ই-রিক্সা ইস্যুতে প্রতিবাদীর আসল না নকল সরকারের উপর চাপ বাড়াল শ্রমিক উন্নয়ন মঞ্চ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ নভেম্বর৷৷ সরকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সামিল হওয়ার জন্য ই-রিক্সা পথে নামতে বাধা দেয় বিএমএস৷ প্রতিবাদীরা আসল না নকল, দ্বৈরথে রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াল শ্রমিক উন্নয়ন মঞ্চ৷ কোন আলোচনা ছাড়াই সরকারী সিদ্ধান্তের বিরোধীতায় শাসক সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন কিভাবে মাঠে নামল, তাদের উদ্দেশ্য এবং পরিচয় চিহ্ণিত করার দাবি জানিয়েছে মঞ্চ৷ সরকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি মঞ্চের নেতৃবৃন্দের৷
সম্প্রতি রাজ্য মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ই-রিক্সা মূল সড়ক এবং জাতীয় সড়কে চলাচল নিষিদ্ধ করা হবে৷ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার বিএমএস আগরতলায় বিভিন্ন স্থানে ই-রিক্সা চলাচলে বাধা দেয়৷ তাতে চালকদের পাশাপাশি যাত্রীদেরও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে৷ এবিষয়ে এদিন শ্রমিক উন্নয়ন মঞ্চের পক্ষে বিপ্লব কর সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিএমএস ই-রিক্সা চলাচল বন্ধ কর্মসূচী পালন করেছে৷ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করা হবে বলে রবিবার মাইকিং করা হয়েছে৷ ফলে, আজ আগরতলায় বিভিন্ন স্থানে ই-রিক্সা চালকরা যান চলাতে পারেননি৷ এমনকি যাত্রীদেরও ই-রিক্সা থেকে নামিয়ে দিয়েছেন বিএমএস’র কর্মীরা৷
এদিন প্রতিবাদে সামিল বিএমএস’র কর্মীদের আসল পরিচয় এবং উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ণ তুলেছে শ্রমিক উন্নয়ন মঞ্চ৷ মঞ্চের নেতা বিপ্লব করের কথায়, দীর্ঘ ২৫ বছর সিট্যুর শ্রমিক বিরোধী ভূমিকা এখন বিএমএস’র কার্যকলাপেও প্রতিফলিত হচ্ছে৷ শ্রমিক স্বার্থ ক্ষুন্ন হলে সরকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিৎ৷ সেই আলোচনার নির্যাস রাজ্য সরকার জানানোর মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধান বলে মনে করি৷ কিন্তু, এখন দেখা যাচ্ছে কোন আলোচনা ছাড়াই শাসক সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে পড়েছে৷
বিপ্লববাবুর কটাক্ষ, বিএমএস কর্মী হিসাবে যারা নিজেদের দাবি করছেন তাঁরা আসল না নকল তা চিহ্ণিত করা দরকার৷ তাই তিনি, এদিনের প্রতিবাদ কর্মসূচীতে যারা অংশ দিয়েছেন তাঁদের আসল পরিচয় এবং উদ্দেশ্য চিহ্ণিত করার জন্য পরিবহন মন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছেন৷
তাঁর কথায়, শ্রমিক উন্নয়ন মঞ্চ আজ যথেষ্ট সংযত হয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে৷ নয়তোবা বিএমএস’র সাথে সংঘর্ষ বাঁধতে পারত৷ তাঁর দাবি, ই-রিক্সা পথে নামতে বাধা দেওয়ার ঘটনায় সকাল থেকেই মঞ্চের নেতৃবৃন্দরা কোথাও যাতে বিএমএস’র সাথে সংঘর্ষ না বাঁধে সেদিকে নজর রেখেছেন৷ তিনি সমস্ত ই-রিক্সা চালকদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন৷ পাশাপাশি বলেছেন, আগামী ১৫ নভেম্বর সরকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে সমস্ত ইরিক্সা চালকদের সাথে আলোচনা করবে উন্নয়ন মঞ্চ৷ ওই আলোচনায় সরকারী সিদ্ধান্তে শ্রমিক স্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে এমনটা উঠে আসে, তাহলে নিশ্চই বিষয়টি রাজ্য সরকারের দৃষ্টিতে নেওয়া হবে এবং স্থায়ী সমাধানের দাবী জানাবে মঞ্চ৷
মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক সুবেন্দু চক্রবর্তীর বক্তব্য, ২৫ বছর সিট্যুর সাথে থেকে এখন তাঁরাই জামা পাল্টে বিএমএসে যোগ দিয়েছেন৷ তার জ্বলন্ত উদাহরণ হল, সরকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে ভলবো বাস পরিষেবার বিরোধীতা করেছেন তাঁরা৷ উদয়পুর রাজারবাগ স্ট্যান্ডে ওই বাসের চালককেও তাঁরা হেনস্তা করেছেন৷ তাঁর কথায়, তাদের শীঘ্রই চিহ্ণিত করে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলেই মনে করি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *