BRAKING NEWS

কেন্দ্রীয় আইন চালু করে রাজ্য সরকার বেড়ি পরাতে চলছে ই-রিক্সাকে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ নভেম্বর৷৷ ই-রিক্সাগুলিকে বেড়ি পরাতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ কেন্দ্রীয় আইন হুবহু চালু করে ই-রিক্সাগুলিকে মোটর ভেহিক্যালস অ্যাক্টের আওতায় আনার বিষয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে৷ ফলে, এখন থেকে ই-রিক্সা চালাতে প্রয়োজন রেজিস্ট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ইন্সুরেন্স এবং পারমিট৷ শুধু তাই নয়, ই-রিক্সার জন্য দিতে হবে রোড ট্যাক্স এবং ভাড়াও নির্ধারণ করে দেবে রাজ্য সরকার৷ মোট কথা, অটোর মতোই ই-রিক্সাগুলিকেও নিয়ন্ত্রণ করতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ তাতে নতুন সংযোজন হল, শহরের মূল সড়ক এবং জাতীয় সড়কে ই-রিক্সা চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে৷ পূর্বতন সরকারের আমলেই এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলেও, তা ফাইল বন্দি করে রাখা হয়েছিল৷ বিজেপি-আইপিএফটি জোট মন্ত্রিসভা সেই সিদ্ধান্ত এক সাথে বাস্তবায়নে সবুজ সংকেত দিয়েছে৷

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ তাঁর নিজ অফিস কক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রিসভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, দীর্ঘকাল ধরে ই-রিক্সার জন্য নির্দিষ্ট কোন গাইডলাইন ছিল না৷ ফলে, তারা যেমন খুশি চলাচল করছে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন সময়ে ই-রিক্সা দূর্ঘটনার কবলে পড়ছে৷ যাত্রীদের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে৷ কিন্তু, আইনের গ্যাড়াকলে ই-রিক্সাগুলির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছিল না৷ তাই, এখন রাজ্য সরকার ই-রিক্সাগুলিকেও মোটর ভেহিক্যালস অ্যাক্টের আওতায় নিয়ে আসছে৷ কেন্দ্রীয় আইন রাজ্য সরকার হুবহু বাস্তবায়ন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, রাজ্য মন্ত্রিসভা তাতে অনুমোদন দিয়েছে৷

ফলে, এখন থেকে ই-রিক্সাগুলিও আইন মেনে চলতে হবে৷ শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, কোন ই-রিক্সা ৪ জনের বেশি যাত্রী বহন করতে পারবে না৷ ৪০ কেজি ওজনের বেশি পণ্য সামগ্রী বহন করা যাবে না৷ প্রতিটি ই-রিক্সার মোটরের ক্ষমতা সর্বোচ্চ ২০০০ ওয়াট হতে পারবে এবং গতি প্রতি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২৫ কিমি’র বেশি হতে পারবে না৷ সাথে তিনি যোগ করেন, এখন থেকে প্রত্যেক ই-রিক্সার জন্য রেজিস্ট্রেশন এবং পারমিট নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে৷ পাশাপাশি প্রত্যেক ই-রিক্সা চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ই-রিক্সার ইন্সুরেন্স অবশ্যই থাকতে হবে৷ শুধু তাই নয়, ই-রিক্সার জন্য রোড ট্যাক্সও দিতে হবে৷ তাঁর কথায়, ই-রিক্সাগুলিকে মোটর ভেহিক্যালস অ্যাক্টের আওতায় আনার বিষয়ে মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে৷ ফলে, এখন থেকে ই-রিক্সার ভাড়াও নিয়ন্ত্রণ করবে রাজ্য সরকার৷

শিক্ষামন্ত্রী আরো জানান, ই-রিক্সা মূল সড়ক এবং জাতীয় সড়কে চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা৷ তাঁর কথায়, পূর্বতন সরকারের আমলেই এবিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল৷ কিন্তু, কোন কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি৷ বিষয়টি ফাইল বন্দি রাখা হয়৷ তাঁর বক্তব্য, ই-রিক্সা নিয়ে পূর্বতন সরকারের আমলে জনৈকা লিপিকা দাস সিনহা উচ্চ আদালতে মামলা করেছিলেন৷ ওই মামলায় উচ্চ আদালত তদানিন্তন রাজ্য সরকারকে নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করে লাগু করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল৷ তাতে, ওই সময়ে ই-রিক্সা চলাচলের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় আইন অনুসরণ করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল তৎকালীন সরকারের পরিবহন দপ্তর৷ বিজ্ঞপ্তি জারি করে সদর, মোহনপুর, জিরানীয়া, তেলিয়ামুড়া এবং খোয়াই মহকুমায় মূল সড়ক এবং জাতীয় সড়কে ই-রিক্সা চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা দিয়েছিল৷ পরিবহন দপ্তরের তদান্তিন অবর সচিব এম দেবনাথের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সদর মহকুমায় পশ্চিম জেলার সমস্ত জাতীয় সড়ক, বটতলা থেকে চন্দ্রপুর আইএসবিটি ভায়া কামান চৌমুহনী ও পুরাতন মোটর স্ট্যান্ড, বটতলা থেকে এয়ারপোর্ট ভায়া দূর্গা চৌমুহনী, ফায়ার ব্রিগেড চৌমুহনী থেকে পুরাতন মোটর স্ট্যান্ড ভায়া জ্যাকসন গেইট, জি বি থেকে পুরাতন মোটর স্ট্যান্ড ভায়া অভয়নগর, এ ডি নগর থেকে ক্যাম্পের বাজার, জি বি বাজার থেকে নাগেরজলা ভায়া উত্তর গেইট ও আরএমএস চৌমুহনী, রাধানগর থেকে এয়ারপোর্ট ভায়া লিচুবাগান, রাধানগর থেকে পুরাতন মোটর স্ট্যান্ড ভায়া উত্তর গেইট ও ওমেন্স কলেজ এবং শঙ্কর চৌমুহনী থেকে পুরাতন মোটর স্ট্যান্ড ভায়া কর্ণেল চৌমুহনী, বিদুরকর্তা চৌমুহনী এবং এল এস বাড়ী রোড এই রাস্তাগুলি দিয়ে ই-রিক্সা চলাচল করতে পারবে না৷ পাশাপাশি মোহনপুর ও জিরানীয়ায় জাতীয় সড়ক এবং তেলিয়ামুড়া ও খোয়াই মহকুমাতে বেশ কিছু রাস্তায় ই-রিক্সা চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল৷ পূর্বতন সরকারের গৃহিত সিদ্ধান্ত বর্তমান জোট সরকার বাস্তবায়ন করবে বলে মন্ত্রিসভা সায় দিয়েছে, জানান শিক্ষামন্ত্রী৷ সাথে যোগ করেন, কেন্দ্রীয় আইন এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনেই সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে৷

এদিন শিক্ষামন্ত্রী পূর্বতন সরকারের ভূমিকায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন৷ তাঁর কথায়, কাদের স্বার্থ রক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্বেও বিজ্ঞপ্তি জারি করেও তা বাস্তবায়ন করেনি তদানিন্তন সরকার, সে বিষয়টি খুবই রহস্যজনক৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *