BRAKING NEWS

বর্জ্য থেকে সম্পদ, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় নয়া উদ্যোগ, গবাদি পশুর জন্য জৈব পদ্ধতিতে খাবার উৎপাদনে গবেষণায় বিরাট সাফল্য

সন্দীপ বিশ্বাস।। বেঙ্গালুরু।। ৫ ডিসেম্বর।। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা একই সাথে গবাদি পশুর জন্য জৈব পদ্ধতিতে খাবার উৎপাদনে গবেষণায় বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে বেঙ্গালুরুস্থিত আইসিএআর’র ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ এনিমেল নিউট্রিশন এন্ড ফিজিওলজি। সংস্থার অধিকর্তা ড. রাঘবেন্দ্র ভট্টের কথায়, গবাদি পশুর খাদ্য উৎপাদনের ঘাটতি, একই সাথে প্রচুর ব্যয়বহুল হওয়ায় পশুপালকদের প্রচুর ক্ষতি হয়। তাই, জৈব পদ্ধতিতে খাবার উৎপাদনের গবেষণা শুরু করা হয়েছিল। তাতে, বিরাট সাফল্য মিলেছে। পশুপালকরা এখন খুবই সস্তায় গবাদিপশুর জন্য খাবার কিনতে পারবেন। ফলে, তাঁদের আয় নিশ্চিত বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

ড. ভট্টের মতে, আনারস ও কাঁঠালের খোসা এবং সুপারি গাছের খোল দিয়ে ওই খাবার তৈরি সম্ভব। এক্ষেত্রে ত্রিপুরাতে ওই খাবার তৈরির উপাদান প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি “বর্জ্য থেকে সম্পদ” সৃষ্টির ডাক দিয়েছেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েই গবাদিপশুর খাবার তৈরিতে এই গবেষণা শুরু হয়েছে বলে দাবি ড. ভট্টের।

তাঁর কথা, সিলেজ টেকনোলজিকে ব্যবহার করেই ওই খাবার তৈরি হচ্ছে। মূলত, আনারস বা কাঁঠালের খোসা কিংবা সুপারি গাছের খোল দিয়েই ওই খাবার তৈরি হচ্ছে। ড. ভট্টের বক্তব্য, আনারস বা কাঁঠালের খোসা কিংবা সুপারি গাছের খোল ছোট ছোট টুকরো করে একটি ড্রামের ভিতর রাখতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, ওই ড্রামে যেন কোনভাবেই বাতাস ঢুকতে না পারে। ওই বর্জ্য গুলি ২১দিন ড্রামের ভেতরে রাখতে হবে। এরপর ওই বর্জ্য থেকে উৎপাদিত খাবার ১০ বছর সুরক্ষিতভাবে থাকবে। সেই খাবার গবাদিপশুর স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারি, বলেন তিনি। তাঁর আরো দাবি, ন্যুনতম ১৫ টাকা কেজি দরে বাজার থেকে গবাদিপশুর খাবার কিনতে হয় পশুপালকদের। জৈবিক পদ্ধতিতে তৈরি ওই খাবারে খরচ হবে মাত্র ৪ টাকা।

শুধু তাই নয়, অঙ্কুরিত ধান, গম, ভুট্টা থেকেও গবাদিপশুর খাবার তৈরি হচ্ছে। এনিয়ে গবেষণায় সাফল্য মিলেছে দাবি করেন ড. ভট্ট। তাঁর কথায়, এই উদ্যোগ পরিবেশ রক্ষায় বিরাট ভুমিকা নেবে। কারণ, ধানের খড় দিয়েই গবাদিপশুর খাবার তৈরি করা হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, ধানের খড় দিয়ে ব্লক তৈরি করে তা গবাদিপশুদের খাবার হিসেবে দেওয়া সম্ভব। তাতে, খরচও কম, সাথে পরিবেশ রক্ষা হবে। কারণ, ধানের খড় পুড়িয়ে ফেলেন চাষীরা। ফলে, এর থেকে ধূয়া পরিবেশকে বিষিয়ে তুলছে।

বেঙ্গালুরুস্থিত পশুপালন বিষয়ক এই সংস্থার গবেষণায় ত্রিপুরাও ভিষণ উপকৃত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে রাজ্যে গো-পালন একটি শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারছে না। জৈবিক পদ্ধতিতে খাবার তৈরির উদ্যোগ রাজ্যেও নেওয়া হলে গো-পালকরা ভীষণ উপকৃত হবেন বলে দাবি ড. ভট্টের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *