প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড তামিলনাড়ু : মৃত্যু ১১ জনের, ক্ষতিগ্রস্ত বহু বিদ্যুতের খুঁটি

চেন্নাই, ১৬ নভেম্বর (হি.স.): সাইক্লোনিক ঝড় ‘গাজা’-র তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড নাগাপট্টিনম, কুড্ডালোর-সহ তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জেলা| রাতভর বৃষ্টি এবং ঝড়ের তাণ্ডবে উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি ও বহু গাছ| ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘর-বাড়ি| ঝড়ের তাণ্ডবে ইতিমধ্যেই ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে| প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কায় নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৮০,০০০-এরও বেশি মানুষকে| শুক্রবার ভোররাতে তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘গাজা’| শুরু হয় প্রবল বৃষ্টিপাত ও ঝড়| শুক্রবার সকালেও প্রবল বৃষ্টি শুরু হয় তামিলনাড়ুর উপকূলবর্তী শহর কুড্ডালোর, নাগাপট্টিনম, থোণ্ডি ও পাম্বান-এ| রাতভর বৃষ্টি ও ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সর্বাধিক কুড্ডালোর এবং নাগাপট্টিনামে| ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি ও বহু গাছ| ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘর-বাড়ি|
নাগাপট্টিনম, কুড্ডালোর ও তিরুভারুর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঝড়ের তাণ্ডবে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, এছাড়াও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন| শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ই কে পালানিস্বামী বলেছেন, ‘ঘর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে এখনও পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে| মৃতদের পরিবারপিছু ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে| এছাড়াও গুরুতর আতদের ১ লক্ষ টাকা এবং সামান্য আহতদের ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে|’ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ‘সর্বাধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে নাগাপট্টিনাম জেলায়| এযাবত্ ৪৭১টি ত্রাণ শিবির খোলা রয়েছে, ত্রাণ শিবির গুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন ৮১,৯৪৮ জন মানুষ|’ এই দুঃসময়ে তামিলনাড়ু সরকারের পাশে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার| ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং| স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ই কে পালানিস্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছে| কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে|’
ঝড়ের তাণ্ডবে প্রাণহানির পাশাপাশি নাগাপট্টিনমে প্রায় ৫০০০টি, তিরুভারুরে ৪০০০টি ও তাঞ্জাভুরে ৪০০০টি বিদ্যুতের খুঁটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে| আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, শুক্রবার ভোররাতে তামিলনাড়ু ও পুদুচেরির উপকূলে ঘন্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিবেগে আছড়ে পড়ে সাইক্লোনিক ঝড় ‘গাজা’| ঝড়ের প্রভাব পড়েছে কেরলেও| মধ্য কেরলের বিভিন্ন অংশ ও কোচিতে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে| ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আগাম সকর্ততা নিয়েছিল প্রশাসন| সেই মতো ঝড় থামতেই যুদ্ধকালীন তত্পরতায় উদ্ধারকাজ শুরু করেছে এনডিআরএফ| নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৭৬,০০০-এরও বেশি মানুষকে| শুক্রবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ জেলায় সমস্ত স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে| ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি)-র তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার ভোররাত ০০.৩০-০২.৩০ মিনিটের মাঝামাঝি সময়ে তামিলনাড়ু ও পুদুচেরির উপকূল থেকে বয়ে যায় ঘূর্ণিঝড় ‘গাজা’|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *