BRAKING NEWS

ক্লান্ত মস্তিস্কের সতেজতা আনতে যোগা একমাত্র উপসম ঃ অধ্যাপক গঙ্গাধর, ত্রিপুরাতে স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব মেটাতে প্রস্তুত নিমহানস

বেঙ্গালুরু সফর প্রত্যাগত সন্দীপ বিশ্বাস৷৷ দেশে প্রতি দশ জনের মধ্যে এক জনের মানসিক রোগের চিকিৎসায় সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে৷ তাই, নিমহানস’র মতো প্রতিষ্ঠান সারা দেশে গড়ে উঠুক, মনে করেন অধ্যাপক বি এন গঙ্গাধর৷ নিমহানস অধিকর্তা অধ্যাপক গঙ্গাধরের কথায়,

নিমহানস অধিকর্তা অধ্যাপক বি এন গঙ্গাধর

রাজ্যগুলিকে সবরকম সহায়তায় আমরা প্রস্তুত৷ রাজ্য সরকারের তরফে প্রস্তাব এলেই নিমহানস’র সেন্টার সেখানে গড়ে দেওয়া হবে৷ কেন্দ্রীয় সরকার তাতে আর্থিক সহায়তায়ও দেবে৷ তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, ত্রিপুরা সরকার রাজ্যে নিহানস’র সেন্টার খোলার জন্য প্রস্তাব পাঠালে নিশ্চই সাড়া মিলবে৷ তাতে, ত্রিপুরাতে স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের যে অভাব রয়েছে তা সহজেই মিটবে বলে আশা করা যায়৷ কারণ, নিমহানস এবিষয়ে সহায়তার জন্য তৈরি রয়েছে৷ তাছাড়া, মানসিক রোগে যোগা ভীষণ উপকারী সেকথাও জোর গলায় দাবি করেন অধ্যাপক গঙ্গাধর৷ তাঁর বক্তব্য, ক্লান্ত মস্তিস্কের সতেজতা আনতে যোগা একমাত্র উপসম৷

২০১৬ সালে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এক সমীক্ষা হয়েছে গোটা দেশে৷ সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা দেশে প্রতি দশ জনের মধ্যে এক জনের মানসিক রোগের চিকিৎসায় সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে৷ বিষয়টি নিঃসন্দেহে যথেষ্ট উদ্বেগের৷ ভারত সরকার এই রিপোর্টের ভিত্তিতে ২০১৬ সালেই মানসিক স্বাস্থ্য পলিসি তৈরি করেছে৷ ওই সালেই আইন প্রনয়ণ হয়েছে৷ ২০১৭ সালে সেই আইন কার্যকর করেছে ভারত সরকার৷ অধ্যাপক গঙ্গাধরের দাবি, ওই আইন তৈরিতে নিমহানস’র বিরাট ভূমিকা ছিল৷

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বেঙ্গালুরুস্থিত নিমহানস’র অধিকর্তা অধ্যাপক বি এন গঙ্গাধর সাংবাদিকদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন৷ তাঁর কথায়, প্রতি বছর স্নায়ু রোগের চিকিৎসায় প্রচুর রোগী আসেন নিমহানসে৷ পূর্বোত্তর থেকেও প্রচুর রোগীর চিকিৎসা করা হচ্ছে এই হাসপাতালে৷ সব মিলিয়ে প্রতি বছর গড়ে সাড়ে ৫ লক্ষ রোগী চিকিৎসার জন্য নিমহানসে আসছেন৷

তিনি আরও জানান, নিমহানসে প্রতি বছর সারা দেশের ৩ থেকে ৫ হাজার জনকে মানসিক রোগ নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে৷ তাঁর কথায়, সাধারণ কোর্স থেকে শুরু করে ডিজিট্যাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা রয়েছে এখানে৷ এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, চার বছর ধরে ডিজিট্যাল ট্রেনিংও দেওয়া হচ্ছে৷ তাছাড়াও, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রচুর গবেষণাও করা হয় এখানে৷

অধ্যাপক গঙ্গাধরের বক্তব্য, স্নায়ু রোগের চিকিৎসায় যোগা এবং আয়ুর্বেদ দারুণ উপকারী, তা প্রমাণিত হয়েছে৷ তাই নিমহানসে যোগা থেরাপির মাধ্যমে রোগের চিকিৎসায় সাফল্য মিলেছে৷ এখানে যোগার জন্য পৃথক সেন্টার খোলা হয়েছে৷ টানা ১০ বছর ধরে যোগা থেরাপির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের স্নায়ু রোগের চিকিৎসা চলছে৷ তাঁর দাবি, মানব দেহে যোগার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে৷ বিশেষ করে, মানসিক রোগের চিকিৎসায় যোগার অবদান অনস্বীকার্য৷  তাঁর কথায়, ক্লান্ত মস্তিস্ক সতেজ করার জন্য ওষুধ এখনো আবিস্কার হয়নি৷  তাই, একমাত্র যোগার মাধ্যমেই ক্লান্ত মস্তিস্কের সতেজতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব৷

নিমহানস

স্নায়ু রোগ নানা ধরনের রয়েছে৷ তবে, মানসিক রোগীর চিকিৎসায় বিশেষ যত্ন নিতে হয়৷ অধ্যাপক গঙ্গাধরের কথায়, স্নায়ু রোগ কিংবা মানসিক রোগের চিকিৎসায় দেশের প্রত্যেক রাজ্যে নিমহানস সমতুল্য হাসপাতালের যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷ অসমের তেজপুরে নিমহানসের সেন্টার খোলা হয়েছে৷ তাছাড়া রাঁচীতে অবস্থিত সেন্টারটি দারুন চিকিৎসা করছে৷ তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ মহম্মদ সেলিম ওই রাজ্যে নিমহানস সমতুল্য হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছেন৷ ওই প্রস্তাব ভারত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়েছে৷ তাঁর কথায়, রাজ্যগুলি নিমহানস’র সেন্টার খোলার জন্য প্রস্তাব পাঠালে তা নিশ্চই বিবেচনা করা হবে৷ পরিকাঠামো থেকে শুরু করে সমস্ত বিষয়ে নিমহানস সহায়তা দেবে৷ তাঁর দাবি, রাজ্যগুলিকে মানসিক রোগের চিকিৎসায় সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত৷

অধ্যাপক গঙ্গাধরের কথায় স্পষ্ট, ত্রিপুরাতে স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের যে অভাব রয়েছে তা মেটাতে প্রস্তুত নিমহানস৷ রাজ্য সরকার বহু খুজাখুজি করেও স্নায়ু রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনতে পারছে না৷ নিমহানস’র সেন্টার এরাজ্যে গড়ে উঠলে স্বাভাবিকভাবেই স্নায়ু রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব মিটে যাবে৷ কারণ, অধ্যাপক গঙ্গাধর স্পষ্ট জানিয়েছেন, বেঙ্গালুরু নিমহানস’র চিকিৎসাকরাই ওই সেন্টারে রোগীর চিকিৎসা করবেন৷

প্রসঙ্গত, মানসিক রোগের প্রকৃত কারণ এখনো সকলের কাছেই অজানা৷ অধ্যাপক গঙ্গাধরের কথায়, মানসিক রোগের নির্দিষ্ট কোন কারণ খঁুজে পাওয়া যায়নি৷ এই রোগের পেছনে বিভিন্ন কারণ যুক্ত রয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *