BRAKING NEWS

মন্দিরে হামলা ঃ সিপিএমকে পাল্টা তোপ বিজেপির

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ ডিসেম্বর৷৷ রাজ্যে ক্রমাগত মন্দিরে হামলা সংঘটিত করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির বিষয়ে ক্ষমতাসীন সিপিআইএমকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছে বিজেপি৷ দল অভিযোগ করেছে সিপিআইএম এর মুখপত্রে দেবীর প্রতিমা ভাঙার খবর আগে প্রকাশিত হয়, পরে হামলা সংঘটিত হয়৷ বুধবার সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব বলেন, সিপিআইএম জ্ঞাতসারে এ সব কর্মকান্ড সংগঠিত করেছে৷ তারা রাজ্য জুড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলছে৷ আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মতো ইস্যু তখনই ফলপ্রসু হবে যদি দাঙ্গা বাঁধে৷ সিপিআইএম এর কাছে অন্য কোনও ইস্যু নেই৷ দাঙ্গা বাঁধিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করা সহজ হবে বলে মানিক সরকার, বিজন ধরদের ধারণা৷ তিনি বলেন, পার্টির মুখপত্রে প্রথম খবর বের হয় দেবী মূর্তি ভাঙচুর হয়েছে বলে৷ তারপর মন্দিরের পূজারি ঘটনাস্থলে গিয়ে এর সত্যতা দেখতে পান৷ এতে পরিস্কার হয়ে যায়, কারা এ ধরনের অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত৷ তারা ধর্ম মানে না৷ ধর্মকে আফিং বলে৷ তারাই এই কাজ করতে পারে৷ ধর্মভীরুরা দেবীমূর্তি ভাঙচুর করার সাহসই করতে পারে না৷ তিনি বলেন, এ ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ না হলে পরিণাম খারাপ হবে৷ হীন চক্রান্ত বাদ দিয়ে উন্নয়নের ইস্যুতে রাজনীতি হওয়া প্রয়োজন৷ আর তবেই রাজ্যের উন্নয়ন সম্ভব বলেও তিনি উল্লেখ করেন৷
এদিকে, চিটফান্ড কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেবার জন্য সরকারের কৌশল উচ্চ আদালতে প্রমাণ হয়েছে বলে দাবী করেছে বিজেপি৷ এই প্রসঙ্গে বিজেপি সহ বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলি এতদিন ধরে যে দাবী জানিয়ে আসছিল তা সত্য প্রমাণিত হয়েছে বলে বিজেপি অভিমত ব্যক্ত করেছে৷ বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব বলেন, সিবিআই তদন্তের জন্য রাজ্য সরকারের উপর চাপ দিয়ে আসছিল বিজেপি৷ কিন্তু রাজ্য সরকার সুপরিকল্পিত ভাবে এসব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল৷ কিন্তু উচ্চ আদালতে সিবিআই এর দাখিল করা হলফনামার সত্য প্রকাশিত হয়ে গেছে৷ তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের গঠিত সিট চিঠফান্ড কেলেঙ্কারিতে তদন্তই করছে না৷ কারণ উপযুক্ত তদন্ত করলে শাসক দলের নেতা মন্ত্রী ধরা পরবে৷ তাদের বাঁচানোর কোনও পথ খোলা থাকবে না৷ তাই সিবিআইকেও স্ট্যাটাস রিপোর্ট দেওয়া হয়নি৷ রাজ্য সরকারের স্বদিচ্ছার অভাবে চিটফান্ডের আমানতকারীরা তাদের প্রাপ্ত অর্থ থেকে বঞ্চি হচ্ছে৷ তাদের দুরবস্থা মেটাতে রাজ্য সরকারে ন্যাক্কারজনক ভূমিকা রয়েছেও বলেও তিনি উল্লেখ করেন৷
এদিকে, রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের ফলস বিমা যোজনা কার্যকর না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকার করেছে বিজেপি৷ বিজেপি’র মতে, রাজ্য সরকারের উদাসীনতার কারণে বন্যাদুর্গত কৃষকরা এ বছর যথেচ্ছভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷ বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ফসল বিমা যোজনা কার্যকর হলে রাজ্যের কৃষকদের এত করুণ দশা হত না৷ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কয়েকজন স্বউদ্যোগী হয়ে এই বিমা যোজনার আওতাভুক্ত হয়েছিলেন৷ ফলে তাঁরা বড় ধরণের ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পেয়েছেন৷ কিন্তু রাজ্য সরকার এই বিমা যোজনার বিষয়টি প্রচারে অনেনি৷ ফলে বেশিরভাগ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷
তিনি বলেন, কয়েক পর্যায়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের যে ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করা হয়েছে তা রাজ্য সরকার আগে মিটিয়ে দিক, তার পরেই কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে চর্চা করুক এবং সে পরিমাণ অর্থ মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলুক৷ কারণ রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ণ উঠেছে বিভিন্ন সময়ে৷ তিনি উল্লেখ করেন, দেশের অন্য কোথাও বর্তমানে কৃষকদের এ ধরণের পরিস্থিতির শিকার হতে হয়নি৷ ত্রিপুরাই এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম৷
এদিকে, শিশু দেখভালের জন্য মায়েদের ঘোষিত ছুটি নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলল বিজেপি৷ রাজ্য সরকার বিষয়টিকে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে প্রচার করে নিজেদের অসাধুতাই প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে৷ বিজেপির মুখপাত্র ডাঃ অশোক সিনহা বলেন, ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকার শিশুদের দেখভালের জন্য কর্মরত মহিলাদের সবেতন দুবছরের ছুটি ঘোষণা করে৷ এই বিষয়ে আইনও তৈরি হয়৷ ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত দুজন শিশুর ক্ষেত্রে কমপক্ষে মহিলা কর্মচারীরা দুবছর সবেতন ছুটি ভোগ করতে পারেন৷ কেন্দ্রীয় সরকারের এই নীতি কার্যকর হওয়ার পর পার্শ্ববর্তী আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গে ২০১৫ সালেই তা কার্যকর হয়ে যায়৷ তিনি সংশ্লিষ্ট গেজেট নোটিফিকেশন তুলে ধরে বলেন, দেশের অন্যান্য রাজ্যেও আরও আগেই মহিলা কর্মচারীদের জন্য এই সুবিধা কার্যকর হয়ে গেছে৷ একে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে তাদের দীর্ঘ প্রতারণাকে আড়াল করার চেষ্টা করেছে৷ রাজ্যের মন্ত্রীরা যেভাবে অসত্য তথ্য তুলে ধরে দেশের অন্য কোন রাজ্যের মন্ত্রীর পক্ষে তা সম্ভব নয় বলেও তিনি বামফ্রন্ট সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *