BRAKING NEWS

রাবার, চা, বাঁশকে ভিত্তি করে ছোট শিল্প গড়া যেতে পারে ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ মে৷৷ ত্রিপুরার রাবার, চা এবং বাঁশ-এর বিশেষ সুনাম রয়েছে সারা দেশে৷ এগুলিকে ভিত্তি করে রাজ্যে ছোট ছোট

শনিবার মহাকরণে টাটা গ্রুপের সাথে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ নিজস্ব ছবি৷

শিল্প গড়া যেতে পারে৷ আর এই কাজে এগিয়ে আসতে পারে টাটা গ্রুপ৷ আজ মহাকরণের কনফারেন্স হলে রাজ্যে টাটা গ্রুপের বিভিন্ন কাজের পর্যালোচনা সভায় এই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে ৫৪টি চা বাগান রয়েছে৷ এই চা বাগানগুলির উৎপাদিত চা কিভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিপণন করা যেতে পারে সেই বিষয়ে কাজ করার জন্য টাটা গ্রুপকে তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, টাটা গ্রুপ তো চা শিল্প নিয়ে আগে থেকেই কাজ করছে৷ ত্রিপুরার চা এর বিশেষ একটি গুণ সনাক্ত করে মার্কেটিং-এর কাজে টাটা গ্রুপকে কাজ করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এছাড়াও রাজ্যের চা বাগানগুলিকে নিয়ে ইকো ট্যুরিজমও গড়ে তোলা যেতে পারে৷ চা-বাগানগুলির মধ্যে রাজ্যের রিয়াং জনগোষ্ঠীর টংঘরের মতো ছোট ছোট কটেজ বানানোর উদ্যোগ নেওয়ার জন্যও বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যে বিভিন্ন ধরণের উন্নতমানের বাঁশ রয়েছে৷ বাঁশ শিল্পের প্রসারে রাজ্যের ৮টি জেলায় বাঁশ চাষের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে বলে টাটা গ্রুপকে বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রে পর্যটন শিল্পকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে রাজ্য সরকার৷ রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন স্থানগুলির উন্নয়নেও টাটা গ্রুপ কাজ করতে পারে৷ আমাদের দেশে পর্যটন ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আয় হয় ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলি থেকে৷ আমরা ইতিমধ্যেই মাতাবাড়িকে নিয়ে ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির ট্রাস্ট গঠন করেছি৷ টাটা পরিবারের পক্ষ থেকে এই ট্রাস্টের সদস্য হওয়ার জন্য আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রচুর রাবার চাষ করা হয়৷ রাবার শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে টাটা গ্রুপকে বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ প্রতিটি জেলাতেই রাবার শিল্পের ইউনিট গড়ে তোলার জন্য টাটা গ্রুপকে অনুরোধ করেন৷ তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যের হস্তশিল্পের তৈরী জিনিসপত্র দেশ-বিদেশে বিখ্যাত৷ টাটা গ্রুপ হচ্ছে কেরলে রাজ্যের হস্তশিল্পের বিভিন্ন সামগ্রী তাদের তাজ গ্রুপের হোটেলগুলির প্রতিটি কক্ষে রাখতে পারে৷ এতে রাজ্যের হস্তশিল্পও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করবে৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা রাজেও আই টি হাব স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি৷ রাজ্যের প্রায় ২০-২৫ হাজার ছেলেমেয়ে পুনে, ব্যাঙ্গালোর, দিল্লী ও গুরগাঁও-এর আই টি সেক্টরে কাজ করছে৷ তাদের ত্রিপুরার আই টি সেক্টরে কাজ করার জন্য আহ্বান জানানো হবে৷ তাতে ত্রিপুরা উত্তর -পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সেরা আই টি হাবে পরিণত হবে৷ সাব্রুমে ফেণী নদীর উপর সেতুটি নির্মাণ হলে পূর্বোত্তরের রাজ্যগুলির জন্য বিজনেস গেটওয়ে হবে ত্রিপুরা৷ তিনি বলেন, সেতুটির নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে নির্মাণ সংস্থা জানিয়েছে৷ প্রতিবেশী বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র হওয়ায় সেখানকার বাজার ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য খুবই সহায়ক হবে৷ টাটা গ্রুপকে রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেরে কাজ করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সভায় টাটা সন্স লিমিটেডের আধিকারিক তন্ময় চক্রবর্তী জানান, টাটা সন্স গ্রুপের ১০০টি কোম্পানী দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করছে৷ বিভিন্ন কাজের বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পেশ করেন টাটা গ্রুপ৷ রাজ্য সরকার প্রস্তাবগুলি খতিয়ে দেখবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷

পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও মুখ্যসচিব সঞ্জীব রঞ্জন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান সচিব কুমার অলক, তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের প্রধান সচিব সুশীল কুমার, পূর্ত দপ্তরের সচিব শান্তনু, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের সচিব মানিক লাল দে, মুখ্যমন্ত্রীর অতিরিক্ত সচিব ড মিলিন্দ রামটেকে এবং টাটা সন্স লিমিটেডের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *