দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা চলছে ঃ পৃথ্বিরাজ চৌহান

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ ফেব্রুয়ারি৷৷ আরএসএস ভাবাদর্শে বিশ্বাসী বিজেপি দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করার চেষ্টায়

বুধবার আগরতলায় সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বরিষ্ট কংগ্রেস নেতা পৃথ্বিরাজ চৌহান৷ ছবি নিজস্ব৷

রয়েছে৷ তা খুবই চিন্তার বিষয়৷ বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে বরিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বিরাজ চৌহান এইভাবেই বিজেপির বিরুদ্ধে বিষোদ্গার প্রকাশ করেছেন৷  তাঁর কথায়, বিজেপি জোট এই রাজ্যকে তছনছ করে দেবে৷

এদিন তিনি বলেন, রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই হবে৷ ২৫ বছরের বাম শাসনের রিপোর্ট চাওয়া হলে রোমহর্ষক চিত্র ফুটে উঠবে৷ বেকারত্ব, গরীবী দিনে দিনে বেড়েছে এরাজ্যে৷ তাঁর কথায়, শিল্পের অভাব এবং কৃষির বেহাল দশার ফলে এই রাজ্য প্রকৃত উন্নয়নের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে৷ তাই, তিনি পরিবর্তন প্রয়োজন বলে দাবি করেন৷

তাঁর মতে, পরিবর্তন খুবই জরুরী৷ কিন্তু, পরিবর্তন প্রয়োজন ভালোর জন্য৷ সিপিএমকে সরিয়ে বিজেপিকে বাছাই করা হলে এই রাজ্য তছনছ হয়ে যাবে৷ তিনি বলেন, বিজেপিকে বাছাই করার আগে দেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা উচিৎ৷ শুধু প্রতিশ্রুতি ছাড়া বিজেপি আর কিছুই দেয়নি দেশবাসীকে, কটাক্ষ করেন তিনি৷ পৃথ্বিরাজ চৌহানের বক্তব্য, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি নিয়ে বিজেপিকে জিজ্ঞাসা করে হলে বলা হয় তা ছিল জুমলা৷ তাই, কোনটা তাঁদের জুমলা এবং কোনটা জুমলা নয়, তা বিশ্লেষণ করে দেখা উচিৎ, বিদ্রুপের সুরে বলেন তিনি৷

তাঁর কথায়, বিজেপির শাসনে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভীষণ ধাক্কা খেয়েছে৷ মনমোহন জমানায় জিডিপি হার ৯ শতাংশ ছিল, কিন্তু এখন তা অনেক নেমে গেছে৷ এর জন্য তিনি বিমুদ্রাকরণ এবং জিএসটিকে দায়ী করেছেন৷ তাঁর মতে, সারা দেশের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে বিমুদ্রাকারণ এবং জিএসটি৷ তিনি জানান, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী সম্প্রতি বলেছেন, বিমুদ্রাকরণ সংঘের নির্দেশে হয়েছে৷

তাঁর বক্তব্য, রাজ্যের স্বার্থে বামেদের সরানো হোক৷ কিন্তু, তার বদলে বিজেপিকে ঢুকতে দেওয়া ঠিক হবে না৷ তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, আইপিএফটির সাথে বিজেপির জোট রাজ্যকে ভাগ করার জন্যই হয়েছে৷ তাঁর মতে, বিজেপি এই রাজ্য যত বেশি আসন জিতবে দেশের পরিস্থিতি তত বিপজ্জনক হবে৷ তাঁর কথায়, আরএসএস ভাবাদর্শে বিশ্বাসী বিজেপি দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে চাইছে৷ তাঁদের এই লক্ষ্য খুবই চিন্তার বিষয়৷ এই যুক্তি তুলে ধরে পৃথ্বিরাজ চৌহান মনে করেন, পরিবর্তন হওয়া উচিৎ ভালোর জন্য৷ যাতে মানুষ উপকৃত হতে পারেন৷ তাই তার দাবী, সিপিএমকে সরিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনা হলে রাজ্যের সর্বনাশ হওয়া স্বাভাবিক৷

এদিন তিনি কংগ্রেসের দূর্বলতার কারণেই বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে, তা মেনে নিয়েছেন৷ তবে, এই রাজ্যে ভোট বিভাজনের মাধ্যমে কংগ্রেস সিপিএমকে মদত দেবে, তা মানতে রাজী হননি৷ তাঁর কথায়, টানা দশ বছর কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস৷ মানুষের কল্যাণে বহু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু, তাতে কিছু ত্রুটি রয়েছে৷ ফলে, মানুষ চেয়েছেন ২০১৪ সালে  কংগ্রেসের বদলে বিজেপিকে ক্ষমতায় বসানো হউক৷ তবে, এরাজ্যে আবার ফিরে এসেছে বলে দাবি করেন তিনি৷ তাঁর কথায়, কংগ্রেস একটি সর্বভারতীয় দল৷ ভোট বিভাজনে কাউকে সুবিধে পাইয়ে দিতে বিশ্বাসী নয় কংগ্রেস৷ তাঁর দাবি, রাজ্যে কংগ্রেস নির্বাচনে বামফ্রন্ট ও বিজেপিকে কড়া টক্কর দেবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *