BRAKING NEWS

কথার নাম লতা

সুবোধ ঘোষ
বদল আর বদলি – এ দুয়ের মাঝে কিন্তু ব্যবধান দুস্তর৷ রাজনীতিতে এ বদল আর বদলির খেলা চলে৷ এ যেন মাদক নেশার চেয়ে মারাত্মক৷ রাজনীতিতে যেমন রয়েছে বিষের ছোবল তেমনই বদলি নীতিতেও রয়েছে মারাত্মক হলাহল৷ তাই বদলের রাজনীতির সাথে বদলিকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়৷ কিন্তু, এ বদলি পরমন্ত হয়ে উঠে বদলকে ঘিরে৷ রাজ্যে পরিবর্তনের হাওয়া মানে রাজনৈতিক মতে অভিঘাতের শেষ পরিণতি দেখার চূড়ান্ত সুযোগ৷
ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরায়ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের হাওয়ায় ক্ষমতার বদল ঘটলো৷ তাই বলে কি বদলির ভয় আর রইলো না? এমনটি বলার পরিবেশ এখনো আসেনি৷ বামফ্রন্ট আমলে যে বদলির ভয়ে সরকারী কর্মচারীরা তটস্থ ছিল তা এক ফুৎকারে উবে গেছে তা কিন্তু বলা যাবে না৷ জোঁকের মুখে লবন পড়লে জোঁক যেমন কুকড়ে যায় তেমনই বামফ্রন্ট আমলে সরকারী কর্মীদের বশে রাখার জন্য বদলির ভয় দেখাত৷ ফলে কর্মচারীরা জোঁকের মত কঁুকড়ে ছিল৷ সেই সময় ছিল হগব নেতাদের মহা দাপট৷ একেক জন নেতা যেন একেকটা মিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ছিল৷ হগব নেতা মানে মেলারমাঠের অতি ঘনিষ্ঠ৷ তাদের অঙ্গুলি হেলনে একজন সরকারী কর্মচারীর জীবনে অনেক অঘটন ঘটারও নজির রয়েছে৷ তখন বদলি ভয়ে আতংকিত ছিল তারা৷
কিন্তু, সেই আতংক যেন পিছু ছাড়ছে না৷ আবার হগব কায়দায় স্বজন প্রীতিতে যেন বহাল থাকলো৷ তাই বদল ঘিরে বদলির কোনও তারতম্য হল না৷ ক্ষমতা বদল হল৷ প্রক্রিয়া সব ঠিকই থাকলো৷ বিজেপি জোট সরকার গঠনের চারমাসের মধ্যে এক বিজেপির অঙ্গ সংগঠনের নেতা তার স্ত্রীকে মফস্বল থেকে বদলি করে রাজধানীতে নিয়ে এলো৷ বাম আমলে এ নেতা বড্ড বেকায়দায় ছিল৷ তাকে শায়েস্তা করার জন্য হগব নেতারা স্ত্রীকে আগরতলা থেকে মফস্বলে বদলি করে দেয়৷ বিজেপির ওই নেতাকে তা মানতে হয়েছিল৷ এ ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না৷ ক্ষমতা বদলের পর সেই নেতার হাতে সুযোগ এসে গেল৷ ভারত মা কি জয় বলে স্ত্রীকে তড়িঘড়ি বদলি করে নিয়ে এলো রাজধাীতে৷ চুপসে গেল হগব নেতাদের হাসি৷ শুধু তাই নয়৷ রাম রাজত্বে কিছু হগব মার্কা শিক্ষকও বদলির কোপে পড়লেন৷ কেননা, তাদের পিঠে সিপিএম সীলটা বেশ জ্বল জ্বল করছে যে৷ সুতরাং বদল হলেও বদলির খাঁড়া ঠিকই থাকলো৷ তাই বাম আর রাম রাজত্বে তেমন ফাঁরাক আজও খঁুজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ তবে বদলিটা যেন ধীরে ধীরে স্বমহিমায় আসার অপেক্ষা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *