উদ্ধার করা গাঁজা কোথায় যাচ্ছে, কি হালে আছে

সায়ন্তক চৌধুরী
রাজ্যজুড়ে গাঁজা নিয়ে চলছে গাঁজাখোরী কাজ কারবার৷ বিজেপি জোট সরকার ক্ষমতায় বসার পর শুরু হল নেশা বিরোধী অভিযান৷ এ অভিযানের আওতায় পড়ছে অবৈধ নেশা সামগ্রী৷ এদিক থেকে রাজ্যের নতুন সরকার ধন্যবাদ পাবার যোগ্য বটে৷ তবে পাশাপাশি কিছু প্রশ্ণের মুখেও পড়ছে৷ কেননা, রাজ্যবাসী একটা হিসাব কিছুতেই মেলাতে পারছে না৷ কোথায় যেন একটা শুভংকরের ফাঁকি রয়ে গেছে বলে তাদের মনে হচ্ছে৷ কেননা, রাজ্যের নতুন সরকার যেভাবে দুরন্ত গতিতে গাঁজা বিরোধী অভিযান এমন জোরদার ছিল না৷ ছিল আই ওয়াশ করার মত কিছু অভিযান৷ এটা ছিল লোক দেখানোর নামান্তর৷ আর চোখের আড়ালে রাজ্য জুড়ে ছিল গাঁজা চাষের বিপুল সমাহার৷ মাঝে মাঝে সেই সময় স্থানীয় পুলিশ কিছু গাঁজা খেত ধবংস করলেও এনিয়ে অভিযোগ ছিল৷ অনেকের মতে, যেসব

আগরতলা রেল স্টেশনে উদ্ধারকৃত গাঁজা সহ অন্যান্য নেশা সামগ্রী৷ ছবি নিজস্ব৷

গাঁজা গাছের বয়স হয় অর্থাৎ যেসব গাছ গাঁজা উৎপাদনে অক্ষম পুলিশ নাকি সেইসব গাঁজা ক্ষেত ধবংস করত৷ এ ব্যাপারে গাঁজা চাষীদের সাথে নাকি পুলিশ বাবুদের সমঝোতা ছিল৷ মাঝখানে পুলিশের দৌলতে ওই গাঁজা ক্ষেত সাফাই হয়ে গেল৷ এবং গাঁজা চাষিরা ফের জমিতে নতুন করে গাঁজা চাষ করতো৷ বলা যেতে পারে চোর পুলিশ খেলার মতো রাজ্যজুড়ে চলেছিল গাঁজা পুলিশ খেলা৷ ফলশ্রুতিতে বাম আমলে রাজ্যজুড়ে গাঁজা চাষের ব্যপকতা বেড়েছিল৷ এ যেন ছিল ওপেন সিক্রেট গঞ্জিকা চাষ৷ ধীরে ধীরে রাজ্যটা গাঁজার রাজ্যে পরিণত হল৷ অনেকে ধানি জমিতেও গাঁজা চাষ করতো৷ রেশন ডিলারাও রেশন দোকান ছেড়ে মেত উঠেছিল গাঁজা চাষে৷ বাম সরকার যেন অবৈধ গাঁজা চাষকে বৈধতা দিল৷ যারা গাঁজা চাষ করতো তারা সবই আবার লাল মার্গের বাসিন্দা৷
নতুন সরকার গাঁজা চাষের উপর কোপ বসালো৷ অবৈধ চাষ কোন অবস্থায় কাম্য নয়৷ হাজার কিংবা লক্ষ নয়, কোটি টাকার গাঁজা৷ সুদৃশ্য প্যাকেটে রাখা হয়েছিল এসব গাঁজা৷ আবার ঘরের মাটি খুড়েও উদ্ধার করা হচ্ছে বিশাল পরিমাণ গাঁজা৷ এ সবই সুখকর বার্তা বটে৷ এরপরও কিছু প্রশ্ণ থেকে যায়৷ তা হল রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে গাঁজা উদ্ধার হচ্ছে কিন্তু গ্রেপ্তার নেই৷ নাম কা ওয়াস্তে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হলে বিশাল অংশের গাঁজা চাষী ধরা ছোঁয়ার বাইরে৷ এব্যাপারে রাজ্যবাসী কিন্তু ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে৷ উদ্ধার হচ্ছে গাঁজা৷ গ্রেপ্তার নেই গাঁজা চাষী৷ এমন প্রশ্ণের পাশাপাশি আরও একটি প্রশ্ণ রাজ্যবাসীর মনে উকিঝুকি দিচ্ছে বটে৷ তা হল উদ্ধার করা গাঁজার কি গতি হচ্ছে? এ ব্যাপারে জনগণ কিন্তু অন্ধকারে৷ তারা বিভিন্ন সংবাদ মিডিয়ায় গাঁজা উদ্ধারের বিষয়টি জানাচ্ছে৷ কিন্তু, উদ্ধারের পর এগুলির কি হাল হচ্ছে তা জানাচ্ছে না৷ এত বিপুল পরিমাণ গাঁজা কোথায় রাখা হচ্ছে? রাখা হলে কেনইবা রাখা হচ্ছে- এ ব্যাপারেও জনগণ কিন্তু অন্ধকারে৷ তাই গাঁজা উদ্ধারে যেমন চমক রয়েছে তেমনই উদ্ধারকৃত গাঁজা কোথায় রাাখা হচ্ছে এ ব্যাপারেও লুকিয়ে আছে চমক৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *