BRAKING NEWS

কথার নাম লতা

সুবোধ ঘোষ
এক সময় সিপিএমের ক্যাডার বাহিনী বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তুলতো৷ বলত জোট আমল থেকে এখন শান্তিতে আছেন৷ রাজ্যবাসী মুখ ফুটে কিছু বলত না৷ বলতে ভয় ছিল৷ সেই ভয় অপমানিত হবার ভয়৷ দৈহিক নির্যাতনের ভয়৷ বর্তমানে এমন চাঁদা তোলার ইজারা নিয়েছে যেন বিজেপি জোটের শরিক দল আইপিএফটি৷ পাহাড়ে তারা চালু করেছে এমন চাঁদা সংসৃকতি৷ সম্প্রতি প্রতিটি যানবাহন থেকে তারা রসিদ দিয়ে চাঁদা নিচ্ছে৷ নতুন বিজেপি সরকার যেখানে চাঁদার বিরুদ্ধে সরব সেখানে তারই শরিক দল আইপিএফটির চাঁদা সংসৃকতি কেমন যেন বেমানান ঠেকে না? প্রশ্ণ উঠে, হঠাৎই আইপিএফটির এমন চাঁদা সংসৃকতি কীসের ইঙ্গিত দিচ্ছে? তাদের চাঁদার রসিদ দেখে মনে হচ্ছে আইপিএফটি যেন সেই আলাদা রাজ্যের দাবিতে অনঢ়৷ রসিদের এক জায়গায় লেখা আছে- তুইপ্রাল্যান্ড৷ তবে কী রাজ্যভাগের দাবি থেকে তারা সরে আসেনি? এখনো কি তারা বিভাজনের রাজনীতি করছে? এডিসি এলাকায় দিয়ে কোন যানবাহন গেলে কেন চাঁদা দিতে হবে? এমন চাঁদা নেবার পেছনে কোন্ অভিপ্রায় কাজ করছে? তবে কি আইপিএফটি নেতারা সুকৌশলে এডিসি এলাকায় ইনার লাইন পারমিট চালু করতে চাইছে?
সরকারে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কতটুকু ইতিবাচক কিংবা আদৌ ইতিবাচক কিনা তাও কিন্তু প্রশ্ণের মুখে এসে যায়৷ সেই সাথে রসিদে তুইপ্রাল্যান্ড লেখাটাও কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করা৷ এ যে অনেকটা বিদ্রোহের সামিল৷ এনিয়ে ইতিমধ্যে আম জনতার মাঝে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে৷ আইপিএফটির শীর্ষ নেতৃত্বরা যেন মুখে কুলুপ এঁটে আছেন৷ চাঁদা আদায় নিয়ে তাদের কোনও প্রতিক্রিয়া নেই৷ এমন চাঁদা আদায় যে নিকট ভবিষ্যতে বিষবৃক্ষের জন্ম দেবে না তা কে বলতে পারে? তাই সংসয় থেকে যায়৷ কেননা, পাহাড়ি এ দলকে রাজ্যবাসী হাড়ে হাড়ে চেনে৷ এ দলের কর্মীদের যেমন উলঙ্গ হতে সময় লাগে না তেমনই টাক্কল হাতে নিয়ে রাজপথে নামতেও পিছপা হয় না৷ জোট সরকারে থেকেও তারা জোটের বিরুদ্ধে সরব৷ আবার পাহাড়ে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতেও এই দল মরিয়া৷ আসলে, এই আইপিএফটি দল কি চাইছে তাও স্পষ্ট নয়৷ তবে দলের কর্মীদের মাঝে আলাদা রাজ্যের সুড়সুড়ি দিয়ে তাদেরকে চাঙ্গা করে রেখেছে৷ আর সেই সাথে সরকারে থেকেও সরকারকে তাদের প্রকৃত অবস্থান জানিয়ে দিয়ে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা৷ এবং সেই সুবাদে চাঁদা আদায়ের দিকটিও তাদের কৌশলি কর্মকান্ডের একটা দিক হতে পারে৷ ফলশ্রুতিতে চাঁদা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *