BRAKING NEWS

বাংলাদেশে রহস্যজনক ভাবে খুন ধর্ষণ কান্ডে অভি্যুক্ত এক ব্যক্তি, তদন্তে পুলিশ

ঢাকা, ৩ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : বাংলাদেশে ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত তৃতীয় এক ব্যক্তির মরদেহের গলায় ‘স্বীকারোক্তিমূলক’ চিরকুট লাগানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে শুক্রবার। গত এক মাসের মধ্যে এরকম আরো দুটি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ঝালকাঠি জেলাতেই পাওয়া যায় দুটি মরদেহ এবং এগুলো একই ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত দু’ব্যক্তির। মানবাধিকার কর্মীরা প্রশ্ন করেছেন, আইনের শাসনের অনুপস্থিতি ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থার অভাবেই কি এসব হত্যাকান্ড ঘটছে ?


প্রথমে সজল সমাদ্দারের মরদেহ পাওয়া যায় ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলায় এক ধানক্ষেত থেকে। তার পর ছ’দিনের মাথায় একই ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত দ্বিতীয় ব্যক্তি রাকিব মোল্লাহর মৃতদেহ পাওয়া যায় গলায় চিরকুট ঝোলানো অবস্থায় – রাজাপুরে একটি ইটের ভাটার পাশে। দু’জনেরই গলায় ঝুলানো চিরকুটে লেখা ছিলো তাদের নাম, কোন ধর্ষণ মামলার তারা অভিযুক্ত এসব তথ্য। এছাড়া চিরকুটে আরও লেখা ছিল : ‘ধর্ষকের ইহাই পরিণতি’ এমন একটি বাক্য। শাহিন জমাদ্দার কিসলু, যিনি নিহত এই দুই ব্যক্তির সম্পর্কে যথাক্রমে মামা ও চাচা হন, তিনি বলেন, এফআইআর হওয়ার আগেই সজলের লাশ পাওয়া যায় গত ২৬ জানুয়ারি । আর রাকিব উধাও হয় ২৫ তারিখ নবীনগর থেকে। তিনি অভিযোগ করেন, আমার ভাগ্নে ও ভাইঝিকে নির্যাতন করে মারছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত হবে, তদন্তের পর বিচারে দোষী সাব্যস্ত হবে। তখন তাকে ফাঁসি দিক অথবা যাবজ্জীবন দিক সেটা আমরা মেনে নিতে পারি। কিন্তু এভাবে হলে তো আমরা সেটা মেনে নিতে পারি না।নিহত দু’জনই পাশের জেলা পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার বাসিন্দা। তারা দু’জনেই একই এলাকার ১৩ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত। ঝালকাঠির পুলিশ বলছে, তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছেন। ঝালকাঠি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, বিষয়টা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। কারণ হল এরা আমাদের এই এলাকার কেউ না, এদের বাড়ি এখানে না, এখানকার কোন অপরাধের তারা জড়িত না,তাদের অপরাধের ঘটনাস্থল অন্য জেলায়। এখন আমরাও বোঝার চেষ্টা করছি এই লাশগুলো এখানে কিভাবে এলো। কারা এগুলো করছে তা আমরা তদন্ত করার পর বলতে পারবো।


বাংলাদেশে গত এক মাসে এ নিয়ে ধর্ষণে অভিযুক্ত তৃতীয় ব্যক্তির মরদেহ চিরকুট লাগানো অবস্থায় পাওয়া গেলো। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিলোঢাকার কাছে সাভারে। জানুয়ারির ১৮ তারিখ সেখানে ধর্ষণের ‘স্বীকারোক্তিমূলক’ চিরকুট গলায় ঝোলানো অবস্থায় একজন অভিযুক্তর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ঝালকাঠির প্রথমটি এবং সাভারের মরদেহটি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে।এমন ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল। তিনি বলেছেন, এমন ঘটনায় ধর্ষণ তো কমবেই না বরং এটাকে ঘিরে আরও অপরাধমূলক ঘটনার জন্ম হতে পারে। রাষ্ট্র যদি এই ধরনের কর্মকান্ড তৎক্ষণাৎ তৎপর হয়ে বন্ধ করতে না পারে, তাহলে তারা দায়বদ্ধ থাকবে জনগণের মধ্যে বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা সৃষ্টির জন্যে। সেটা খুবই একটা অশুভ লক্ষণ।

সাধারণ মানুষ এই ধরনের বিচার বহির্ভূত কর্মকান্ড সমর্থন করে যখন আইনের প্রতি সে আস্থা হারায়। তিনি আরও বলেছেন, সেই ক্লিন হার্ট অপারেশন থেকে শুরু করে ক্রসফায়ার দেখেছি, এনকাউন্টার বন্দুক-যুদ্ধ দেখেছি। জায়গায় জায়গায় মানুষের মরদেহ পাওয়া যাচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই ধরনের যে আচরণ রয়েছে সেটার সুযোগ নিয়ে বাইরের মানুষ এমন কান্ড ঘটাতে পারে এমন আশঙ্কাও তৈরি হয়। এমন হত্যাকান্ডের ঘটনা আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া ও প্রতিহিংসামূলক আরও ঘটনার জন্ম দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *