BRAKING NEWS

নির্বাচন কমিশনের সুপারিশ মেনে ২০ জন আপ বিধায়কের পদ বাতিল করলেন রাষ্ট্রপতি

নয়াদিল্লি, ২১ জানুয়ারি (হি.স.): লাভজনক পদে থাকার অপরাধে দিল্লি বিধানসভার ২০ জন আম আদমির পার্টির বিধায়কের বিধায়ক পদ খারিজ করে দিল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল। সেই সুপারিশে রবিবার নিজের সম্মতি জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

এদিন রামনাথ কোবিন্দ বলেন, নির্বাচন কমিশনের মতামত কে বিবেচনা করে ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতাবলে দিল্লি বিধানসভার ২০ জন বিধায়কের পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলাম। এর আগে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীষ শিশোধিয়া অভিযোগ করেন যে নির্বাচন কমিশন তাদের কে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও অবকাশ দেয়নি।

প্রসঙ্গত,২০১৫ সালে প্রশান্ত পটেল নামে এক আইনজীবী রাষ্ট্রপতির কার্য্যালয়ে লিখিত অভিযোগে আপ বিধায়কদের সংসদীয় সচিব পদে নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, যা থেকে ‘লাভজনক পদ’ বিতর্কের সূত্রপাত হয়। অরবিন্দ কেজরীবাল ২০১৫-র মার্চে ওই বিধায়কদের সংসদীয় সচিব পদে নিয়োগ করেন। ওই পদ লাভজনক পদের আওতার বাইরে রাখার উদ্দেশ্যে জুন মাসে ১৯৯৭ সালের দিল্লি মেম্বার্স অব লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি (রিমুভাল অব ডিসকোয়ালিফিকেশন) আইনেও সংশোধন করে তাঁর সরকার। আপ যুক্তি দেখায়, পদটি লাভজনক নয় কারণ এ থেকে কোনও আর্থিক প্রাপ্তি হয় না। তবে আপের উদ্যোগ ধাক্কা খায় যখন ২০১৬-য় তত্কালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় জুন মাসে আইনে তাদের আনা প্রস্তাবিত সংশোধনীতে সম্মতি দিতে অস্বীকার করেন। পাশাপাশি দিল্লি হাইকোর্টও বিধায়কদের সংসদীয় পদে নিয়োগের সরকারি নির্দেশ খারিজ করে দেয়। ওই আইনজীবীর আবেদনকে অস্ত্র করে কংগ্রেস ২১ আপ বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ চেয়ে ২০১৬-য় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়। যদিও রাজৌরি গার্ডেনের আপ বিধায়ক জার্নেইল সিংহ গত বছর ফেব্রুয়ারি পঞ্জাব বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হবেন বলে ওই পদে ইস্তফা দেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে ২০ জন আপ বিধায়কের পদ খারিজের জন্য সুপারিশ জানানো হয়। এদিন সেই সুপারিশেই শীলমোহর দিলেন রাষ্ট্রপতি |

এদিন রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, ‘‘নির্বাচন কমিশন বিষয়টি অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতি ভবনে পাঠায় ৷ বিষয়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করার পর আমি রামনাথ কোবিন্দ ভারতের রাষ্ট্রপতির পদাধিকার বলে দিল্লি বিধানসভার ২০ জন আপ বিধায়কের পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলাম৷’’

৭০ আসন বিশিষ্ট দিল্লি বিধানসভায় আম আদমি দলের ছিল ৬৬ জন বিধায়ক। ২০ জন বিধায়কের পদ খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে তা কমে দাঁড়াল ৪৬। সরকার ধরে রাখার জন্য দরকার ৩৫। ফলে এর ফলে ক্ষমতাচ্যূত হচ্ছেন না আম আদমি পার্টি। তবে ২০ জন বিধায়কের পদ খারিজের ঘটনায়কে আম আদমি দলের পক্ষ থেকে অসাংবিধানিক, গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, নিয়ম হচ্ছে জনপ্রতিনিধিরা এমন কোনও সরকারি পদে থাকতে পারবেন না, যাতে নানা সুযোগসুবিধা বা ক্ষমতা মেলে। পদ খোয়ানো আপ বিধায়করা এতদিন পর্যন্ত সংসদীয় সচিব পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এর ফলেই তারা লাভজনক পদ আওতায় পড়ে গিয়ে ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *