BRAKING NEWS

১০টি ব্লক এলাকায় বিপিএল পরিবারে বিনামূল্যে চাল, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছতার সঙ্গে খাদ্যশস্য বন্টনের লক্ষ্যেই ই-পিডিএস ব্যবস্থা চালু ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ জুলাই৷৷ আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ণ ত্রিপুরা রাজ্যকে দেশের মধ্যে মডেল রাজ্য হিসেবে পরিণত করা৷ প্রধানমন্ত্রীর এই স্বপ্ণকে বাস্তবরূপ দেওয়ার জন্য রাজ্যের জাতি- জনজাতিদের উন্নয়নের দিশা দেখানোর লক্ষ্যে কাজ করছে বর্তমান রাজ্য সরকার৷ আজ তেলিয়ামুড়া মহকুমার মুঙ্গিয়াকামী ব্লক অফিসের কনফারেন্স হলে রাজ্যের প্রত্যন্ত ব্লক এলাকার বিপিএল পরিবারের মধ্যে বিনামূল্যে রেশনকার্ড পিছু অতিরিক্ত ২০ কেজি চাল সরবরাহ যোজনার শুভ সূচনা করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি বলেন, রাজ্যে এই প্রথম কোনও সরকার ১০টি ব্লক চিহ্ণিত করে বিপিএল পরিবারের মধ্যে ২০ কেজি চাল সরবরাহ করার উদ্যোগ নিয়েছে৷ এতে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে ৩ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেসের প্রধানমন্ত্রী উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে স্বরোজগারী রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিশেষ দিশা নিয়ে কাজ করছেন৷ কেন্দ্রীয় সরকার উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে দেশের গরীব পরিবারের মদ্যে বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার সহ গ্যাস কানেকশন দিচ্ছে৷ পাশাপাশি ২ টাকা দরে ভর্তুকীতে গরীব পরিবারে চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করছে৷ রাজ্য সরকারও গরীব মানুষের উন্নয়নে সেই দিশাতেই কাজ করছে৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার জনগণের সুষ্ঠু ও স্বচ্ছতার সঙ্গে খাদ্যশস্য বন্টনের জন্য ই-পিডিএস ব্যবস্থা চালু করেছে৷ এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার ফলে এখন থেকে প্রকৃত ভোক্তারাই তাদের খাদ্যসামগ্রী পাবেন৷ খাদ্যশস্য সরবরাহে দুর্নীতি রুখতেই আমরা ই-পিডিএস ব্যবস্থা চালু করেছি৷ বিগত সরকারের আমলে গবীর ভোক্তাদের নানাভাবে বঞ্চিত করা হয়েছিলো৷ শুধু তাই নয়, বিগত সরকার জনগণকে লুন্ঠিত, বঞ্চিত এবং অবহেলিত এই তিনটি শব্দের মধ্যে বেঁধে রেখেছিলো৷ বর্তমান রাজ্য সরকার জনগণকে এই তিনটি শব্দের বন্ধন থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য কজা করছে৷ তাই জনজাতিদের আনারস চাষ ও বাঁশ চাষের মাধ্যমে স্বরোজগারী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার কাজ করছে৷ বিগত সরকার যদি ২৫ বছরের শাসনকালে এই চিন্তা গ্রহণ করতো তাহলে ১০টি ব্লকের মধ্যে খাদ্য ও কাজের অভাব হতো না৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার হচ্ছে ৩৭ লক্ষ ত্রিপুরাবাসীর সরকার৷ ত্রিপুরাবাসীর উন্নয়নে বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রঙণ করেই রাজ্য সরকার কাজ করছে৷ পাশাপাশি রাজ্যকে নেশামুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে৷ সম্প্রতি শিলং- এ এন ই সি মিটিংয়েও এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্য রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরাও এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন৷ রাজ্যে জমি মাফিয়া, গাঁজা ব্যবসায়ীদের রেহাই দেওয়া হবে না৷ পুলিশ প্রশাসনকেও বলা হয়েছে নেশা কারবারীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য৷ আগামী দিনে ত্রিপুরাকে নেশামুক্ত এবং শক্তিশালী রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজ্যবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে রাজস্ব দপ্তরের মন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে গণতন্ত্রের শাসন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর এই ৭০ বছরে কোনও রাজ্য সরকার রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মদ্যে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহ করেচে এমন নজীর নেই৷ বর্তমান নতুন রাজ্য সরকার এই ঐতিহাসিক কাজকেক বাস্তবরূপ দিতে পেরেছে৷ জুলাই ও আগষ্ট এই দুই মাস রাজ্যের ১০টি ব্লকের বিপিএল ভুক্ত জনজাতি জনগণকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্যই রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা আজ এখান থেকে শুরু হয়েছে৷ বিগত সরকার দীর্ঘকাল রাজ্য শাসন করেও এই ধরেনর জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রঙণ করতে পারেনি৷

বিশেষ অতিথির ভাষমে খাদ্যমন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব রাজ্য সরকার মন্ত্রিসভার বৈঠকে যে ১০টি ব্লকের অধীনে ৬১ হাজার ৫৮টি বিপিএল পরিবারের মধ্যে বিনামূল্যে ২০ কেজি করে চাল দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো তা আজ দ্রুত শুরু করার জন্য খাদ্য দপ্তর সহ খোয়াই জেলা প্রশাসনকে অভিনন্দন জানান৷ তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের জন্য বিভিন্ন উনয়নমূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে৷ সেগুলি কার্যকর করার জন্যই সচেষ্ট থাকবে রাজ্য সরকার৷

অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিধায়ক কল্যাণী রায় এবং তেলিয়ামুড়ার মহকুমা শাসক জয়ন্ত দে৷ অনুষ্ঠান শেষে সুবিধাবোগীদের মদ্যে ২০ কেজি করে চালের প্যাকেট তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ৷ এছাড়াও মুঙ্গিয়াকামী ব্লক সংলগ্ণ ৫টি বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কর্তাদের হাতে মুখ্যমন্ত্রী নিজ হাতে ২০ কেজি করে চালের প্যাকেট তুলে দেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *