শুরু হল সংসদের বাদল অধিবেশন, লোকসভায় গৃহীত বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব

নয়াদিল্লি, ১৮ জুলাই (হি.স.): শুরু হল সংসদের বাদল অধিবেশন। বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আনাস্থা প্রস্তাব আনে টিডিপি | অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন| অনাস্থা প্রস্তাবের উপর আলোচনা হবে বৃহস্পতিবার | আর শুক্রবার এই নিয়ে ভোটাভুটি হবে| বুধবার সংসদের বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনই উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের উভয় কক্ষ| সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা এবং নিম্নকক্ষ লোকসভায় গণপিটুনি নিয়ে আলোচনার দাবি তুলে হইহট্টগোল করলেন তৃণমূল কংগ্রেস এবং আরজেডি সাংসদরা।
সংসদের বাদল অধিবেশন যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় সে জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে আবেদন রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী| বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার প্রাক্কালে সমস্ত রাজনৈতিক নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, ‘আমরা আশা রাখছি সংসদের বাদল অধিবেশন সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হবে| সমস্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত রয়েছে সরকার|’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছিলেন, ‘সংসদের বাদল অধিবেশনে দেশবাসীর স্বার্থে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে| সমস্ত অভিজ্ঞ সদস্যদের কাছ থেকে সুপরামর্শ এবং আলোচনার আশা রাখবো আমরা|’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বার্তা সত্বেও যা আশঙ্কা ছিল, আর সেই আশঙ্কাই সত্যি হল| বুধবার সংসদের বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনই উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের উভয় কক্ষ| সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা এবং নিম্নকক্ষ লোকসভায় গণপিটুনি নিয়ে আলোচনার দাবি তুলে হইহট্টগোল করলেন তৃণমূল কংগ্রেস এবং আরজেডি সাংসদরা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবকে গ্রহণ করলেন লোকসভার অধ্যক্ষা সুমিত্রা মহাজন। আগামী ২০শে জুলাই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হবে। ভোটাভুটির দিন উপস্থিত থাকার জন্য দলীয় সাংসদের উদ্দেশ্যে হুইপ জারি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা প্রসঙ্গে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যকে কটাক্ষ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধান। অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এনডিএ-র দলগুলি ভোট দেবে। বুধবার আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এমনই জানালেন কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অনন্ত কুমার। অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে বিরোধীদের যোগ্য জবাব দেওয়া হবে।
এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে টিডিপি সাংসদ কেসিনেনি শ্রীনিবাসের আনা অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন| অনাস্থা প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম, সমাজবাদী পার্টি ও তেলুগু দেশম পার্টি| স্পিকার সুমিত্রা মহাজন জানিয়েছেন, অনাস্থা প্রস্তাবের উপর আলোচনা হবে বৃহস্পতিবার | আর শুক্রবার এই নিয়ে ভোটাভুটি হবে| উল্লেখ্য, বিগত ১৫ বছরে এই প্রথমবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হল এবং তা গৃহীত হল লোকসভায়| অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হবে ২০ জুলাই। আর সেই দিন লোকসভায় উপস্থিত থাকার জন্য দলীয় সাংসদদের উদ্দেশ্যে হুইপ জারি করল তৃণমূল কংগ্রেস। ২১ শে জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবস থাকার জন্য বহু সাংসদ কলকাতায় থাকবে বলে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি দিন পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ লোকসভার অধ্যক্ষার কাছে করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। কিন্তু সেই দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়ে যায়।
এই প্রসঙ্গে ডেরেক ও ব্রায়ান বলেন, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এবং ভোটাভুটিতে যোগ দেওয়ার জন্য আমাদের ৩৪ জন সাংসদদের উদ্দেশ্যে হুইপ জারি করা হয়েছে। এর আগে দলের আরও এক সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী বলেন, অনাস্থা প্রস্তাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর দিনক্ষণ পরিবর্তনের জন্য আমরা অধ্যক্ষা এবং সরকারকে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু এতে তারা রাজি নয়। দিল্লিতে ওই দিন উপস্থিত থাকার জন্য দলের সব সাংসদদের প্রতি হুইপ জারি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য সাংসদের যে সংখ্যাটা দরকার তা কংগ্রেসের নেই। সেটা জানা সত্ত্বেও কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেন, কে বলেছে আমাদের কাছে সংখ্যা নেই? কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রীর এই মন্তব্যের পাল্টা সরব হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি বলেন, অটলবিহারি বাজপেয়ী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখনও একই ধরণের ঔদ্ধত্য কংগ্রেস দেখিয়েছিল। এর পরিণতির মুখোমুখি তাদের হতে হবে। ভারত তাদের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নির্বাচিত করেছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জনগণের বিশ্বাস রয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আঠাওয়ালে জানিয়েছেন, ‘আমার মতে মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে কোনও লাভ হবে না| আগামী ২০ জুলাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করবো আমরা|’
অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে সমাজবাদী পার্টি নেতা আর জি যাদব বলেন, বিরোধীদের সংখ্যা নেই। কিন্তু জনগন জানে এই সরকার কি ভাবে আমাদের বোকা বানিয়ে চলেছে। সরকার ফেলে দেওয়ার মতো সংখ্যা যখন নেই তখন কি উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হল। এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার বলেন, অধক্ষ্যা ঠিক করবেন অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটি হবে কিনা। এনডিএ-এর মধ্যে থাকা সবকটি দলগুলি ঐক্যবদ্ধ ভাবে অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেবে। এর মাধ্যমে বিরোধীদের যোগ্য জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র এনডিএ-এর মধ্যে থাকা দলগুলিই ছাড়াও এনডিএ-র বাইরে যেসব দলগুলি রয়েছে তারাও ভোট দেবে।
এদিন লোকসভা বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোজ সিনহা বলেন, বিগত চার বছরে জনগণের সুবিধার্থে গোটা দেশে প্রায় ২১৫টি পোস্ট অফিসে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দেশের প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্র অন্তত একটি পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সূত্র এখনও পর্যন্ত ২১৫টি পোস্ট অফিসে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কোনও ব্যক্তি যাতে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র খুঁজে পায় সেই দিকে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রগুলি পোস্ট অফিসে খোলা হয়েছে।
বিগত তিন বছরে ই-কমার্স এবং অন্যান্য ভেলু অ্যাডেড সার্ভিস থেকে পোস্ট অফিসের আয় বেড়েছে। কিন্তু পোস্ট অফিসগুলির পেমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে কোনও রকমের আয় বাড়েনি বলে লোকসভায় জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, পাসপোর্ট তৈরি করতে আগে সাধারণ মানুষদের জটিল প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হতো। কিন্তু বিগত চার বছরে সেই প্রক্রিয়া অনেক সরল হয়ে গিয়েছে। দেশের গ্রামাঞ্চলগুলিতে যাতে মানুষের পাসপোর্ট তৈরি করতে অসুবিধা না হয় সেই জন্য পোস্ট অফিসগুলিতে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে ২১৫টি পোস্ট অফিসে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এতে উপকৃত হয়েছে দেশের সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে রাজ্যসভায় আজ নতুন চারজন সদস্য শপথ নেন। রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে মনোনীত করেছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ| মনোনীত চারজন হলেন যথাক্রমে, কৃষক নেতা হিসেবে পরিচিত রাম শাকাল, বিশিষ্ট লেখক রাকেশ সিনহা, নৃত্যশিল্পী সোনাল মানসিং এবং স্থাপত্যবিদ রঘুনাথ মহাপাত্র| সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৮০ অনুযায়ী, সমাজের বিভিন্ন পেশার চারজনকে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় মনোনীত করতে পারেন রাষ্ট্রপতি| চলতি মাসেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সম্মতি মিলেছিল, অবশেষে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পা রাখলেন নতুন চারজন সদস্য| এদিন রাজ্যসভায় ১০টি ভাষায় ভাষণ দেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু। বাংলা, গুজরাটি, কন্নড, মালায়ালম, মারাঠি, নেপালি, ওড়িয়া, পাঞ্জাবি, তামিল, তেলগু ভাষায় বক্তব্য রাখেন তিনি। এদিন রাজ্যসভায় অশোক মিত্র, শান্তারাম নায়েক, বালকবি বৈরাগি সহ আট জন প্রয়াত সদস্যের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরজন্য নীরবতা পালনও করা হয়।
এদিন রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, আমি সদনকে আস্বস্ত করে বলতে চাই তফশিলি জাতি এবং তফশিলি উপজাতি জনজাতিকে সংবিধান যে নিরাপত্তা দিয়েছে তা কোনও সংস্থা এবং ব্যক্তি ছিনিয়ে নিতে পারবে না। তফশিলি জাতি এবং তফশিলি উপজাতি আইনে কোনও রকমের শিথিলতা যাতে না আসে তার জন্য প্রশাসন দৃঢ়চেতা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তফশিলি জাতি এবং তফশিলি উপজাতির প্রতি বেড়ে চলা অত্যাচার এবং তার বিচার ব্যবস্থায় স্পেশ্যাল কোর্টের ভূমিকা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, আমাদের সরকার মনে করে স্পেশ্যাল কোর্ট এই ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নয়। আর তার জন্য স্পেশ্যাল এক্সক্লুসিভ কোর্ট গড়ে তোলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৯৪টি এমন ধরণের কোর্ট গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফলে বিচার ব্যবস্থা তরান্বিত হয়।
এই প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী হংসরাজ গঙ্গারাম আহির বলেন, দেশের ২৪টি রাজ্যে স্পেশ্যাল এক্সক্লুসিভ কোর্ট গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে ৩০টি রাজ্যে স্পেশ্যাল কোর্ট রয়েছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তফশিলি জাতি ও তফশিলি উপজাতির প্রতি হওয়া অপরাধের সংখ্যা বেড়ে যায়নি। ২০১৬ সালে তফশিলি জাতি জাতির বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধের ৪০৮০১টি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছিল। অন্যদিকে তফশিলি উপজাতি ক্ষেত্রে তা ছিল ৬৫৬৮ নথিভুক্ত।
কেন্দ্রীয়মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, ২০১৪-১৬ সাল পর্যন্ত ১,১০,৩৩৩ ধর্ষণের মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। ২০১৬ সালে ৩৮,৯৪৭ ধর্ষণের মামলা নথিভুক্ত হয়। ২০১৫ সালে ৩৪,৬৫১।২০১৪ সালে তা ছিল ৩৬,৭৩৫।
মহিলাদের প্রতি হওয়া অপরাধের মামলা ২০১৬ সালে ছিল ৩,৩৮,৯৫৪। ২০১৫ সালে ৩,২৯,২৪৩ এবং ২০১৪তে ৩,৩৯,৪৫৭। প্রসঙ্গত কাঠুয়া এবং উন্নাও কাণ্ডে গোটা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। দেশের একাধিক প্রান্তে নাবালিকা ধর্ষণকাণ্ডে প্রশ্নের মুখে পড়েছে নারীদের প্রতি নিরাপত্তা। প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
গোরক্ষার নামে গণপিটুনির ঘটনায় লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনে তৃণমূল এবং আরজেডি| পাশাপাশি গণপিটুনি এবং স্বামী অগ্নিবেশকে হামলার প্রেক্ষিতে রাজ্যসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনেন সিপিআই সাংসদ ডি রাজা| প্রসঙ্গত, ৱুধবার, ১৮ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে সংসদের বাদল অধিবেশন| বাদল অধিবেশন চলবে আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *