BRAKING NEWS

বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুর, কর্মীর বাড়িতে আগুন, সরব প্রচার শেষ হতেই রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাস

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ ফেব্রুয়ারি৷৷ সরব প্রচার শেষ হতে না হতেই রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটছে৷ গোটা রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারী করার পরও এই সন্ত্রাস ঘিরে বিভিন্ন মহলে যেমন উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে সেই সাথে জনমনেও ভীতির পরিবেশ কায়েম হয়েছে৷ চড়িলাম বিধানসভা কেন্দ্রের এলাকা বাদ দিয়ে গোটা রাজ্যে যখন ১৪৪ ধারা জারী রয়েছে তখন নিরাপত্তার বিষয়টি অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে৷ এই পরিস্থিতিতে  রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই৷ কোথাও বিজপি প্রার্থীর উপর হামলা, আবার কোথাও প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচর এবং কর্মীদের বাড়িতে অগ্ণি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে৷

সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোলাঘাটি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী বীরেন্দ্র কিশোর দেববর্মা এদিন সন্ধ্যায় সরব প্রচার শেষে তাঁর দলীয় এক কর্মীর বাড়িতে গিয়েছিলেন নবকিশোরগঞ্জ গ্রামে৷ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে তিনি দলীয় কর্মীর বাড়িতে যান৷ তখন শাসক দলের ক্যাডার বাহিনী তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর করে৷ মুহুর্তের মধ্যে দলের কর্মীরা খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান৷ তীব্র ক্ষোভ প্রদর্শন করেন৷ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে৷ খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে বিশাল সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ পরিস্থিতি থমথমে হয়ে রয়েছে৷ জানা গিয়েছে, দীর্ঘসময় যাবৎ প্রার্থী বীরেন্দ্র কিশোর দেববর্মা ঐ বাড়িতেই আটকে ছিলেন৷ পরে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় তিনি ঐ বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন৷

অন্যদিকে, বাধারঘাট বিধানসভা কেন্দ্রের আমতলী এলাকার বিজেপি কর্মী জয়দেব চক্রবর্তীর বাবা রমেন্দ্র চক্রবর্তীর বাড়িতে সিপিএম ক্যাডাররা আগুন ধরিয়ে দেয়৷ খবর পেয়ে সেখানে বিজেপির কর্মীরা ছুটে যান৷ ততক্ষণে সিপিএম ক্যাডারার ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়৷ এই ঘটনার বিবরণ দিয়ে মামলা করার জন্য বিজেপি কর্মীরা আমতলী থানায় যায়৷ কিন্তু, পুলিশ মামলা নিতে অনিহা প্রকাশ করায় বিজেপি কর্মীরা সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন৷ পরে চাপের মুখে পুলিশ মামলা নিয়েছে৷ কিন্তু, খবর লেখা পর্যন্ত গ্রেপ্তারের কোন খবর নেই৷ সেখানেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়েছে৷

তাছাড়া ৬ আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী পান্না দে’র উপর অজ্ঞাত পরিচয় দুসৃকতিরা হামলা চালিয়ে বলে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন৷ জানা গিয়েছে, তিনি চন্দ্রপুর থেকে ভাড়া করা একটি অটোতে করে ইচামোয়ার দিকে যাচ্ছিলেন শুক্রবার সন্ধ্যায়৷ তিনি টাটা কালিবাড়ি এলাকায় পৌঁছার পর সেখানে তাঁর পূর্ব পরিচিত কয়েকজন কংগ্রেস কর্মী সমর্থককে দেখতে পান৷ তিনি অটো থেকে নেমে তাদের সাথে কথা বলতে গেলে তাকে নাকি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়৷ তারপর তিনি হৈচৈ করলে স্থানীয় জনগণ এগিয়ে আসেন৷ পরে তিনি সেখান থেকে থানায় চলে যান এবং একটি এফআইআর করেন৷ তিনি নাকি জি বি হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসাও গ্রহণ করেছেন৷ তবে তিনি হামলাকারীদের নামধান বলতে পারেননি৷

তাছাড়া, নির্বাচনের দোড়গোড়ায় খোয়াই সহ রাজ্যের নানাস্থানে বিক্ষিপ্ত রাজনৈতিক হিংসাত্মক ঘটনার খবর মিলেছে৷ বৃহস্পতিবার রাতে খোয়াইয়ের গৌরনগর এলাকায় বিজেপির একটি প্রচার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে৷ বিজেপি নেতা কর্মীরা অল্পেতে প্রাণে বেঁচেছেন৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খোয়াইয়ে গৌড়নগর এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে৷ এ ব্যাপারে খোয়াই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে৷ অভিযুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ অভিযোগ ধৃতরা প্রত্যেকেই সিপিএম কর্মী৷ তাদেরকে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়৷ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছে তারা৷ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী এলাকার পরিস্থিতির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে চলেছে৷  নলছড়, ধনপুরসহ রাজ্যের অন্যান্য স্থান থেকেও বিক্ষিপ্ত কিছু হিংসাত্মক ঘটনার খবর মিলেছে৷ সর্বত্র নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে৷

এদিকে, তেলিয়ামুড়ার চাকমাঘাট সহ রাজ্যের অন্যান্য স্থানেও বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের উপর হামলা হুজ্জতি চালানোর অভিযোগ উঠেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *