রাজ্যের পর্যটনকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছাতে অ্যাকশন প্ল্যান গ্রহণের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ জুলাই ৷৷ আজ মহাকরণের কনফারেন্স হলে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সভাপতিত্বে পর্যটন দপ্তরের পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ ত্রিপুরায় যে সকল আকর্ষণীয় ও অপূর্ব সুন্দর পর্যটন স্থান রয়েছে সেগুলিকে দেশ-বিদেশে কিভাবে আরও বেশি করে প্রচারে নেওয়া যেতে পারে তার জন্য অ্যাকশন প্ল্যান গ্রহণ করতে মুখ্যমন্ত্রী সভায় সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেন৷ পাশাপাশি ত্রিপুরার সকল পর্যটন  স্থানগুলিতে বিশ্বমানের পরিষেবা প্রদান সুনিশ্চিত করার জন্য পর্যটন দপ্তরকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন এ এস আই-র (আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া) যে সকল পর্যটন ক্ষেত্র রয়েছে সেগুলিতে ফটোগ্রাফির বাধানিষেধ আরোপ না করতে সম্প্রতি দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ এস আই-র আধিকারিকদের নির্দেশ দেন৷ প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশকে অনুসরণ করেই মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে পর্যটন দপ্তরের অধীন যে সকল পর্যটন স্থান রয়েছে সেগুলিতেও ফটোগ্রাফির বাধানিষেধ আরোপ না করতে পর্যালোচনা সভায় পর্যটন দপ্তরকে নির্দেশ দেন৷

সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার রাজ্যকে উন্নয়নের ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে দিশাতে কাজ করছে এর মধ্যে পর্যটন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ তাই পর্যটনের প্রচারের উপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে৷ আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যাকে ব্যবহার করে রাজ্যের পর্যটন শিল্পকে দেশ-বিদেশে প্রচারে নিয়ে যাওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷

সভায় পর্যটন দপ্তরের সচিব ড অলিন্দ রাস্তোগী জানান, রাজ্যে বর্তমানে মোট ৩০টি ট্যুরিস্ট লজ রয়েছে৷ এর মধ্যে ১৪টি ত্রিপুরা পর্যটন উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে৷ ৬টি রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে৷ বাকিগুলি লিজে দেওয়া হয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ট্যরিস্ট লজগুলিতে পর্যটকদের পরিষেবা প্রদানে আরও গুরুত্ব দিতে হবে৷ সচিব আরও জানান, আমাদের রাজ্যে কিছুদিনের মধ্যে ৭টি ক্যাফেটোরিয়া চালু করা হবে৷ এছাড়াও স্বদেশ দর্শন প্রকল্পে আখাউড়া চেক পোস্ট, বনদোয়ার এবং আমবাসায় তিনটি ক্যাফেটোরিয়া খোলা হবে৷ এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ক্যাফেটোরিয়াগুলিতে দক্ষিণ ভারতীয় সহ বিভিন্ন প্রদেশের খাবারের ব্যবস্থা রাখার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে৷

মুখ্যমন্ত্রী পর্যালোচনা সভায় বলেন, পর্যটনের উন্নয়ন করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে৷ ত্রিপুরা পরিক্রমা নামে ট্যুরিস্ট গাইড বুক তৈরী করে এতে ত্রিপুরার বিখ্যাত পর্যটন ক্ষেত্রগুলির আকর্ষণীয় ছবি সহ এর ইতিহাস সবিস্তারে তুলে ধরার উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্বারোপ করেন৷ তিনি দেশের বিভিন্ন বিখ্যাত সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ত্রিপুরার বিভিন্ন পর্যটন স্থানগুলি পরিদর্শনের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর পরামর্শ দেন৷ এতে রাজ্যের দর্শনীয় পর্যটন ক্ষেত্রগুলি আরও প্রচার পাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন৷ এছাড়াও মাতাবাড়ি থেকে ভুবনেশ্বরী মন্দির পর্যন্ত রোপওয়ে বানানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য পর্যটন দপ্তরকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷

পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও পর্যটন দপ্তরের মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়, মুখ্য সচিব সঞ্জীব রঞ্জন, মুখ্যমন্ত্রীর অতিরিক্ত সচিব ড মিলিন্দ রামটেকে, মুখ্যমন্ত্রীর ও এস ডি জয়রাম পান্ডিয়া এবং পর্যটন দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *