BRAKING NEWS

আমবাসায় জেলাস্তরে জনতার দরবারে মুখ্যমন্ত্রী, জনগণের সাথে সরাসরি কথা বলে আগামীদিনে উন্নয়ন কর্মসূচির রূপরেখাও তৈরি করা যায়

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ অক্টোবর৷৷ ত্রিপুরার নতুন সরকার জনগণের সরকার৷ উন্নয়নমূলক কাজই হোক বা ব্যক্তিগত সমস্যার সমাধান এজন্য জনগণকে সরকারের কাছে যেতে হবে না৷ সরকার জনগণের কাছে ছুটে আসবে৷ জনগণের সাথে সরাসরি কথা বলে তাদের সমস্যাগুলির

বুধবার আমবাসায় জেলাস্তরে জনতার দরবারে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ ছবি- নিজস্ব৷

সমাধান করার চেষ্টা করবে৷ এটা আমাদের সরকারের দায়িত্ব৷ আজ ধলাই জেলার আমবাসায় চন্দ্রাইপাড়া দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের মাঠে ত্রিপুরা সরকার আপনার দ্বার এই কর্মসূচিতে জেলাস্তরে জনতার দরবারে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় এই কথাগুলি জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনতার দরবারে জনগণ উন্নয়নের প্রকৃত চিত্রটা সামনে আসে৷ এর উপর ভিত্তি করে আগামীদিনের উন্নয়নমূলক কর্মসূচির রূপরেখাও তৈরি করা যায়৷ তিনি বলেন, সরকার যে সব উন্নয়নমূলক কাজ রূপায়ন করছে তার সুবিধা গ্রামস্তর পর্যন্ত গিয়ে পৌছেছে কিনা তা গ্রামের মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলে জানা যায়৷ জনতার দরবার থেকে নেওয়া এই অভিজ্ঞতা থেকে সরকার উন্নয়নমূলক কাজগুলি সম্পর্কে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগরতলার জনতার দরবারে নানা কারণে গ্রামের মানুষ যেতে পারছেন না৷ সরকার শহরের পাশাপাশি গ্রামের উন্নয়নকে গুরুত্ব দিতে চাইছে৷ এই জন্যই আগরতলার বাইরে জেলাস্তরেও জনতার দরবার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত করা হচ্ছে৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনতারদরবারে জনগণের সাথে কথা বলে কোন কোনও এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ রূপায়নের ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে তা জানা যাচ্ছে৷ সেক্ষেত্রে প্রশাসনিক আধিকারিকদেরকেও সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত উন্নয়নমূলক কাজ রূপায়ণ করার জন্য নির্দেশ  দেওয়া হয়েছে৷ জেলাস্তর থেকে গ্রামস্তর পর্যন্ত আধিকারিকদের নূ্যনতম ১৫০২০ দিন ক্ষেত্র পর্যায়ে পরিদর্শন করে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া আছে৷ জনপ্রতিনিধিরাও ক্ষেত্র পর্যায়ে পরিদর্শন করে উন্নয়নমূলক কর্মসূচি রূপায়ণে সহযোগিতা করছেন৷ এতে জনগণ যেমন সুবিধা পাচ্ছেন সরকারের কাজেও গতি আসছে৷ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই উন্নয়নমূলক কর্মসূচি রূপায়ন করার ক্ষেত্রে সরকারের যে দিশা রয়েছে তাতে আগামী তিন বছরের মধ্যেই ত্রিপুরাকে একটি মডেল রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে৷

উল্লেখ্য, এদিন ধলাই জেলা সদর আমবাসায় জেলাস্তরের জনতার দরবারে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জনগণ তাদের  ব্যক্তিগত সমস্যা ও সামাজিক নানা সমস্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যা সমাধান করার জন্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন৷ চিকিৎসা, শিক্ষা, জমি সংক্রান্ত বিষয় সহ দৈনন্দিন নানা সমস্যা নিয়ে জেলার জনগণ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাদের সমস্যাগুলি তুলে ধরেন৷

মুখ্যমন্ত্রীও তৎক্ষানাৎ জনগণের সমস্যা সমাধানে সিদ্ধান্ত নেন এবং সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের দ্রুত কার্যকরি ভূমিকা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন৷ বিশেষ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা করারও ব্যবস্থা করা হয়৷ ধলাই জেলার নানা প্রান্ত থেকে আসা মানুষ মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাচে তাদের সমস্যার কথা জানিয়ে এবং তাৎক্ষণিক সমাধান পেয়ে আনন্দিত ও আপ্লুত৷ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর, শৌচালয়, উজ্জ্বলা যোজনায় গ্যাস সংযোগ, বার্ধক্যভাতা ইতাদি বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে জনগণ জনতার দরবারে এসেছিলেন৷ তারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাসও পেয়েছেন৷ এদিন জনতার দরবারে স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে সচেতনতামূলক প্রচার ও চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য এক স্বাস্থ্য শিবির অনুষ্ঠিত হয়৷ শিবিরে ১৫১ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তাদের প্রয়োজনীয় ঔষধ দেওয়া হয়েছে৷ শিবিরে ১৫ জন জ্বরের রোগীর রক্ত পরীক্ষ করা হয়৷ ১ জনের রক্তে ম্যালেরিয়ার জীবাণু পাওয়া গেছে৷ তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে৷ জেলা প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের উদ্যোগে দিব্যাঙ্গন সহায়তা শিবিরও অনুষ্ঠিত হয়৷ শিবিরে দিব্যাঙ্গনদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং ৩ জনকে দিব্যাঙ্গন সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী বিল্পব কুমার দেব জেলাস্তরের এই জনতার দরবারে গঙ্গানগরের দিব্যাঙ্গন কম্পিরুং রিয়াংকে চলনসামগ্রী ট্রাইসাইকেল তুলে দেন৷ এছাড়াও অন্যান্যদের চলনসামগ্রী স্টিক ও ৫ জনকে শ্রবণযন্ত্র দেওয়া হয়েছে৷

ধলাই জেলাস্তরের এি জনতার দরবারে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব, বিধায়ক পরিমল দেববর্মা, বিধায়ক দিবাচন্দ্র রাঙ্খল, বিধায়ক আশিস দাস, বিধায়ক ধনঞ্জয় ত্রিপুরা, বিধায়ক শম্ভূলাল চাকমা, মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান সচিব কুমার অলক, অতিরিক্ত সচিব ড মিলিন্দ রামটেকে, রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত মহানির্দেশক জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, মুখ্যমন্ত্রীর ও এস ডি দিল্পী রায় ও ধলাই জেলার জেলাস্তরের অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং জেলার বিভিন্ন মহকুমা ও ব্লকস্তরের আধিকারিগণও উপস্থিত ছিলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *