BRAKING NEWS

সামাজিক ভাতা ও মানবতা

সায়ন্তক চৌধুরী
বিজেপি জোট রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর এক শ্রেণীর মানুষের মনে বিশেষ এক কারণে সন্দেহ বেঁধেছে বাসা৷ তাদের সেই সন্দেহ যে অমূলক নয় তাও সত্য৷ আবার এরই প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার যে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে তাও অপ্রাসঙ্গিক নয়৷ বরং সিদ্ধান্তের পেছেনে রয়েছে অকাট্য যুক্তি৷ এ যুক্তি খন্ডন করা মানে অন্যায়কে সমর্থন করা৷ ফলশ্রুতিতে সেই শ্রেণির মানুষরা শংকায় রয়েছে৷ এ শংকাটা আরও উদ্বেগের কারণ হচ্ছে এই ভেবে যে, সরকার নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকলে তারা যেমন আর্থিক সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে তেমনই বাম আমলে পাওয়া অর্থ ফেরত দিতে হবে৷ এবং তাই যদি হয় তাহলে অবৈধ বেনিফিসিয়ারিরা পড়বে মহা বিপাকে৷ কেননা, বিপুল অংশের অবৈধ বেনিফিসিয়ারিরা অর্থ ফেরত দিতে পারবে না৷ কেননা, তারা গরীব বটে৷ তবে যে ভাবে বেনিফিসিয়ারি সেজেছে তা অবৈধ৷
এ বেনিফিসিয়ারিরা হল সামাজিক ভাতার অন্তর্ভুক্ত৷ এ ভাতা প্রদানে তৎকালীন বাম সরকার শুধু রাজনীতির খেলা খেলেছে৷ নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ক স্ফীত করার লক্ষ্যে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার গরীবদের নিয়ে যে ধরনের ছিনিমিনি খেলা খেলছে তা এখন তাদের গলার কাঁটা হয়ে ফুটছে৷ সপ্তমে বামফ্রন্টের দাপট শেষ হবার পর সামাজিক ভাতা প্রাপকদের একটা অংশের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা এবং উদ্বেগ৷ কেননা, রাজ্যের বিজেপি জোট সরকার স্পষ্ট ঘোষণা করেছে যে, কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়াও রাজ্য সরকার যেসব সামাজিক ভাতা চালু করেছে সেগুলি বহাল থাকবে৷ তবে সত্যিকারে যারা ভাতা পাবার যোগ্য তারা শুধু ভাতা পাবে৷ অন্যদেরকে কালো তালিকার আওতায় আনা হবে৷ এবং তারা যে বিপুল পরিমাণ অর্থরাশি রাজ্য সরকার থেকে হাতিয়ে নিয়েছে তা ফেরত দিতে হবে৷ মুশকিলটা হল এইখানে৷ কেননা, অনেকে পরিচারিকা ভাতার সুযোগ নিয়েছে৷ যে কোনওদিন মানুষের বাড়িতে পরিচারিকা ছিল না সেও এ ভাতা পেয়েছে৷ এ তালিকায় বিত্তবান থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তের বৌ এবং মেয়েরাও রয়েছে৷ তারা পরিচারিকা না হয়েও বামফ্রন্টের সৌজন্যে উপরি পাওনা হিসাবে শত শত টাকা পরিচারিকা ভাতা পেত৷ আবার অনেকে প্রতিবন্ধী না হয়ে এক হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়েছে৷
এবার তাদরে এ ভাতায় টান পড়ছে৷ এর জন্য কি তারা দায়ী? বামফ্রন্ট সরকার তাদেরকে এসব ভাতা দিয়েছে বলে তারা পেয়েছে৷ এ ব্যাপারে বাম সরকারকে কেন দায়ী করা হবে না? তৎকালীন রাজ্যের সমাজ কল্যাণ দপ্তর এবং মন্ত্রী কি করে তাদেরকে বৈধতার সার্টিফিকেট দিয়েছিল? যারা অন্যায় ভাবে এ সামাজিক ভাতা নিয়েছে তারা জোর করে এ ভাতা আদায় করেনি৷ আর রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জোর করার প্রশ্ণ উঠে না৷ তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার বুঝে শুনে ঠান্ডা মাথায় রাজনীতির স্বার্থে এমন অন্যায় কাজ করে বর্তমানে তাদেরকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে৷ নতুন সরকার তাদেরকে চিহ্ণিত করেছে৷ সেই সুবাদে তারা ভাতা পাবে না৷ অন্যায় ভাবে কেউ সরকারী কোষাগার থেকে অর্থ তুলে নিক তা কোন অবস্থায় কারো কাম্য নয়৷ কিন্তু তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার বিষয়টি ফের ভেবে দেখার অবকাশ রয়েছে বলে মনে হয়৷ কেননা, তৎকালীন বাম সরকার তাদেরকে এ ভাতা না দিলে তাদের করার কিছুই ছিল না৷ তা বাম সরকারের কৃতকর্মের জন্য তারা কেন বলির পাঁঠা হবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *