BRAKING NEWS

শহিদ সমাবেশের মঞ্চে নেতারা সরব বিজেপির বিরুদ্ধে

কলকাতা, ২১ জুলাই (হি. স.) : শনিবার সমাবেশে উপস্থিত জনতাকে দিয়ে ২১-এর মঞ্চ থেকে আগামী দিনে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা ফের উসকে দিলেন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দোপাধ্যায়। জানালেন দেশের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও তাই চান।
এ দিন সরাসরি বিমানবন্দর থেকেই ২১-এর সভামঞ্চে এসে হাজির হন সুদীপ বন্দোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করতে করতেই তিনি আসেন দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর প্রসঙ্গে। জানান প্রধানমন্ত্রী পদে একজন বাঙালিকে দেখাই দেশের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের শেষ জীবনের ইচ্ছে।
সুদীপবাবু বলেন দেশে এই মুহূর্তের সবচেয় সফল মুখ্যমন্ত্রী হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই তিনি সমবেত জনসমুদ্রের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন। জানতে চান, ‘আপনারাই বলুন কাকে দেখতে চান?’ জনসমুদ্রে প্রতিধ্বনিত হয় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নাম। সুদীপবাবুর অভিযোগ, সমস্ত মানুষের মনে এক অদ্ভূত অনিশ্চয়তা | ভারত একটা অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে চলছে | ধর্মের নাম রাজনীতি চলছে| এই সরকারের আমলে ভারতের অর্থনীতির কোনও দাম নেই | যেন এক শ্মশানের অগ্রগতি| হিন্দু-মুসলমান, ভারত-পাকিস্তান এগুলিই যেন বিবেচ্য |
সমাবেশে সুদীপবাবু বলেন, “কালো ধন ধরা পর্বে বলে ৫০০ টাকা ও ১,০০০ টাকার নোট বাতিল করা হল| বিপুল পরিমানে কালো টাকা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে জমা হয়ে সাদা হয়ে গেল | লাভবান হল মুষ্টিমেয় কিছু পুঁজিপতি সাধারণ মানুষ কেউ এই বিমুদ্রাকরণের সাফল্যের মুখ দেখল না | মানুষ অচ্ছে দিনের মুখ দেখতে পায়নি | আমাদের সাংসদ সুলতান আহমেদের মৃত্যুর পর সেই আসনে ভোটে পাঁচ লক্ষের ওপর ভোটে আমরা জিতলাম | আসলে তৃণমূল কংগ্রেস যে কাজ করেছে, তার তুলনা নেই| আর, মানুষ মনে করছে, এই সরকার আমার| আর, সেই সরকার ভেঙ্গে দিতে এলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী| তাতে সরকার ভাঙল না | প্রধানমন্ত্রীর প্যান্ডেল ভেঙ্গে পড়ল |”
দুর্যোগের প্রেক্ষিতে সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “বৃষ্টি আমাদের থামাতে পারে না| ঝড় আটকাতে পারে না! রোদ্দুর দমাতে পারে না! বিজেপি বলেছিল, আমরা এলে বড়লোকদের ঘুম উড়ে যাবে| গরিবরা ঘুমোবে| আর আজ দেখুন, বড়লোকরা ঘুমোচ্ছে| গরিবদের ঘুম উড়ে গিয়েছে| এ রাজ্য থেকে কমিউনিস্টদের সরিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়| দেশ থেকে তিনি বিজেপি-কে হঠাবেন| নেতাজী বলেছিলেন দিল্লি চলো। আমরাও নেত্রীর ডাকে বলছি দিল্লি চলো। লাগলে আমরাও রক্ত দেবো।”
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগামী ৩০ বছরেও তৃণমূল কংগ্রেসকে কেউ সরাতে পারবে না। “ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “বাংলার মা বোনেদের যেভাবে সম্মান দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তা কেউ ভাবতে পারবেন না।” সুব্রত বকশী বলেন, এ রাজ্যের রাজনীতিতে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কোনও বিকল্প নেই| জাতীয় রাজনীতিতেও তাঁর গুরুত্ব অপরিসীম |”
সাংসদ অভিষেক বলেন ২১ জুলাই নিছক একটা সমাবেশ বলে ভাববেন না । ২১ হল আবেগ, ২১ হল অহঙ্কার, ২১ হল পরিচয় । আপনারা স্লোগান তুলুন দু’হাজার উনিশ, বিজেপি ফিনিশ | ২০১৮-তে ওদের প্যান্ডেল ভেঙ্গেছে | ২০১৯-এ ওদের সরকার ভাঙবে | আগে ওরা প্যান্ডেল সামলাক | পরে দেশ সামলাবে|”
মন্ত্রী ববি হেকিম বলেন, “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১শে জুলাই |” শহিদ দিবসের তাত্পর্য বিশ্লেষন করে তিনি বলেন, “আন্দোলন মানেই মমতা বন্দোপাধ্যায়| তাঁর সারা জীবন আন্দোলনের মধ্যেই কেটেছে |”
এ দিনের সমাবেশে ‘বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও’ শ্লোগান দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার তিনি বলেন, “কালো মাথায় আজকের সমাবেশ ছেয়ে গিয়েছে! এতেই জননেত্রীর জনপ্রিয়তা বোঝা যায়| বাংলার জনগন জানেন মমতা বন্দোপাধ্যায় দিক নির্দেশ করে দেন| ২০১৩ সালের মত এবারেও পঞ্চায়েত ভোটও বানচাল করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছে, বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি। বুঝে নিক দুর্বৃত্ত। ভোটে অনিয়মের অভিযোগ উঠল| এর পর কেন্দ্রীয় রক্ষী দিয়ে মহেশতলায় ভোট হল| ২০১৬ সালে সেখানে আমাদের প্রার্থী জিতেছিলেন ১২ হাজার ভোটে| এবার সেই ব্যবধান বেড়ে দাড়াল ৬৪ হজে| কেন্দ্র-পুলিশ এ রাজ্যে এগুলি কোনও বিষয় নয়| কারণ, আমাদের নেত্রী বাংলার মানুষের মনের মনিকোঠায়| বাংলায় একটা নতুন দল এসেছে| তারা বলছে, ছাল ছাড়িয়ে দাও| মেরে দাও| এ সব কী কথা?”

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *