তিন রাজ্য দখল করে বিজয়োল্লাস পিসিসির বিজেপির দাবি উত্তরপূর্বাঞ্চলে নিশ্চিহ্ণ কংগ্রেস

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ ডিসেম্বর৷৷ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে তিন রাজ্যেই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে কংগ্রেস৷ এই জয়ে দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতো ত্রিপুরাতেও কংগ্রেস নেতা কর্মীরা উজ্জীবিত৷ আগরতলায় কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা রাজ্য কার্য্যালয়ের সামনে বিজয়োল্লাস প্রদর্শন করেছে৷ সেখানে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিহনা সহ দলের অন্যান্য নেতা ও কর্মী সমর্থকরা৷
ফলাফল যখন মোটামুটিভাবে প্রকাশ্যে আসে তখন প্রদেশ কংগ্রেস ভবনের সামনে জয়ের আনন্দে মেতে উঠেছে কর্মী সমর্থকরা৷ ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা৷ অন্যান্যদের সাথে জয়ের আনন্দ ভাগ করে নেবার পাঁশাপাশি তাঁকে সর্ব ভারতীয় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর প্রতিকৃতিতে লাড্ডু খাইয়ে দিতেও দেখা গিয়েছে৷ পরে পিসিসি সভাপতি বীরজিৎ সিনহা বলেন, বিজেপি মুক্ত হতে শুরু করেছে দেশ৷ এখনও পর্যন্ত যতগুলি উপনির্বাচন হয়েছে তাতে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই জয় পায়নি বিজেপি৷ এই ধারবাহিকতা আগামী লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত চলতে থাকবে বলে তাঁর দাবি৷ তিনি আশাবাদী আগামী লোকসভা নির্বাচনে সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধীর হাত ধরেই কংগ্রেস জোট সরকার গঠিত হবে দেশে৷
বীরজিৎবাবুর স্পষ্ট বক্তব্য মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর কতোদিন৷ মানুষ এখন সবই টের পেতে শুরু করেছে৷ যোগ্য জবাব দিয়েছে মানুষ৷ এরাজ্যের অবস্থাও ঠিক একই রকম বলে তাঁর দাবি৷ ফলাফলে খুশি বীরজিৎবাবু বললেন, এর প্রভাব রাজ্যেও পড়বে৷ এমনকী আগামী ২২ ডিসেম্বর পুর সংস্থা এবং নগর পঞ্চায়েতের ভোটের যে৪৯টি আসনে তারা প্রার্থী দিয়েছে, সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচন হলে তাদের প্রার্থীরাই জিতবে৷ ভোট ইস্যুতে কী জাতীয়, কী রাজ্য কোনও ক্ষেত্রেই মুখ খুললেন না তিনি৷ বিষয়টি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মতো চলে আর বেশী দূর এগোননি তিনি৷
শাসক বিজেপি বলছে, ১৯টি রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি৷ এখন তিনটি কমে যাওয়ায় ১৬তে এসে ঠেকেছে৷ এই হিসেব ধরেও যদি বলা হয়, তবে দেশের অধিকাংশ রাজ্যে এখনও বিজেপি৷ লোকসভা নির্বাচনে স্বাভাবিক নিয়মেই জিতবে বিজেপি, এমনই দাবি করলেন বীরজিৎ সিনহা৷ তিনি বলেন, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানকে বাদ দিলেও তেলেঙ্গানা, এমনকি উত্তর পূর্বের মিজোরাম পর্যন্ত ক্ষমতা দখল করা এখন বিজেপির কাছে শুধুমাত্র স্বপ্ণ ছাড়া আর কিছুই নয়৷ যদিও, এবিয়টিকে হাল্কা করে দেখছে বলে জানান বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজীব ভট্টাচার্য৷ তিনি বলেন, আকস্মিক ঘটনা হলো কংগ্রেস মুক্ত হলো গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চল৷ সর্বশেষে রাজ্য হিসেবে মিজোরামে থাকলেও এখন সেটিও গিয়েছে৷ ফলাফল যতোই খারাপ হোক না কেন এখনই ময়দান থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না শাসক দল বিজেপি৷ তিনি বলেন, কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে আমরা সর্বদাই প্রস্তুত৷ পাঁচ রাজ্যের ফলাফলে রাজ্যের কিংবা আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এর কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই বিশ্বাস রাখলেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজীব ভট্টাচার্য৷
অন্যদিকে, সিপিএম রাজ্য কমিটির পক্ষে বিজন ধর বলেন, পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলাফলের প্রভাব আগামীদিনে সবগুলি নির্বাচনে পড়বে৷
প্রসঙ্গত, পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলাফলে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব যেমন উজ্জীবিত তেমনই দলের সমস্ত স্তরের কর্মী সমর্থকরাও উজ্জীবিত৷ বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের ভালো ফলের প্রেক্ষিতে ত্রিপুরাতে দল আগামীদিনে ঘুরে দাঁড়াবে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে৷ এই পাঁচ রাজ্যের ফলাফল কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব ও কর্মী সমর্থকদের অনেকটাই অক্সিজেন যোগাবে বলে তথ্যভিজ্ঞ মহলের দাবি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *