BRAKING NEWS

রাজ্য বিজয় বিজেপিকে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছে, লোকসভা নির্বাচন এখন বড় পরীক্ষা ঃ রাম মাধব

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ এপ্রিল৷৷ নির্বাচনে জয় রাজ্যে বিজেপিকে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছে৷ ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের দুটি আসনে জয় সুনিশ্চিত এখন বিজেপির কাছে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা৷ রবিবার বিজেপি রাজ্য কমিটির কার্যকারিনী বৈঠকে অংশ নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব ভবিষ্যৎ কর্মসূচীর রূপরেখা এইভাবেই চিহ্ণিত করে দিয়েছেন৷ নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, বিধানসভা নির্বাচনী ফলাফলে আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগলে চলবে না৷ সামনের পথ আরও কঠিন হবে বলে তিনি সতর্ক করেছেন৷ তাঁর দাবি, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির মূল লক্ষ্য উত্তরপ্রদেশ ও ত্রিপুরার সবকটি আসনে জয় নিশ্চিত করা৷
সাংগঠনিক ভিত কতটা মজবুত হয়েছে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে তা চুলচেরা পর্যালোচনা করেছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব৷ তাতে তারা নিশ্চিত বামফ্রন্টের বিরাট বিপর্য্যয়ের মধ্য দিয়ে বিজেপির সাফল্য অর্জন করতে পারলেও সাংগঠনিক দিক দিয়ে এখনো দূর্বলতা রয়েছে৷ ফলে, বুথস্তর পর্যন্ত সংগঠনকে গেরুয়া মতাদর্শে বিশ্বাসী করে তোলার মাধ্যমে মজবুত করতে হবে৷ এদিন কার্যকারিনী বৈঠকে কর্মীদের উদ্দেশ্যে রাম মাধবের দাওয়াই, বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগলে চলবে না৷ পঁচিশ বছরের বাম শাসনের অবসান সম্ভব হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আগামীদিনে পথ চলা খুব সহজ হবে এমনটা মনে করা উচিত হবে না৷ তাঁর কথায়, রাজ্যবাসী পরিবর্তনের পক্ষে রাায় দিয়েছেন৷ ফলে, বিজেপিকে আগামীদিনে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে৷
তাঁর মতে, রাজ্যে বিজেপি সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখোমুখী হতে যাচ্ছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে৷ কেন্দ্রীয় সরকারের জনমুখী প্রকল্পগুলি রাজ্যবাসীর দরবারে পৌঁছানোর গুরুদায়িত্ব রাজ্য সরকারের পাশাপাশি শাসক দলকেও নিতে হবে৷ তাঁর কথায়, এই রাজ্যে দুটি লোকসভা আসনই বিজেপিকে জয়ী হতে হবে৷ বিধানসভা নির্বাচনে বিরাট সাফল্যের পরও লোকসভা নির্বাচনে সেই সাফল্য ধরে রাখতে না পারলে আগামীদিনে সংগঠন পরিচালনা কঠিন হবে বলে মনে করেন রাম মাধব৷ তাই তিনি দলের নেতা ও কর্মীদের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত কর্মসূচীর রূপরেখা এঁকে দিয়ে গিয়েছেন৷
এদিনের বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে একটি সাংগঠনিক কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে৷ কর্মসূচীতে রয়েছে, প্রত্যেক জেলা প্রভারী এবং জেলা সভাপতিদের নিজ নিজ জেলার প্রতিটি মন্ডলে প্রতি মাসে একদিন বর্ধিত মন্ডল কমিটির বৈঠক নিতে হবে এবং মন্ডলের সার্বিক সাংগঠনিক অবস্থা পর্যালোচনা করে রিপোর্ট তৈরি করতে হবে৷ প্রতিটি বুথ থেকে পাঁচ জন করে সক্রিয় কার্যকর্তা নির্বাচন করে তার তালিকা প্রস্তুত করতে হবে৷ পরে তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সংগঠনের কাজে যুক্ত করা হবে৷
সাংগঠনিক পদ্ধতি মেনে বুথ কমিটিগুলিকে প্রয়োজনে পুণঃগঠন করা এবং যেখানে বুথ কমিটি নেই সেখানে বুথ কমিটি গঠন করতে হবে৷ প্রতিটি বুথে সঠিক কার্যকর্তাদের পৃষ্ঠাপ্রমুখ হিসাবে নিযুক্ত করতে হবে এবং নিয়মিত পৃষ্ঠাপ্রমুখদের সাংগঠনিক কাজের পর্যালোচনা করতে হবে৷ সংগঠনের মাধ্যমে সাংগঠনিক পদ্ধতিতে রাজ্য সরকারের এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলি তৃণমূল স্তরে পৌঁছে দিতে হবে এবং প্রকল্পের সুবিধাপ্রাপকদের নামের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে৷ মে মাসের পাঁচ তারিখের মধ্যে পার্টিতে জনগণের যোগদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে এবং সদস্যপদ প্রদানের ক্ষেত্রে আট এপ্রিল ২০১৮ রাজ্য কমিটি কর্তৃক প্রেরিত নির্দেশিকা পালন করতে হবে৷ বিভিন্ন মোর্চার কার্যপদ্ধতি এবং সংগঠনে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে সঠিক দিশা দেখাতে হবে৷ প্রতিটি মন্ডলে পার্টির সাংগঠনিক কাজ অবশ্যই মন্ত্রী/বিধায়ক/বিজিত প্রার্থীর সক্রিয় অংশ গ্রহণ প্রয়োজন৷ পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সহমতের ভিত্তিতে সংগঠন পরিচালিত হবে৷
ষাটটি মন্ডলের জন্য ত্রিশ জন বিস্তারক নিযুক্ত করা হবে যাদের শিক্ষাগত যোগত্যা নূ্যনতম দ্বাদশমান উত্তীর্ণ হতে হবে৷ বিস্তারকদের প্রশিক্ষণের পর সংগঠনের কাজে নিযুক্ত করা হবে এবং দুইজন দায়িত্বশীল কার্যকর্তার উপর পূর্ব এবং পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনের সাংগঠনিক কাজ দেখার দায়িত্ব অর্পন করা হবে৷ প্রতিটি বুথে দশজন যুবক এবং দশজন মহিলা সক্রিয় কার্যকর্তার উপস্থিতিকে নিশ্চিত করতে হবে৷ যে সমস্ত মন্ডলে আইপিএফটির সংগঠন আছে সেই সমস্ত মন্ডলে পার্টির সংগঠনকে পরিচালিত করতে যদি কোন সমস্যার সৃষ্টি হয় তা দূর করার জন্য মন্ডল/জেলা ও রাজ্য ভিত্তিক সমন্বয় কমিটি গঠন করতে হবে যার সদস্য সংখ্যা হবে বিজেপির দুই এবং আইপিএফটির একজন৷ মোট তিনজন৷
সংগঠন ও সরকারের কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য নিম্নলিখিত মন্ত্রীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ মন্ত্রীরা যে বিধানসভায় সরকারী কাজে যাবেন সেই বিধানসভার এমএলএ, জেলা সভাপতি ও মন্ডল সভাপতিকে সূচনা দিতে হবে এবং উক্ত মন্ডল ও জেলায় একটি সাংগঠনিক বৈঠক করতে হবে৷
সংগঠন ও সরকারের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য নিম্নলিখিত মন্ত্রীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ তার মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ ও গোমতী জেলার জন্য প্রণজিৎ সিংহ রায়৷ সিপাহীজলা (উত্তর ও দক্ষিণ) যীষ্ণু দেববর্মা, সদর (গ্রামীন) জেলা রতন লাল নাথ, সদর (শহরাঞ্চল) জেলা সুদীপ রায় বর্মন, খোয়াই ও ধলাই জেলা মনোজ কান্তি দেব এবং উত্তর ও উনকোটি জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শান্ত্বনা চাকমা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *