাচনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কাছে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আজ বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো অনশন করছেন সাত শিক্ষার্থী। অন্যদিকে ডাকসুতে পুনঃনির্বাচন ও রোকেয়া হলের প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে বুধবার বিকাল থেকে পৃথকভাবে আমরণ অনশন করছেন রোকেয়া হলের পাঁচ ছাত্রী। শিক্ষার্থীরা পুননির্বাচনের পাশাপাশি নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের পদত্যাগেরও দাবি জানিয়েছেন।


মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের মীম আরাফাত মানব, একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের তাওহীদ তানজীম, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শোয়েব মাহমুদ, পপুলেশন সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের মোহাম্মদ মাঈনউদ্দিন, দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের অনিন্দ্য মন্ডল, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের রাফিয়া তামান্না এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আল মাহমুদ তাহা। রোকেয়া হলে অনশনরত ছাত্রীরা হলেন উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সায়েদা আফরিন, একই বিভাগের জয়ন্তী রেজা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের রাফিয়া সুলতানা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শ্রবণা শফিক দীপ্তি ও ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রমি খিশা। অনশনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বুধবার গভীর রাতে ছাত্রলিগ নেতারা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।অনশনরতদের সাথে সংহতি জানাতে এনে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু)নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার পদত্যাগ দাবি করেছেন ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রোকেয়া হলের অনশনরত ছাত্রীদের সমর্থন দিতে গিয়ে তিনি এ দাবি করেন। নুরুল বলেন, প্রভোস্টকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। ডাকসু নির্বাচনে রোকেয়া হলে ব্যাপক কারচুরির অভিযোগ করে তিনি বলেন, রোকেয়া হলের নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়ম হয়েছে। সে হিসাবে জিনাত হুদা প্রভোস্টের দায়িত্বে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। তার অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে রোকেয়া হলে ব্যালটবাক্স সরিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠে সরকারি ছাত্র সংগঠন ছাত্রলিগের বিরুদ্ধে। এই হলে এক ঘণ্টা দেরিতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। পরে আবার ভোটগ্রহণ স্থগিত থাকে।
দীর্ঘ ২৮ বছর পর ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ২৫টি পদের মধ্যে দুটি ছাড়া সব পদে জয় পায় ছাত্রলিগ। ভোটের দিনই নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করে ছাত্রলিগ ছাড়া সব প্যানেল। এরা হলো- বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল, বামজোট, ইসলামি আন্দোলন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জোট ও সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এর পর থেকে তারা পুনঃনির্বাচন দাবিতে বিক্ষোভ করছে।শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রোকেয়া হলে ৯টি ব্যালটবাক্স থাকার কথা বলা হলেও ভোটগ্রহণ শুরুর সময় ৬টি ব্যালটবাক্স দেখানো হয় প্রার্থীদের। কিন্তু বাক্সগুলো সিলগালা করা হয়নি। বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে আগে থেকেই সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় এ হলের শিক্ষার্থীরাও বাক্স তল্লাশির দাবি জানান। এ অনিয়মের প্রতিবাদ করতে এসে ছাত্রলিগের নারী কর্মীদের হামলার শিকার হন নুরুল হক। পরে শিক্ষার্থীরা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের সময় রোকেয়া হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গোলযোগের ঘটনাটি ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অথবা ‘গুজবের’ কারণে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রভোস্ট জিনাত হুদা। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। জিনাত হুদা বলেন, ওইদিন হলে যা ঘটেছে তা ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অথবা ‘গুজবের’ কারণে হয়ে থাকতে পারে। ভোটের আগে ব্যালট বাক্স সিল মারার প্রক্রিয়া কী হবে তা নিয়ে দ্বিধার মধ্যে থাকায় ভোট গ্রহণ দেরিতে শুরু করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *