BRAKING NEWS

সিন্ডিকেট রাজ ছিল এবং …

সায়ন্তক চৌধুরী

সরকার পরিবর্তন হলেও রাজ্য জুড়ে সিন্ডিকেটরাজ কিন্তু ঠিকই রয়ে গেছে৷ বর্তমানে দেশজুড়ে সিন্ডিকেটের আধিক্য চোখে পড়ার মত৷ রাজনীতিতেও এমন সিন্ডিকেট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে৷ রাজ্যজুড়ে বাম আমলে এ সিন্ডিকেট রাজ যেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়৷ বিভিন্ন সরকারী দপ্তর এবং দলীয় সংগঠনে সিন্ডিকিটে রাজ ওপেন সিক্রেট হিসাবে স্থান করে নেয়৷ তবে পেশা ভিত্তিক সিন্ডিকেটের হেরফের ঘটে৷ তবে সেই সময়ে সিন্ডিকেটের বাইরে কেউ এক পা দিতে পারতো না৷ তৎকালীন বাম সরকারও যেন সিন্ডিকেটের কাছে নতজানু ছিল৷ যানবাহন সিন্ডিকেট, ঠিকাদারি সিন্ডিকেট থেকে শুরু করে বালি মাফিয়া সিন্ডিকেটের বেশ রমরমা ছিল৷ বাম আমলে যাবতীয় সিন্ডিকেটের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল যানবাহন শ্রমিকদের সিন্ডিকেট৷ মোটামুটি সেই সময় সিন্ডিকেটের বাইরে কোনও কাজ ছিল না৷ ফলে সেই সময়ে সিন্ডিকেট একটা আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷

রাজ্যের ক্ষমতায় বর্তমানে বিজেপি জোট সরকার৷ নতুন সরকার রাজ্যজুড়ে সিন্ডিকেট প্রথা উচ্ছেদে বদ্ধ পরিকর৷ সরকার বিভিন্ন ঠিকাদারী কাজেও সিন্ডিকেট প্রথা বিলোপের জন্য নতুন পদ্ধতি চালু করে৷ বিজেপি জোট সরকার চাইছে রাজ্যে থেকে উচ্ছেদ হোক সিন্ডিকেট প্রথা৷ কিন্তু, চাইলে কি সবকিছু পাওয়া যায়? এমন প্রশ্ণ কিন্তু থেকে যাচ্ছে৷ ধর্মীয় উৎসব ঘিরে মেলার আয়োজনে সিন্ডিকেটের ঝলক কিন্তু দেখা যায়৷ কেননা, মেলা মানে বিভিন্ন পসরার দোকান৷ ধর্মীয় উৎসবের বাড়তি পাওনা হল এ মেলা৷ মেলার রকমারী দোকানের ভিড় থাকে৷ মেলা কমিটি দোকানের স্টল ভাড়া দেয়৷ ভাড়া হাত হিসাবে ধার্য হয়৷ এমন স্টল ভাড়া ঘিরেও চালু সিন্ডিকেটের দাপট৷ রাজ্যের যে কোনও মেলা ঘিরে বেশ কয়েকটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠে৷ তারা বেশ কিছু স্টল মেলা কমিটির নির্ধারিত মূল্যে নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়৷ এ ক্ষেত্রে প্রকৃত দোকানদাররা বঞ্চিত হয়৷ কিন্তু, তাই বলে তারা হতোদ্যাম হয় না৷ কেননা, তারা পোড়খাওয়া ক্ষুদে ব্যবসায়ী৷ বাম আমল থেকে তারা বিভিন্ন মেলায় ব্যবসা করছে৷ তারা জানে পাছে স্টল না পেলেও বামের সেই বাঁকা পথ আজও বহাল আছে৷ তাই ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা মেলায় স্টল পাবে কিনা তা নিয়ে বিশেষ চিন্তায় থাকে না৷ মেলা চত্বরে এসে তারা সেই চক্রের সন্ধানে থাকে৷ এবং তারা দেখে যে বাম আমলের সেই চক্ররা জোট আমলেও চুটিয়ে সিন্ডিকেট ব্যবসা করছে৷ শুধু রং পাল্টিয়েছে৷ পাল্টিয়েছে পোশাক আশাক৷ চালচলন আর কথার ঢং সেই বাম আমলের রয়ে গেছে৷ ফলে রাজ্য থেকে আজও সিন্ডিকেট প্রথা বন্ধ হয়নি৷ সিন্ডিকেটের রমরমা না হলেও গুটি গুটি পায়ে সিন্ডিকেটের ধারক বাহকরা স্বমূর্তি ধারণ করার পথে এগিয়ে যাচ্ছে৷ তাই মেলা ঘিরে এ সিন্ডিকেট ব্যবসা জমে উঠেছে৷ ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের ভাল টাকা গচ্ছা যাচ্ছে৷ প্রশ্ণ হল বিভিন্ন স্থানের মেলা কমিটি কি বিষয়টি জানে না৷ তবে কি জেনে শুনে তারা এই অবৈধ সিন্ডিকেট ব্যবসাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে? অবস্থা দৃষ্টে কিন্তু তাই মনে হচ্ছে৷ আসলে সিন্ডিকেটরাজের উপর কতটুকু বাজ পড়বে তাই এখন দেখার অপেক্ষা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *