BRAKING NEWS

আওতার বাইরে থাকা কৃষিজমিকে সেচের আওতায় আনতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ জুলাই৷৷ আজ মহাকরণের কনফারেন্স হলে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সভাপতিত্বে কৃষি দপ্তরের এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ সভায় মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের চাহিদার নিরিখে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে কাজ করার পরামর্শ দেন৷ সেচের আওতা বহির্ভূত কৃষি জমিকে সেচের আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নিতে তিনি দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন৷ এজন্য জল সম্পদ দপ্তরের সাথে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে সেচ সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে বলেন তিনি৷ রাজ্যের উৎপাদিত আলু যেন রাজ্যের কোল্ড স্টোরেজগুলিতেই গুদামজাত করা যায় সেজন্য দপ্তরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন৷ আলুর পাশাপাশি রাজ্যের উৎপাদিত টমেটোও কোল্ড স্টোরেজগুলিতে গুদামজাত করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ রাজ্যের কৃষকরা যেন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত খাদ্যশস্যের নূ্যনতম সহায়ক মূল্য পেয়ে উপকৃত হতে পারেন এজন্য এপ সি আই এর সাথে কথা বলে কৃষকদের উৎপাদিত খাদ্যশস্য এফ সি আই এর কাছে বিক্রি করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মুখ্যমন্ত্রী দপ্তরকে নির্দেশ দেন৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এতে রাজ্যের কৃষকদের আয় বাড়বে৷ এফ সি আই এর পরিবহন খরচও কম হবে৷ কারণ কৃষকদের থেকে কেনা খাদ্যশস্য রাজ্যের গণবন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমেই সরবরাহ করা যেতে পারে৷ সভায় কৃষি দপ্তরের করণীয় মূল কার্যাবলী, ১০০ দিনের কাজের অ্যাকশন প্ল্যান ও অ্যাচিভমেন্ট, চলতি বছরের অ্যাকশন প্ল্যান, পরিকাঠামোগত বিষয়, কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প, কৃষি দপ্তরের বিভিন্ন সমস্যা ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়৷ ১০০ দিনের কাজের মধ্যে কৃষকদের ১৩৭ মেট্রিকটন বিভিন্ন খাদ্যশস্যের বীজ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিলো৷ দপ্তর ১০০ দিনের মধ্যে ২০৮ মেট্রিকটন বিভিন্ন খাদ্যশস্যের বীজ কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করতে পেরেছে৷ সব মিলিয়ে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত মোট ৫৭৬ মেট্রিকটন বীজ কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে বলে বৈঠকে জানানো হয়৷ অনুরূপভাবে কৃষকদের মধেও সার বিতরণের ক্ষেত্রে ১০০ দিনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩৫০  মেট্রিকটন৷ দপ্তর বিতরণ করেছে ৬৬৭ মেট্রিকটন৷

ভর্তুকীতে পাওয়ারটিলার বিতরণের ক্ষেত্রে ১০০ দিনে ৩০০ টি পাওয়ারটিলার বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো৷ এই সময়ে দপ্তর ৩৭৭টি পাওয়ারটিলার বিতরণ করেছে৷ কৃষকদের সয়েল হেলথ কার্ড প্রদান করার জন্য ১০০ দিনে চার হাজার মাটির সেম্পল কালেকশনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিলো৷ এক্ষেত্রে দপ্তর ১০০ দিনে ৫০০৫টি মাটিক নমুনা সংগ্রহ করতে পেরেছে৷ প্রসঙ্গত সয়েল হেলথ কার্ড এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে কৃষকরা নিজেরাই বুঝতে পারবে তাদের জমিতে কোন জাতীয় সার কি পরিমাণ ব্যবহার করতে হবে৷ সাধারণত পাহাড়ি এলাকায় প্রতি ১০ হেক্টরে একটি মাটির নমুনা এবং সমতল কৃষি জমিতে প্রতি আড়াই হেক্টরে ১টি মাটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়৷ ১৩টি প্যারামিটারের মাটির নমুনা পরীক্ষা করে কৃষকদের সয়েল হেলথ কার্ড প্রদান করা হয়৷ বৈঠকে জানানো হয়, রাজ্যের কৃষকদের কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, মাটি পরীক্ষা, কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে রাজ্যে ৩৬টি কৃষক বন্ধু কেন্দ্র স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের৷

ইতিমধ্যেই গোমতী জেলার ছাতারিয়াতে একটি কৃষকবন্ধু কেন্দ্র খোলা হয়েছে৷ রাজ্যে আরও চারটি কৃষকবন্ধু কেন্দ্র অতি শীঘ্রই খোলা হবে বলে সভায় জানানো হয়৷ এছাড়া সভায় ১০০ দিনের কর্মসূচির মধ্যে গৃহীত কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা ও সফলতার বিষয়ে াালোচনা হয়৷ দেখা গেছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দপ্তর ১০০ দিনে কাজের যে লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিলো তা সম্পন্ন করতে পেরেছে৷ এছাড়াও সভায় চলতি বছরের খাদ্যশস্য উৎপাদনে দপ্তরের লক্ষ্যমাত্রা তুলে ধরা হয়৷ গত বছরের তুলনায় এই লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ধরা হয় যেন দপ্তর চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে পারে৷ চলতি বছরে ১ লক্ষ হেক্টর জমিতে শ্রীপদ্ধতিতে ধান চাষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি উচ্চফলনশীল হাইব্রীড ধান ৬০ হাজার হেক্টর কৃষি জমিতে  চাষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ এছাড়াও চলতি বছরে কৃষকদের মধ্যে বীজ, সার ইত্যাদি বিতরণে বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে আলোচনা হয়৷ এছাড়াও কৃষি জমিতে জলসেচের বর্তমান চিত্র, গরীব, প্রান্তিক চাষীদের কল্যাণে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রূপায়ণ, কিষাণ কল সেন্টার, কিষাণ ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়৷ সভায় কৃষি দপ্তরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন দপ্তরের মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়৷ উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব সঞ্জীব রঞ্জন, কৃষি দপ্তরের প্রধান সচিব ইউ কে ভেঙ্কটেশ্বরালু ও কৃষি অধিকর্তা ড দেবপ্রসাদ সরকার ও অন্যান্য আধিকারিগণ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *