BRAKING NEWS

দীর্ঘ কুড়ি বছর পর অবশেষে শুরু হল রিয়াং শরণার্থী প্রত্যাবর্তন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ সেপ্ঢেম্বর৷৷ দীর্ঘ ২০ বছর৷ অবশেষে কাঞ্চনপুরে রিয়াং শরণার্থীদের স্বভূমে প্রত্যাবর্তন শুরু হল৷ বুধবার রিয়াং

কাঞ্চনপুরে অস্থায়ী শিবির থেকে মিজোরামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিচ্ছেন রিয়াং শরণার্থীরা৷

শরণার্থীদের মধ্যে ২৭ পরিবারের ১৩৭ জন মিজোরাম ফিরে গিয়েছেন৷ তাঁরা মিজোরামের লুংলেই জেলার বাসিন্দা৷ তাঁদের স্বভূমে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছে ত্রিপুরা পুলিশ৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উপদেষ্টা মহেশ কুমার সিংলার কথায়, রিয়াং শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের সূচনা হয়েছে৷ শীঘ্রই আরো একধাপে কাঞ্চনপুরে আশ্রিত রিয়াং শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হবে৷

এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার রিয়াং শরণার্থীদের স্বভূমে ফিরে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, প্রতিবারই কোন না কোন কারণে তা ভেস্তে গিয়েছে৷ রিয়াং শরণার্থীরা তাঁদের দাবিদাওয়া পূরণ না হলে মিজোরামে ফিরে যাবেন, তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে৷ আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা, উন্নত জীবনশৈলী, শিক্ষাদীক্ষা ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে তাদের জন্য৷

১৯৯৭ সাল থেকে মিজোরাম থেকে রিয়াং শরণার্থীরা এরাজ্যে আশ্রয় নিতে শুরু করেন৷ রাজ্যের বিভিন্ন অস্থায়ী ক্যাম্পে মোট ৫৪০৭ রিয়াং পরিবারের ৩২ হাহজার ৮৭৬ জন আশ্রিত রয়েছেন৷ তাদের প্রত্যেককেই মিজোরামে ফেরত পাঠানোর জন্য দীর্ঘদিন চেষ্টা চলছিল৷ কিন্তু, শরণার্থী ক্যাম্পে বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে রিয়াং নেতাদের জোরালো অবস্থান প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়াকে প্রতিবারই ভেস্তে দিয়েছে৷ সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট রিয়াং শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে এবং তাঁদের মিজোরামে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেয়৷ এরই প্রেক্ষিতে রিয়াং শরণার্থীদের সংগঠনের সাথে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের উপস্থিতিতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালথানওয়ালার মধ্যে প্রত্যাবর্তন নিয়ে গত ৩ জুলাই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ তাতে, স্থির হয় ৩০ সেপ্ঢেম্বরের মধ্যে প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে৷

এই প্রত্যাবর্তনের চুক্তির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার রিয়াং শরণার্থীদের আর্থিক অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য সহায়তার আশ্বাস দেয়৷

কিন্তু, চুক্তি হওয়া সত্বেও রিয়াং শরণার্থীদের একাংশ মিজোরামে ফিরে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন এবং প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া যাতে ভেস্তে যায় যে চেষ্টা করছিলেন৷ কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকারও এবার রিয়াং শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনে কড়া অবস্থান নেয়৷ মিজোরামে ফিরে না গেলে তাদের রেশন সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয় কেন্দ্র৷ তাতেই তাদের অবস্থান বদলায়৷ অবশেষে প্রথম ধাপে কাঞ্চনপুরে রিয়াং শরণার্থী শিবির থেকে ২৭ পরিবারের ১৩৭ জন মিজোরামে ফিরে গেছেন৷ কাঞ্চনপুরের হেজাছড়া ক্যাম্পে আশ্রিত শরণার্থীরা এদিন ফিরে গেছেন৷ ত্রিপুরা সীমান্ত পর্যন্ত তাদের রাজ্য পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে গেছে এবং ত্রিপুরা সীমান্ত পার হতেই মিজোরাম পুলিশের হাতে তাদের তুলে দেওয়া হয়েছে৷

এদিন প্রত্যাবর্তনের সময় শরণার্থীদের জনপ্রতি ৪০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে কাঞ্চনপুর মহকুমা প্রশাসনের তরফে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *