কথার নাম লতা

সুবোধ ঘোষ ঃ ভাইটি, এইডা কেমুন কথা কওতো? রেল ইস্টিশনের প্ল্যাটফরমে প্রতিদিন কতবার আইছি আর গেছিরে৷ এহন আর তা অইবো না৷
ঃ ক্যান অইবো নারে?
ঃ কেমনে অইবো কও? এহন আর বিনা টিকিটে প্ল্যাটফরমে ঢুকন যাইবো না৷ বুধবার থেইক্যা শুরু অইয়া গেছে যা কড়াকাড়ি৷ টিকিট ছাড়া ঢুকলে ফাইন করতাছে৷
ঃ বেশতো বালাই করতাছে৷ টিকিট ছাড়া ক্যান ঢুকবি? অন্য রাজ্যগুলিতে তো এমনই সিস্টেম রইছেরে৷ আমাগো রাজ্যে তা অনেক লেইটে চালু করছে৷
ঃ বাহ্, কেমন বিজ্ঞের মত কথা কইলি তুই৷ আমরা কি টিকিট ছাড়া যামু কইছি?
ঃ তাইলে এমন প্যাঁচাল করতাছস কেরে?
ঃ সাধে কি আর এমুন বকতাছি? প্ল্যাটফরমে যে টিকিট কাটুম হেই কাউন্টার কই? ইস্টিশনে এমুন কোনও কাউন্টার আছেনি? থাকলে তো টিকিট কাইট্যাই ঢুকতাম৷ টিকিটের কোনও ব্যবস্থা নেই৷ আগাম কোন সতর্কতা নেই৷ হুট কইর্যা বুধবার ধরপাকড় শুরু কইরা দিল রেলের বাবুরা৷
ঃ কথাডা অবশ্য ঠিকই কইছস৷ রেলবাবুরা আগাম খবর দিলে বালা অইতো৷
এ দুই বন্ধুর কথার মাঝে ধরা পড়েছে রেল স্টেশনে পরিকাঠামোর অভাবের চিত্রটা৷ এ পরিকাঠামোর অভাব আগরতলা রেল স্টেশনে যেমন রয়েছে তেমনই রয়েছে রাজ্যের অন্যান্য স্টেশনগুলিতে৷ আগরতলা রেল স্টেশনে পরিকাঠামোর যে বড্ড অভাব তা বলার অবকাশ নেই৷ রেল পথে গন্তব্যে যাবার টিকিট কাটার ক্ষেত্রেও নেই পর্যাপ্ত কাউন্টার৷ ফলশ্রুতিতে খোলা কাউন্টারের সামনে টিকিটের জন্য লম্বা লাইন পড়ে৷ রেল ছাড়ার আধঘন্টা আগে কাউন্টার খোলা হয়৷ এ অল্প সময়ের মধ্যে সব যাত্রীর পক্ষে টিকিট কাটা সম্ভব হয় না৷ ফলে অনেকে টিকিট ছাড়া ভ্রমণ করতে বাধ্য হন৷ যেখানে যাত্রীদের টিকিট দেবার মতো পর্যাপ্ত কাউন্টার নেই সেখানে প্ল্যাটফরমের টিকিট দেবার জন্য কাউন্টার থাকার বিষয়টি অলীক স্বপ্ণ নয় কি? ফলে মানুষ বিনা টিকিটে প্ল্যাটফরমে ঢুকতে বাধ্য হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে মানুষদের দোষ কোথায়? বরং রেল কর্তৃপক্ষের অবহেলা এর জন্য দায়ী৷ এছাড়া যাত্রীদের টিকিট দেবার ক্ষেত্রেও রয়েছে পর্যাপ্ত কাউন্টার স্বল্পতা৷
রাজ্যবাসী কিন্তু টিকিট কেটে ভ্রমণ করতে চায়, বৈধভাবে প্ল্যাটফরমে প্রবেশ করতে কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জন্য ভোগান্তির মুখে পড়ছে যাত্রী সাধারণ৷ এছাড়াও এ বিষয়ে আগাম সতর্ক করা প্রয়োজন ছিল৷ তা করেনি রেল কর্তৃপক্ষ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *