BRAKING NEWS

গতবারের চাইতে এবারের ভোটে বেশী কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইবে রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ ডিসেম্বর৷৷ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে গত নির্বাচনের তুলনায় বেশি পরিমান কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী চাওয়া হবে৷ শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক শ্রীরাম তরুণীকান্ত৷ তিনি জানান, গত বিধানসভা নির্বাচনে ২৬০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত ছিল৷ এবছর আরো বেশি আধাসামরিক বাহিনী চাওয়া হবে৷ তবে, এর পেছনে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যুক্ত নয় বলে দাবি করেন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক৷ তাঁর বক্তব্য, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হবে৷ ফলে, অতিরিক্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের জন্য আরো কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন পড়বে৷
এদিন তিনি জানান, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৬৭৪ জন বিএলওদের তাদের কাজ থেকে সরানো হয়েছে৷ তাছাড়া, নির্বাচন দপ্তরে ক্রমাগত জমা পড়া অভিযোগেরও নিস্পত্তি করা হচ্ছে৷ তিনি জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত ১৯৫৪ জন ভূয়ো ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে৷ তাঁর বক্তব্য, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধেই সমস্ত অভিযোগ মিলছে৷ ফর্ম-৬ এবং ফর্ম-৭ এর অন্তর্গত সর্বাধিক অভিযোগ মিলেছে৷ তিনি দাবি করেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ তবে, এখন পর্যন্ত মোট কত অভিযোগ জমা পড়েছে এবং সেই অভিযোগগুলি সত্যতার ভিত্তিতে কি পরিমান ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা এদিন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জানাতে পারেননি৷
এদিন তিনি জানান, ২০১৮ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভিভিপ্যাট ব্যবহার করা হবে৷ এজন্য মোট ৪ হাজার ৮০০টি ভিভিপ্যাট প্রয়োজন৷ ইতিমধ্যে নির্বাচন দপ্তর ৪ হাজার ৮০টি ভিভিপ্যাট গ্রহণ করেছে এবং রাজ্যের প্রতিটি জেলায় বিতরণ করা হয়েছে৷ পাশাপাশি তিনি আরো জানান, রাজ্যে ইতিমধ্যে সমস্ত ইভিএম এসে গেছে৷ মিজোরাম থেকেও ইভিএম আনা হয়েছে৷ নির্বাচন কমিশনের ইঞ্জিনিয়াররাও রাজ্যে এসেছেন৷ ইভিএমগুলির এফএলসি (ফার্স্ট ল্যাভেল চেকিং) শুরু হয়ে গেছে৷ তিনি জানান, রাজ্যে ৪৭০০ ইভিএম এসেছে৷
তিনি আরও জানান, রাজ্যের মোট ১৬৩ জন রিটার্নিং অফিসার এবং অ্যাসিস্টেন্ট রিটার্নিং অফিসারদের সার্টিফিকেট কোর্সে ৩টি বাচে প্রশিক্ষণের কাজ চলছে৷ তিনি জানান, ইতিমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে৷ এতে মোট ১১০ জন রিটার্নিং অফিসার এবং অ্যাসিস্টেন্ট রিটার্নিং অফিসার অংশ গ্রহণ করেছেন৷ তৃতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণের কাজ শুরু হবে আগামী ১৮ডিসেম্বর, ২০১৭ থেখে৷ এতে ৫৩ জন রিটার্নিং অফিসার এবং অ্যাসিস্টেন্ট রিটার্নিং অফিসার অংশ গ্রহণ করবেন৷ তিনি জানান, জেলাস্তরীয় মাস্টার ট্রেইনারদের কাজও শুরু হয়েছে৷ গত ২৪ নভেম্বর, ২০১৭ তারিখ সিপার্ডে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার ৫৩ জন এবং খোয়াই জেলার ২৪জন জেলাস্তরীয় মাস্টার ট্রেইনারদের দুটি ব্যাচে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জানান, সিপাহীজলার ৩৭ জন, গোমতী জেলার ৩০ জন এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার ২১ জন জেলাস্তরীয় মাস্টার ট্রেইনারদের উদয়পুরের পঞ্চায়েতরাজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে৷ অনুরূপভাবে উত্তর ত্রিপুরা জেলার ২৮ জন ঊনকোটি জেলার ১৬ জন এবং ধলাই জেলার ১৮ জন জেলাস্তরীয় মাস্টার ট্রেইনারদের কুমারঘাট পঞ্চায়েতরাজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পানা রয়েছে৷ ভারতের নির্বাচন কমিশনের প্রশিক্ষক দ্বারা আই টি সম্পর্কিত বিভিন্ন অ্যাপস যেমন সমাদান, সুবিধা এবং সুগম-এর প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে৷ মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরও জানান, রাজ্য ও জেলাস্তরে এম সি এম সি ও সোশ্যাল মিডিয়া সেল গঠন করা হবে এবং প্রতি জেলার সংশ্লিষ্ট নোডাল অফিসারদের ভারতের নির্বাচন কমিশনের প্রশিক্ষকগণ এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন৷ এছাড়াও রাজ্যস্তরে এক্সপেনডিচার মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ এই কমিটির প্রশিক্ষণ দেবেন ভারতের নির্বাচন কমিশনের প্রশিক্ষকগণ৷ এছাড়া ১৮৬ টি স্ট্যাটিক স্যারভেইল্যান্স টিম এবং ১৮০ টি ফ্লাইং স্কোয়াড গঠন করা হবে এবং প্রতিটি জেলার নোডাল অফিসারদের এবং স্ট্যাটিক স্যারভাইল্যান্স টিম এবং ফ্লাইং স্কোয়াডের টিম লিডারদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে৷ তাছাড়া পোলিং পার্সনেল, কাউন্টিং স্টাফ এবং বিএল ওদের জেলাস্তরীয় মাস্টার ট্রেইনারগণ জেলাস্তরে তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন৷
এদিকে রাজ্যে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী আসতে শুরু করেছে, এই খবর মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক খারিজ করে দিয়েছে৷ তাঁর বক্তব্য, এ ধরণের কোন খবর নির্বাচন দপ্তরের জানা নেই৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *