BRAKING NEWS

উপনির্বাচন ঃ অভিনব রণকৌশল

সায়ন্তক চৌধুরী

‘আমরা তোমাদের ভাতে মারবো, পানিতে মারবো৷ তোমরা ব্যারাকে বসে থাকো৷ আমরা তোমাদেরকে কিছু করবো না৷ কিন্তু, সাবধান’৷ মনে পড়ে, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের এই অংশটুকু৷ ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণে পাক সেনাদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু এমনই মন্তব্য করেছিলেন৷

আজ বাংলাদেশ স্বাধীন হবার ৪৭ বছর পর বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণের উল্লেখিত অংশটুকু মনে পড়ে গেল৷ কার্যকারণ ছাড়া কোনও ঘটনা ঘটে না৷ তাই এমন মনে পড়ার পেছনেও একটা কারণ নিশ্চয় রয়েছে৷ আর সেই কারণটি হল রাজ্যের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের উপনির্বাচন৷ রাজ্যের নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছেন৷ মনোনয়ন পত্র নেয়া এবং জমা দেবার দিনও নির্ধারণ হয়েছে৷ এ উপনির্বাচন ঘিরে রাজ্যস্তরেও একটা নির্বাচনি হাওয়া অল্প বিস্তর বইছে৷ নির্বাচনে শাসক দল যে অংশ নেবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ তবে অপেক্ষার শেষ থাকে না বিরোধী দলগুলির ক্ষেত্রে৷ রাজ্যের বিরোধী দলগুলির মধ্যে প্রধান হল সিপিএম এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কংগ্রেস৷ ইতিমধ্যে এ দুই দল প্রার্থী দেবার কথা বলেছে৷ তবে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের উপনির্বাচনে তাদের তাদের পক্ষে সব আসনে প্রার্থী দেয়া সম্ভব হবে কী না তাও ভাববার বিষয়৷ তবে সব আসনে না হলেও তারা যে নির্বাচনে লড়তে চাইছেন তা কিন্তু অস্বীকার করা যাবে না৷ কিন্তু, লড়ার পরিবেশ কতটুকু রয়েছে? বিষয়টি প্রশ্ণের মুখে পড়লেও পরিস্থিতি কিন্তু বিরূপ বলে মনে হচ্ছে৷ আপাত দৃষ্টিতে সবই শান্ত পরিবেশ৷ কিন্তু, ভেতরে ভেতরে তৈরী হয়েছে অশান্ত পরিবেশ৷

এরই প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের উপরের অংশটুকু মনে পড়ে গেল৷ সেই অংশটুকু একটু রদবদল করে বলা যেতে পারে যে, তোমাদেরকে হাতে মারবো না৷ কৌশলে মারবো৷ তোমরা আমাদের ভাই৷ ঘরে বসে থাকো৷ ব্লকে আসার চেষ্টা করো না৷ এলে ভালে হবে না৷ মান সম্মান নিয়ে থাকো৷ কেউ তোমাদেরকে কিছু করবে না৷ সত্য বটে রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকের চিত্রটা এমনই৷ বিরোধী দলের কর্মীরা ভয়ে ব্লকের ধারে কাছে ঘেঁষতে চাইছে না৷ মনোনয়ন পত্র জমা দেয়াতো দূরের কথা৷ ব্লক অফিসের ত্রি সীমানায় তাদেরকে দেখলে এক শ্রেণীর যুবক ক্ষেপে উঠছে৷ অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছে৷ তাদের আপরাধ, কেন তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চাইছে৷

বলা যেতে পারে অধিকাংশ ব্লক অফিসের সামনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একদল যুবক পালা করে বসে থাকে৷ গল্প গুজব করে৷ আর নজর থাকে বিরোধী দলের কাউকে আশে পাশের দেখা যাচ্ছে কী না সেই দিকে৷ দেখলে তারা ঘেরাওয়ের মুখে পড়ে যাচ্ছে৷ নানা প্রশ্ণবানে জর্জরিত হচ্ছে৷ মানে মানে কেটে পড়ার জন্য প্রচ্ছন্ন ধমক দিচ্ছে৷ ফলশ্রুতিতে পেশী শক্তির কাছে তারা হেরে যাচ্ছে৷ পুরো বিষয়টি কিন্তু অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ঘটছে৷ তাই থানা পুলিশের ঝামেলা নেই৷ অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ভাবে উচ্ছৃঙ্খল কর্মকান্ডের ঘটনা ঘটছে৷ কিন্তু, উচ্ছৃঙ্খলতার চিহ্ণ নেই৷ আছে কৌশল অবলম্বন৷ এমন কৌশলে সাপও মরলো কিন্তু লাঠি ভাঙ্গলো না৷ কি চমৎকার নির্বাচনি রণ কৌশল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *