BRAKING NEWS

যথাযোগ্য মর্যাদায় রাজ্যেও পালিত মাতৃভাষা দিবস

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ ফেব্রুয়ারি ৷৷ বুধবার ছিল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস৷ ২১ ফেব্রুয়ারির এই দিনটিকে সামনে রেখে নানা অনুষ্ঠানে মেতে উঠে গোটা রাজ্যে৷ প্রতিবারের মতো এ বছরও সারা রাজ্যে ভাষা দিবস পালিত হয়েছে৷ ভাষা দিবস উপলক্ষে রাজ্যের বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে রবীন্দ্র ভবনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ এতে মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জীব রঞ্জন৷ খুব জাঁকজমক করে প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস পালন করা হয়৷ রাজ্যের পিছিয়ে পড়া জাতিগোষ্ঠীর উন্নয়নে সে অর্থে কোনও কার্যকরী ভূমিকা পরিলক্ষিত হয়নি৷ এ নিয়ে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি, চাকমা সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচুর ক্ষোভও প্রতিফলিত হয়েছে৷ যা রাজ্যের নির্বাচনী প্রচারেও এসেছে৷ এদিকে ভাষা দিবস রাজ্যের প্রতিটি বিদ্যালয়ে গুরুত্ব সহাকরে পালিত হয়েছে৷ এই দিনটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে গিয়ে রবীন্দ্র ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা, সেই ১৯৫২ সালের ঘটনার উল্লেখ করেন৷

১৯৫২ সালের ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বিশিষ্ট কবি দিলীপ দাস বলেন, সে দিন হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর জমায়েত হয়েছিল তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান অর্থাৎ অধুনা বাংলাদেশের রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রবেশ দ্বারে৷ হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর জমায়েতে থরথর করে কাঁপছিল গোটা এলাকা৷ যৌবনের রক্ত টগবগ করে ফুটছিল৷ বেগতিক দেখে পাকসেনা প্রথমে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাঁটায়৷ সাময়িক ছত্রভঙ্গ হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই ছাত্র ছাত্রীদের সেই ঢেউ গিয়ে আছড়ে পরে পাক সরকারের উপর৷ সমস্ত পাকসেনাদের বেকবিকেড ভেঙে যায় তাসের ঘরের মতো৷ সে সময় বীভৎস সেই উত্তাল জনঢেউকে থামাতে নিরস্ত্র ছাত্রছাত্রীদের উপর পাকসেনা গুলি চালায় নির্বিচারে৷ একের পর এক বুলেট বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বহু তরুণ প্রাণ৷ সে দিনের ঘটনা আজও সবাই স্মরণ করেন৷ আজও তাঁরা ভাস্বর প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে৷ ২১ ফেব্রুয়ারি যে আগুনের ফুল্কি জ্বালিয়েছিল সালাম, রফিক, বরকত তা দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছে৷ ধীরে ধীরে উত্তাল হয়ে উঠে গোটা পূর্ব-পাকিস্তান৷ লড়াইটা বাঙালির কাছে হয়ে উঠে জাত্যাভিমানের৷ কোনওভাবেই আর পাকিস্তান সরকার সেই বিদ্রোহ দমাতে সক্ষম হয়নি৷ ফলে উর্দু চাপিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় তারা৷ শেষ পর্যন্ত জয় হয় বাংলা ভাষায়৷ এই বাংলা ভাষাকে প্রায় ২১ বছর পর রাষ্ট্রসংঘ ২১ ফেব্রুয়ারির এই দিনটাকে স্বীকৃতি দেয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষ দিবস হিসেবে৷ এই স্বীকৃতি গোটা বিশ্বের বাঙালি সমাজের কাছে গর্বের স্বীকৃতি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *