/কথার নাম লতা

কথার নাম লতা

সুবোধ ঘোষ

ঃ এমুনই হয়রে ভাইটি, এমুনই হয়৷

ঃ কিতা এমুনই হয়রে?

ঃ কিতা আবার? ইতিহাস থেইক্যা শিক্ষা না নিলে এমুনই হয়৷

ঃ আরে বাবা, কিতা অয় কইবিতো?

ঃ কওনের আর কিতা আছেরে? লোক খুইজ্যা পাইতাছে না সিপিএম৷

ঃ সিপিএম অহনতো আর ক্ষমতায় নাইরে৷ লোক নিয়া কিতা করবো?

ঃ তোর মাথায় কিছুই নাই দেখতাছি৷ এই মাসে রাজ্যে উপনির্বাচন না৷ সিপিএম প্রার্থী দিবার পারতেছে না৷

ঃ কিতা কইতাছস তুই? সিপিএমে অহন এমুন দশা অইয়া গেছে৷

ঃ তয় আরা কইতাছি কিতা? হগল আসনের লেইগ্যা প্রার্থী খুইজ্যা পাইতাছে না হো৷

ঃ আজ আমিরতো, কাল ফকির- এমনই অবস্থা অইছে বুঝি সিপিএমের?

ঃ অক্করে ছেড়াবেড়া অবস্থা অইয়া গেছেরে৷

দুই বন্ধুর আলাপ যে উপনির্বাচন ঘিরে তা না বোঝার কথা নয়৷ সুদীর্ঘ পঁচিশ পছর ক্ষমতায় থাকা বামফ্রন্ট তথা সিপিএম যেন তাসের ঘরের মত উড়ে গেল৷ আর সদ্য ক্ষমতায় আসা বিজেপি জোট রাজ্য জুড়ে ছড়ি ঘোরাচ্ছে৷ প্রতিটি শূণ্য আসনে তারা একাধিক প্রার্থী পেয়েছে৷ সেখান থেকে বেছে বেছে প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে৷ অন্যদিকে, সিপিএম যেন কাঙালে পরিণত হল৷ সব আসনে প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না৷ তার মানে পঁচিশ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সিপিএমের পায়ের তলা থেকে যেন মাটি সরে গেল৷ রাজনীতিতে হার জিত আছে৷ তা বলে পার্টির এমন হাল হবে কেন? তবে কি পার্টি চলনে বলনে কোথাও গলদ ছিল? পার্টির নেতাদের আচরণে কি অহং ভাব ছিল? স্বজন পোষণ, দুর্নীতি জাতীয় শব্দগুলি কি পার্টির অলংকার ছিল? ফলশ্রুতিতে আমজনতার কাছে তা গ্রহণযোগ্য ছিল না?

নিশ্চয় কিছু না কিছু গলদ ছিল৷ আর ছিল বলেই তো পার্টির ধপাস করে পতন৷ এমন পতন থেকে উঠে আসা সময় সাপেক্ষ৷ তাই চট জলদি প্রার্থী খুঁজে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ কেননা, বর্তমানে শাসক দলের দাপটের কাছে সিপিএম যেন বড্ড অসহায়৷ ক্ষমতাচ্যুত হবার পর তার বৃহৎ অংশের ক্যাডাররা কপালে তিলক ধারণ করল৷ তারা সিপিএমের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করল৷ ফলশ্রুতিতে দশচক্রে ভগবান ভূতের মত অবস্থা হল সিপিএমের৷ এখন যেন তারা না ঘরকা না ঘাটকা৷ তাই উপনির্বাচনে প্রার্থী জোগাড় করতেও তাদের কালঘাম ছুটছে৷