BRAKING NEWS

সাহসিকতার জন্য স্বপন ও সোমাতিকে অভিনন্দন বিধানসভায়

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ জুন৷৷ সাহসিকতার সর্বোচ্চ নির্দশন স্থাপন করায় রাজ্য বিধানসভা স্বপন দেববর্মা এবং তাঁর নাবালিকা কন্যা

বিধানসভায় বিশেষ অতিথি গ্যালারিতে স্বপন দেববর্মা ও তাঁর মেয়ে সোমাতি দেববর্মা৷ ছবি- নিজস্ব৷

সোমাতি দেববর্মাকে সন্মান জানিয়েছে৷ তাদের সাহসিকতার জন্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কারের প্রস্তাব রাজ্য বিধানসভা থেকে পাঠানো হবে বলে সর্বসম্মতি ক্রমে গৃহীত হয়েছে৷ এদিন তাদের বিধানসভার অতিথি গ্যালারিয়ে বসানো হয়৷

রাজ্য বিধানসভা অধিবেশনের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার প্রশ্ণোত্তর পর্বের পর শূন্যকালে বিষয়টি উত্থাপন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন৷ সাম্প্রতিক বন্যার সময় একটি যাত্রীবাহী ট্রেনকে বড় ধরনের দুর্ঘটনায় হাত থেকে রক্ষার জন্য স্বপন দেববর্মা এবং তার নাবালিকা কন্যা সোমাতি দেববর্মা যেভাবে জীবনের পরোয়া না করে সমস্ত যাত্রীদের রক্ষা করেছেন তার বিস্তারিত ব্যাখ্যাও তিনি দেন৷

সভায় অতিথি আসনে অধিষ্ঠিত পিতা ও কন্যাকে দেখিয়ে সভায় উপস্থিত সকল সদস্যকে টেবিল চাপড়ে তাদের অভিনন্দন জানানো প্রস্তাব করেন৷ সেই সঙ্গে সকল সদস্য একযোগে টেবিল চাপড়ে তাদের অভিনন্দন জানান৷ পরে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নিজে উঠে দাঁড়ান এবং বিষয়টি উত্থাপনের জন্য সুদীপ রায় বর্মনকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্বপন দেববর্মা এবং তার নাবালিকা কন্যা সোমাতিকে ত্রিপুরার বীর সন্তান বলে আখ্যায়িত করেন৷

এরপর একে একে বিভিন্ন সদস্য পিতা ও কন্যাকে বীরত্বের সম্মানসূচক পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব করে বক্তব্য পেশ করেন৷ পরে ঠিক হয়েছে, তাদের বীরত্বেকে সম্মান জানাতে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে৷ একই সঙ্গে রেলমন্ত্রকের কাছে স্বপন দেববর্মার যোগ্যতা অনুযায়ী একটি চাকরি দেওয়ার প্রস্তাবও মুখ্যমন্ত্রী পেশ করবেন বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়৷

অন্যদিকে বিধানসভার বােির রাজ্যের ২০০০ হাজারের বেশি ট্রেন যাত্রীকে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়ে তোলার কারিগর রাজ্যের প্রতিট মানুষের হিরো এখন শুধুমাত্র ত্রিপুরায় নয়, দেশের গর্ব স্বপন দেববর্মা বলে তাদের বুকে জড়িয়ে ধরেন বিজেপির রাজ্য প্রভারী সুনীল দেওধর৷ তিনি বলেন, স্বপনবাবু নিজের জীবনের ঝঁুকি নিয়ে প্রায় ২০০০ বেশি রেলযাত্রীকে বাঁচিয়েছেন৷ তিনি শুধু রাজ্য কেন, দেশের গর্ব৷ বর্তমানে দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে তিনি আইকন হয়ে উঠেছেন বলে জানান সুনীল দেওধর৷ পাশাপাশি তিনি এদিন স্বপনবাবুর হাতে এনজিও মাই হোম ইন্ডিয়ার তরফে ২৫ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন৷ জানান, তিনি স্বপন দেববর্মার কন্যা সোমাতি দেববর্মার পড়াশুনার আজীবন খরচ চালিয়ে যাবেন৷ পাশাপাশি দেশবাসীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন, ত্রিপুরা জনজাতি অংশের প্রতিটি মানুষই যেন স্বপনবাবুর প্রতি সহৃদয় হন, তা হলেই তাঁর প্রতি যোগ্য সম্মান জানানো হবে বলে মনে করেন সুনীল দেওধর৷

উল্লেখ করা  যেতে পারে, গত ১৫ জুন প্রবল বর্ষণের ফলে আমবাসা এলাকায় পাহাড়ে রেললাইনের পাশে মাটি ধসে পড়ে৷ তখন ওই লাইন দিয়ে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন আসছিল৷ গ্রামীণ এলাকর গরিব স্বপন দেববর্মা তার মেয়ে সোমাতি দেববর্মাকে কোলে করে নিয়ে আসছিলেন৷ তখন তিনি দেখতে পান দীর্ঘ রেল লাইনের নীচের মাটি ধসে পড়েছে৷ শূণ্যে জলে রয়েছে রেলওয়ে ট্র্যাক৷ স্বপন দেববর্মা ও তার শিশুকন্যা জঙ্গলের কচু গাছ তুলে জীবনের ঝঁুকি নিয়ে দ্রুতবেগে আগত ট্রেনের সামনে সেগুলো নাড়াতে থাকেন, চালককে গাড়ি থামানো ইশারা করে৷ সঙ্কটস্থলের খুব কাছাকাঠি এসে ট্রেনটি থামে৷ ট্রেনের চালককে সংকেত দিয়ে বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে সেদিন তিনি রক্ষা করেন৷ ধারণা করা হচ্ছে না থামলে পুরো ট্রেনই গভীর খাদে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ত৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *