BRAKING NEWS

মোটর চালিত প্যাডেল রিক্সা বেআইনী ঘোষিত

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ ফেব্রুয়ারী৷৷ যাত্রী সুরক্ষায় কোনও আপোষ নয়৷ এই কথা বলে মোটর চালিত প্যাডেল রিক্সা বেআইনী ঘোষণা দিল উচ্চ আদালত৷ দীর্ঘ সময় ধরে আগরতলায় মোটর চালিত প্যাডেল রিক্সা চলাচল করা সত্বেও প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় উচ্চ আদালত ক্ষুব্ধ বলে রায়ে উল্লেখ করেছে৷ মঙ্গলবার উচ্চ আদালতের মুখ্য বিচারপতি সঞ্জল কারোল এবং বিচারপতি অরিন্দম লোধের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়েছেন, নয়া নিয়ম চালু না হওয়া পর্যন্ত মোটর চালিত প্যাডেল রিক্সা রাস্তায় চলাচল করতে পারবে না৷ এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে চার সপ্তাহের সময় বেধে দিয়েছে উচ্চ আদালত৷


পূর্বতন সরকারের আমলেই আগরতলার রাস্তায় মোটর চালিত প্যাডেল রিক্সা চলাচল শুরু করে৷ বহু রিক্সায় দিনে দিনে মোটর লাগানোর উদ্যোগ বেড়ে চলা সত্বেও সেই বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ কিংবা পদক্ষেপের কোনও উদ্যোগ নেয়নি পূর্বতন সরকার৷ বিভিন্ন সময়ে গতি নিয়ন্ত্রণ না করতে পেরে মোটর চালিক প্যাডেল রিক্সা দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে৷ তাতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে৷ এই বিষয়ে একাধিকবার বিভিন্ন মহল থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পূর্বতন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল৷ কিন্তু, মোটর চালিত প্যাডেল রিক্সা নিয়ন্ত্রণে কোনও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করেনি পূর্বতন সরকার৷
ফলস্বরূপ, আগরতলায় প্রায় নববই শতাংশ প্যাডেল রিক্সায় মোটর লাগানো রয়েছে৷ পূর্বতন সরকারের আমলেই প্যাডেল রিক্সার রুলস সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, কোনও এক অজ্ঞাত কারণে তা হিমঘরে ফেলে রাখা হয়েছে৷ রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর এই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন৷ প্যাডেল রিক্সা সম্পূর্ণভাবে পুর নিগমের এক্তিয়ারভূক্ত৷ ফলে, পরিবহণ দপ্তরের তরফে পুর নিগমের কাছে এই বিষয়ে স্পষ্টিকরণ জানতে চাওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, প্যাডেল রিক্সায় মোটর লগানোর বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রুলস চালু করতে পরিবহণ দপ্তর এবং পুর নিগম পরস্পরের উপর দায় ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে৷
এরই মাঝে উচ্চ আদালতে এই সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়৷ আইনজীবী সৌমিক দেব উচ্চ আদালতে এই বিষয়ে মামলা দায়ের করেন৷ মোটর চালিত প্যাডেল রিক্সা মামলাটির উচ্চ আদালতে দীর্ঘ শুনানী হয়৷ সর্বশেষ শুনানীতে উচ্চ আদালত পুর কমিশনার, পরিবহণ সচিব এবং যুগ্ম পরিবহণ কমিশনারকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ নিয়ে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়৷
মঙ্গলবার এই মামলায় চূড়ান্ত শুনানী হয়েছে৷ উচ্চ আদালতের মুখ্য বিচারপতি সঞ্জল কারোল এবং বিচারপতি অরিন্দম লোধ জন নিরাপত্তা সুরক্ষিত নয়, জেনেও পুর নিগম কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসন কেন দীর্ঘ সময় ধরে কোন ব্যবস্থা নেয়নি, তা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন৷
এদিন, আদালত রায়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে জন নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই হবে৷ তার জন্য পুর কমিশনার, ট্রাফিক পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নয়া নিয়ম চালু না হওয়া পর্যন্ত আগরতলার রাস্তায় মোটর চালিত প্যাডেল রিক্সা চলাচল করতে দেওয়া যাবে না৷ পাশাপাশি চার সপ্তাহের মধ্যে গৃহিত পদক্ষেপ নিয়ে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে৷ তবে, এই রায় নিয়ে কোনও স্পষ্টিকরণ কিংবা পরিবর্ধন প্রয়োজন মনে হলে আদালতে আবেদন জানানো যাবে৷
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই রায়ের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হিসেবে আগামীকাল বিজ্ঞপ্তি জারী করা হবে৷ এদিক, মোটর চালিত প্যাডেল রিক্সা চালকদের বিষয়ে ভাবছে রাজ্য সরকার৷ এই রায়ে গরীব রিক্সা চালকরা যাতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ না হন তার জন্য রুলস সংশোধনের চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য সরকার৷ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে খসড়া সংশোধনী তৈরী হয়েছে৷ তাতে মোটর চালিত প্যাডেল রিক্সায় গতি নিয়ন্ত্রণ, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷ সূত্রের দাবি, এই রায়ের প্রেক্ষিতে আদালতে রিভিও পিটিশন দাখিল করবে রাজ্য সরকার৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *