BRAKING NEWS

দু’রাজ্যের বিজেপি-র সাফল্য আসলে কার্যকর্তাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল: প্রধানমন্ত্রী

নয়াদিল্লি, ১৮ ডিসেম্বর (হি.স.) : “দু’রাজ্যের বিজেপি-র সাফল্য আসলে কার্যকর্তাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল। আমি বিজেপি কার্যকর্তাদের কুর্নিশ জানাই।” দু’রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । তিনি আরও বলেন, সুশাসন ও উন্নয়নের রাজনীতিকে সমর্থন করে মানুষ। গুজরাট ও হিমাচলপ্রদেশের ফলাফল সেই ইঙ্গিতই দিল।

‘নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা’ নিয়েই গুজরাটে ফের সরকার গড়ছে বিজেপি । সেইসঙ্গে হিমাচলপ্রদেশেও ক্ষমতা দখল করছে কেন্দ্রের শাসক দল।এই অবস্থায় আজ প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দু’রাজ্যের বিজেপি-র সাফল্য আসলে কার্যকর্তাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল। আমি বিজেপি কার্যকর্তাদের কুর্নিশ জানাই।” তিনি আরও বলেন, সুশাসন ও উন্নয়নের রাজনীতিকে সমর্থন করে মানুষ। গুজরাট ও হিমাচলপ্রদেশের ফলাফল সেই ইঙ্গিতই দিল।
এদিন তিনি আরও বলেন, বিজেপি-র উপর বিশ্বাস রাখার জন্য, তাকে ভালোবাসার জন্য আমি গুজরাত ও হিমাচলপ্রদেশের মানুষের কাছে মাথানত করছি। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, উন্নয়নের সঙ্গে কোনওরকম আপস করব না এবং নিরলসভাবে মানুষের সেবা করব।”

এর আগে এদিন গুজরাট ও হিমাচলপ্রদেশে দলের জয়ের ইঙ্গিত পেয়ে ভিকট্রি সাইন দেখান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।আজ সংসদে প্রবেশের আগে গাড়ি থেকে নেমে হাতজোড় করে প্রণাম জানানোর পাশাপাশি ভিকট্রি সাইন দেখান মোদী ।

এবারের গুজরাট ভোট নানা দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, মোদী এখন আর গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নন। গুজরাটে বিজেপি’র সংগঠন কিছুটা আলগা হয়েছে। তিন বছরে দু’জনকে মুখ্যমন্ত্রী করতে হয়েছে। আনন্দীবেন প্যাটেল পরে বিজয় রূপাণী। সবচেয়ে বড়ো চাপ এসেছে প্যাটেলদের কাছ থেকে। প্যাটেলদের সমর্থন ছাড়া গুজরাটে কোনও সরকার ক্ষমতায় এসেছে এমনটা ঘটেনি। সেই ১৯৯৫ সাল থেকে প্যাটেলরাই মোদীর অন্যতম ভোট ব্যাঙ্ক। পতিদার সংরক্ষণকে কেন্দ্র করে সেই ভোট ব্যাঙ্কে ধস নেমেছে। হার্দিক প্যাটেলের নেতৃত্বে পতিদাররা কংগ্রেসকে সমর্থন করেছে। তিনবছরে বহু দলিতকে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের হাতে লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়েছে। গুজরাট ভোট যেন ছিল সেই লাঞ্ছনার প্রতিবাদ। দলিত ভোটকে সংহত করতে জিগ্নেশ মেভানিকে নামিয়েছে কংগ্রেস। ওবিসি–রাও সুখে নেই। তাদের কাছে পেতে কংগ্রেস নামিয়েছে অল্পেশ ঠাকোরকে। মোদীর লড়াই তাই কেবল কংগ্রেসের সঙ্গে নয়— হার্দিক, অল্পেশ এবং জিগনেশের মতো তরুণ তুর্কীত্রয়ের বিরুদ্ধেও।

ছিল রাহুল ফ্যাক্টর।‌ গত তিন বছরে গুজরাটেই সবচেয়ে উজ্জীবিত প্রচার করেছেন রাহুল। নিজেকে নরম হিন্দুত্বের প্রতিভূ হিসেবে তুলে ধরেছেন। বিভিন্ন মন্দিরে গিয়েছেন। নিজেকে শিবভক্ত বলেছেন। জিএসটি–কে গব্বর সিং ট্যাক্স বলে শিল্পমহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ছিল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া। পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছর সরকার চালিয়েছে বামফ্রন্ট। এরপরেই ত্রিপুরায় ২৭ বছর সরকার চালাচ্ছে বামফ্রন্টই। তারপরেই বিজেপির গুজরাট। এবারে পঞ্চমবার সরকার গড়ার লক্ষ্যে ভোটে নেমেছে বিজেপি। নানা মহলের অসন্তোষ রয়েছে। এতকিছুর মোকাবিলা করতে হয়েছে বিজেপি’কে, বলা ভাল মোদীকে। গুজরাটে হেরে গেলে শুধু বিজেপি’র পরাজয়ই হত না, হত মোদীরও পরাজয়। সযত্নে গড়ে তোলা ‘গুজরাট মডেল’–এর মিথও খসে পড়ত। যার প্রভাব পড়ত ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও। এই পরিস্থিতিতে একা বুঁদির গড় সামলেছেন নরেন্দ্র মোদী। নিজের ভাবমূর্তিকে বাজি রেখেছেন। শেষ হাসি কিন্তু তিনিই হাসলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *