দৈনিক সংবাদপত্রের সম্পাদক থেকে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে হরিবংশ নারায়ণ সিং

নয়াদিল্লি, ৯ আগস্ট (হি.স.) : সক্রিয় রাজনীতির ময়দান থেকে মাত্র চারবছরের মধ্যে দেশের আইনসভার উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে বসলেন হরিবংশ নারায়ণ সিং৷ নীতিশ কুমারের জনতা দল (ইউনাইটেড) থেকে প্রথমবার রাজ্যসভার সদস্য হওয়া হরিবংশ হলেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান৷ তিনি ২০১৪ সাল থেকে সাংসদ হলেও দিল্লির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ১৯৯০ সাল থেকেই৷ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং ও চন্দ্রশেখর আমলে তাঁকে অ্যাডিশনাল ইনফরমেশন অ্যাডভাইসর হিসেবে কাজ করেছিলেন৷
একজন সমাজবাদী হিসেবে তিনি তাঁর হরিবংশ নামটুকুই ব্যবহার করেন এবং পদবীর মাধ্যমে জাতপাত সূচিত হবে বলে তিনি তা ব্যবহার করেন না৷
বিহারের বালিয়ায় ১৯৫৬ সালের ৩০ জুন জন্ম হরিবংশ নারায়ণ সিংয়ের। স্কুলের পাঠ শেষ করে তিনি বেনারস যান এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ করেন এবং সাংবাদিকতার ডিপ্লোমা করেন৷ ব্যাঙ্কের উচ্চ বেতনের চাকরি ছেড়ে সমাজসেবকের মতো জীবন অতিবাহিত করেছেন। সাংবাদিকতার মাধ্যমে সমাজকে বদলে দিতে চেয়েছেন। বৈভবের মধ্যে থাকার সুযোগ পেয়েও সহজ-সরল জীবন ও অনুষঙ্গকে বেছে নিয়েছেন। দীর্ঘ কয়েক দশক সাংবাদিকতা করে সমাজ জীবনে বদল আনার চেষ্টা করেছেন হরিবংশ। ১৯৭৭ সালে কর্মজীবন শুরু ১৯৭৭ সালে ধর্মযুগ হিন্দি সাপ্তাহিক দিয়ে কাজ শুরু করেন হরিবংশ। পরে ব্যাঙ্কের পরীক্ষা দিয়ে ২ বছর হায়দরাবাদে ব্যাঙ্ককর্মী হিসাবে কাজ করেন। ১৯৮১ সালে তিনি পাটনায় ফিরে আসেন। পরে হিন্দি সাপ্তাহিক রবিবারে কাজ শুরু করেন অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর পদে। ১৯৮৯ সালে রাঁচিতে “প্রভাত খবর” হিন্দি দৈনিকে যোগ দেন তিনি। পরে এই পত্রিকার সম্পাদক হন। ১৯৯১ সালের জুন থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত তিনি হিন্দি দৈনিক “প্রভাত খবর”-র সম্পাদক পদে ছিলেন৷
তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার গড়ে ওঠার কারণ এনডিএ শরিক জেডি(ইউ)-র সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার জেরে৷ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশকুমারের সঙ্গে বন্ধুত্বের ফলে তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু হয় জেডিইউ থেকে৷ তবে তাঁর সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগও বাড়তে থাকে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব হয়ে যায় যখন নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী এবং তিনি হিন্দি দৈনিক “প্রভাত খবর” -র সম্পাদক পদে ছিলেন৷৬২ বছরের সাংবাদিক থেকে রাজনৈতিক নেতা হওয়া হরিবংশ ১৯টি বইয়ের সম্পাদনা করেছেন। ওয়ার্ল্ড এডিটর্স ফোরামের সদস্যও তিনি। বিভিন্ন বিলুপ্ত প্রায় ভাষাকে রক্ষায় তিনি অনেকদিন ধরে কাজ করছেন। এছাড়া হিন্দি ভাষার উৎকর্ষতা বাড়াতেও তাঁর অবদান ভোলার নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *