BRAKING NEWS

অন্তিম দিনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট নিয়ে চরম বিশৃঙ্খলা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ ফেব্রুয়ারি৷৷ পোস্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়াকে ঘিরে বুধবার উমাকান্ত একাডেমিতে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল৷ ভোট দিতে না পেরে মাইক্রো অবজারভাররা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন না বলে হুমকি দিয়েছিলেন৷ তবে, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক এবং পশ্চিম জেলা নির্বাচন আধিকারীকের তৎপরতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷ পোস্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া এদিন রাত ১২টা পর্যন্ত সমসয়সীমা বাড়ানোর পরই মাইক্রো অবজারভাররা শান্ত হন৷

এবিষয়ে মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক শ্রীরাম তরুণীকান্তি সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, অধিকাংশ মাইক্রো অবজারভাররা পশ্চিম জেলার বাসিন্দা৷ কিন্তু, তাঁদের অন্য জায়গায় নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ ফলে, পোস্টাল ব্যালটও তাঁদের কর্মস্থলে পৌছে গেছে৷ কিন্তু, তাঁদের পোস্টাল ব্যালট উমাকান্ত একাডেমিতে রাখা উচিৎ ছিল৷ তাই, ভোট গ্রহণের সময় বাড়ানো হয়েছে৷ পশ্চিম জেলা নির্বাচন আধিকারীক প্রত্যেক মাইক্রো অবজারভারের পোস্টাল ব্যালট সংগ্রহ করে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করেন৷

বুধবার পোস্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণের অন্তিম দিন ছিল৷ ইতিপূর্বে যারা ভোট দিতে পারেননি, তারা আজ ভোট দেওয়ার জন্য উমাকান্ত একাডেমিতে উপস্থিত হন৷ ভোট কর্মী, ড্রাইভার, ক্লিনার বিশেষ করে মাইক্রো অবজারভাররা এদিন ভোট দিতে যান৷ কিন্তু, মাইক্রো অবজারভাররা ভোট দিতে গিয়ে তাঁদের পোস্টাল ব্যালট দেওয়া হচ্ছিল না৷ কিছু সময় অপেক্ষা করার জন্য তাঁদের বলা হলেও, বিকেল চারটে অতিক্রান্ত হওয়ার পরও তাঁরা ভোট দিতে পারেননি৷

জানা গেছে, পশ্চিম জেলার বাসিন্দা মাইক্রো অবজারভারদের যে নির্বাচনী কেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেখানেই তাঁদের পোস্টাল ব্যালট পৌঁছে গেছে৷ কিন্তু, নিয়ম অনুযায়ী তাদের পোস্টাল ব্যালট উমাকান্ত একাডেমিতে মজুত রাখা উচিত ছিল৷

স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ চরম আকার ধারণ করে৷ জনৈক মাইক্রো অবজারভারের বক্তব্য তিনি ৯-বনমালীপুর কেন্দ্রের বাসিন্দা৷ কিন্তু তার নির্বাচনী দায়িত্ব অন্যত্র দেওয়া হয়েছে৷ ফলে, আগামীকালই তাকে সেখানে পৌঁছে যেতে হবে৷ অথচ আজ পোস্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণের অন্তিম দিন হওয়া সত্বেও তিনি ভোট দিতে পারেননি৷ তাঁর বক্তব্য, ডাক যোগে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ভোট বাদ যাওয়ার যথেষ্ঠ সম্ভাবনা রয়েছে৷ কারণ, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পোস্টাল ব্যালট না পৌঁছালে তাঁর ভোট বাদ হয়ে যাবে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন৷ এমনই দুশ্চিন্তায় অন্য মাইক্রো অবজারভাররাও ভুগছিলেন৷

সূত্রের খবর, সদর মহকুমা শাসক তথা রিটার্নিং অফিসারের সাথে মাইক্রো অবজারভারদের পোস্টাল ব্যালট নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়েছে৷ তাতে, পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল৷ তবে, পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়েছে৷ কিন্তু, মাইক্রো অবজারভাররা বিকেল চারটে পর্যন্ত ভোট দিতে পারেননি৷ তাতে, অধিকাংশ মাইক্রো অবজারভাররাই হুমকি দেন, তাঁরা ভোট দিতে না পারলে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন না৷

জটিল এই পরিস্থিতিতে পথ খুঁজে বের করেন পশ্চিম জেলা নির্বাচন আধিকারিক ড মিলিন্দ রামটেকে৷ মাইক্রো অবজারভারদের পোস্টাল ব্যালট সংগ্রহ এবং ভোট গ্রহণের উদ্যোগ নেন তিনি৷ এদিকে, রাজ্যের নির্বাচন আধিকারিক শ্রীরাম তরুণীকান্তি এদিন পোস্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণে সময়সীমা  বাড়িয়ে দেন৷ রাত ১২ টা পর্যন্ত পোস্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়ে দেন৷

এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক বলেন, মাইক্রো অবজারভারদের অধিকাংশই পশ্চিম জেলার বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা৷ তাদের অন্যত্র নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু, তাঁরা ভোট দেবেন আগরতলাতেই৷ তবে, তাঁদের পোস্টাল ব্যালট যে স্থানে তাঁরা নিযুক্তি পেয়েছেন সেখানেই পৌঁছে গেছে৷ ফলে তাঁরা ভোট দিতে পারেননি৷ মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক বলেন, প্রথমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ডাকযোগে পোস্টাল ব্যালটের ভোট গ্রহণ করা হবে৷ কিন্তু, তাতে মাইক্রো অবজারভাররা আপত্তি জানান৷ তাই, আজ পোস্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সময়সীমা ১২ টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে৷ পশ্চিম জেলার জেলা নির্বাচন আধিকারিক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে তাদের পোস্টাল ব্যালট সংগ্রহ করছেন এবং ভোট গ্রহণের পর স্ট্রং রুমে জমা করাবেন৷ এরপরও যারা ভোট দিতে পারবেন না, তাঁদের ডাক যোগে ভোট গ্রহণ করা হবে৷

এদিকে, পোস্টাল ব্যালটে কারচুপি  হাতেনাতে ধরা পড়ল ৩৫ বিলোনীয়া বিধানসভা কেন্দ্রে৷ ঘটনাটি ঘটে বুধবার সকালে ৩৫/১৬ নম্বর কাউন্টারে৷ জানা গিয়েছে, বন দপ্তরে কর্মরত শঙ্খশুভ্র পাল ১০ ফেব্রুয়ারী পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়েছিলেন৷ নির্বাচন কমিশনের তদারকির অভাবে একই ভোটারকে দ্বিতীয়বার ভোটের জন্য ফোন করতেই ঘটে বিপত্তি৷ ভোট গ্রহণের পর কীভাবে ভোটারকে ফোন করা হয়৷ তা নিয়ে প্রতিবাদে মুখর হয় বিজেপির কর্মীরা৷ খবর পেয়ে নির্বাচন কমিশনের পদস্থ অফিসাররা ছুটে গিয়ে ত্রুটি স্বীকার করে নিয়েছেন তদন্ত করে৷

জানা গিয়েছে, নিয়ম বহির্ভূত পোস্টাল ভোট হচ্ছে বিলোনীয়ায় চরম অব্যবস্থায় বিরোধী দলের কার্যকর্তাদের অভিযোগ, প্রহসনে পরিণত করার চেষ্টা হচ্ছে ভোটকে৷ শঙ্খশুভ্র পালের পোস্টালের পার্ট নম্বর ৩৫/১৬ ক্রমিক নম্বর ৩২০৷ ব্যালট নম্বর ০০০৩৮৯৷ অদক্ষ কর্মী দিয়ে কাজ করার জন্য এই ধরনের উদ্ভট পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে বিজেপির কার্যকর্তাদের অভিযোগ৷ দিনভর ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে৷ তবে, কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *