কর্মচারীদের কর্মসংসৃকতিতে নতুন দিশা তৈরী হবে ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ জুলাই ৷৷ এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আজ সচিবালয়ে আধার নির্ভর বায়োমেট্রিক এটেন্ডেস সিস্টেমের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ উদ্বোধকের ভাষণে তিনি বলেন, সচিবালয়ে এই পদ্ধতি চালু হওয়ায় কর্মচারীদের মধ্যে সময়ের কাজ সময়ের মধ্যে শেষ করার মানসিকতা তৈরী হবে৷ পাশাপাশি কাজের পারদর্শিতাও বাড়বে৷ আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী দেশের সময় নিষ্ঠা, কাজে অ্যাকাউন্টেবিলিটি আনার জন্য বিভিন্ন যোজনা চালু করেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে কোনও কাজেরই নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকা দরকার৷ আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীও ২০২২ সালের মধ্যে দেশের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ থেকে ১ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে চলে যায় কাগজ কিনতে৷ তাই দেশেই কাগজ তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় বাঁশের যোগান দিতে ব্যাম্বো মিশনের মাধ্য্যমে বাঁশ চাষের জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ যাতে কাগজ কিনতে এই ১ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে চলে না যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে খাতা কলমে এটেন্ডেন্স ব্যবস্থা চালু থাকবে ফলে রেজিস্টার, কাগজ সহ বিভিন্ন বিষয়ে অনেক টাকা ব্যয় হতো৷ কিন্তু বায়োমেট্রিক এটেন্ডেন্স সিস্টেম চালু হওয়ার ফলে ব্যয় অনেকাংশেই কমে যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন৷ কাগজের ব্যবহার যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু করার উপর গুরুত্বারোদ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক কর্মচারীর আলাদা আলাদা কাজের দায়িত্ব রয়েছে৷ সেই দায়িত্ব পারদর্শিতার সঙ্গে সম্পন্ন করার লক্ষ্যেই এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছে৷ এই পদ্ধতি চালু হওয়ায় কর্মচারীদের কর্মসংসৃকতিতে এক নতুন দিশা তৈরী হবে৷ কর্মচারীদের কাজের গতিও অনেকাংশ  বৃদ্ধি পাবে৷ ফলে আগামী ৩ বছরের মধ্যে ত্রিপুরাকে মডেল রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার যে লক্ষ্যমাত্রা আমরা নিয়েছি তা সময়ের আগেই বাস্তবরূপ দেওয়া যাবে৷ আজকের এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার ফলে প্রশাসন সহ সকলস্তরের কর্মচারীও উপকৃত হবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন৷

অনুষ্ঠানে সচিবালয় প্রশাসন (এস এ) দপ্তরের সচিব টি কে চাকমা বলেন, সচিবালয়ে সুষ্ঠু কর্মসংসৃকতি বজায় রাখার জন্য এবং জনসাধারণকে সময়ের মধ্যে সমস্ত পরিষেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আধার নির্ভর বায়োমেট্রিক এটেন্ডেন্স সিস্টেম চালু করা হয়েছে৷ এই পদ্ধতিতে সচিবালয়ের মোট ৯৯৬ জন কর্মচারী নিবন্ধিত হয়েছেন৷ সচিবালয়ে মোট ১৮ টি বায়োমেট্রিক ট্যাব লাগানো হয়েছে৷ পরে আরও ১৫টি বায়োমেট্রিক ট্যাব লাগানো হবে৷ এই সিস্টেমের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করতে গিয়ে শ্রী চাকমা বলেন, এই পদ্ধতিতে ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপের উপর ভিত্তি করে কর্মচারীদের অফিসে আগমন এবং নির্গমনের নথি রেকর্ড করা হয়ে থাকে৷ এই সিস্টেম থেকে কর্মচারীদের উপস্থিতির রিপোর্ট তৈরী করা যেতে পারে৷ কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ছুটির অনুরোধ এবং অফিসিয়াল সফরের অনুরোধ এই সিস্টেমে নথিভুক্ত করা যাবে৷ যদি কোনও কর্মচারী ট্রান্সফার হন তাহলে সেই কর্মচারীর এটেন্ডেন্স সিস্টেমও ঐ দপ্তরে ট্রান্সফার করা যাবে এবং কোনও কর্মচারীর সিফটিং ডিউটি থাকলে উনার জন্যও এই সিস্টেমে ব্যবস্থা করা যাবে৷

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও রাজস্ব দপ্তরের মন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা, মুখ্যসচিব সঞ্জীব রঞ্জন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান সচিব কুমার অলক, পরিকল্পনা (প্ল্যানিং) দপ্তরের প্রধান সচিব ডাঃ রাকেশ সরোয়াল, মুখ্যমন্ত্রীর অতিরিক্ত সচিব ড মিলিন্দ রামটেকে, আইন দপ্তরের সচিব দাতামোহন জমাতিয়া, যুব ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব সমরজিৎ ভৌমিক সহ সচিবালয়ের অন্যান্য আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *