BRAKING NEWS

কথার নাম লতা

সুবোধ ঘোষ
ফাঁসির আসামীর মত অবস্থা দশ হাজারীদের৷ তাদের চোখে মুখে আতঙ্ক৷ রাতে ঘুমের মাঝেও তারা দুঃস্বপ্ণ দেখে চমকে উঠে৷ শয়নে, স্বপনে, ঘুমে জাগরণে তাদের একই উৎকন্ঠা৷ কেননা, তারা যে ফাঁসির আসামীর মত ছটফট করছে৷ ফাঁসির আসামী যেমন জানে তাদের ফাঁসি নিশ্চিত৷ শুধু জানা না দিনক্ষণ৷ তেমনই রাজ্যের দশ হাজারীদেরও অবস্থা৷ এই দশ হাজারীরা তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার তথা সিপিএমের রাজনীতির শিকার৷ কিন্তু, যখন যারা শিকার হয়েছিল তখন তারা ভাবেনি যে ভবিষ্যতে তাদের জন্য ঘোর বিপদ উৎ পেতে আছে৷ তখন তারা রাজনীতির শিকার হলেও তাদের জড় মস্তিস্কে এ বোধ আসেনি৷ বরং সেই সময়ে তারা ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ বলে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে সিপিএমে গুণকীর্তনে ব্যস্ত ছিল৷ এই দশহাজারীদের মাঝে অনেক অচল ব্যক্তিও রয়েছে৷ কিন্তু, ২০১০ সালে ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক গুপ্ত এবং বিচারপতি এ সি দাসের ডিভিশন বেঞ্চ ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল বলে রায় দেন৷ সেই থেকে ওই দশ হাজারীদের ঘাড়ে চাকরি হারানোর কোপ ঝুলছে৷
অথচ চাকরি পাবার পর তারা রঙ্গীন স্বপ্ণে বিভোর ছিল৷ অনেকে বিয়ে করে সংসারী হয়েছে৷ অনেকে লোন নিয়ে বাড়ি করেছে৷ ভেবেছে যে এ মুখে তাদের দিন যাবে৷ কিন্তু দিন তাদের যাচ্ছে৷ তবে তা বিভীষিকার নামান্তর৷ তাদের চোখে মুখে ভাটার টান৷ চলাফেরায় উদভ্রান্তের ছাপ৷ বিজেপি নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি ছিল তাদের চাকরি যাতে থাকে বিজেপি ক্ষমতায় এলে সেই চেষ্টা করবে৷ সেই হিসাবে বিজেপি জোট সরকার তাদের চাকুরীর মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধি করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল৷ তবে এর আগে তৎকালীন রাজ্য সরকারের আবেদনে মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট তাদেরকে ছয় মাসের জন্য এডহক ভিত্তিতে নিয়োগের নির্দেশ দেন৷ বর্তমানে বিজেপি জোট সরকার সুপ্রিম কোর্টে যে আবেদন করেছিল তার সুনামী ছিল ৪ জুলাই৷ কিন্তু, ওইদিন শুনানী পিছিয়ে যায়৷ ফের দিন ধার্য হয় ১৮ জুলাই৷ কিন্তু, ১৮ জুলাইয়েও দশ হাজারীদের ব্যাপারে কোনও সুরাহা হল না৷ সুপ্রিম কোর্ট ফের দু’সপ্তাহ রায় পিছিয়ে দিলেন৷ তার অর্থ হল আরও ১৪ দিন দশ হাজারীদের চাকুরীর মেয়াদ বাড়ল৷ অবশ্য ইতিমধ্যে তারা সমাজে করুণার পাত্রে পরিণত হল৷ আর দশহাজারীরাও নিজেদেরকে সেইভাবে তৈরী করতে লাগল৷ তারা অনেকটা নিশ্চিত যে তারা আজ আছে কাল নেই৷ আর সুপ্রিম কোর্ট তাদের চাকুরীর মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ালেও তাতে তারা কোনও কুল কিনারা দেখছে না৷ তাই তাদের বর্তমান অবস্থা- না ঘরকা, না ঘাটকা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *